Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
অকুণ্ঠ ক্ষুর দিয়ে কেটে দিল – Dr. Mohammed Amin

অকুণ্ঠ ক্ষুর দিয়ে কেটে দিল

অকুণ্ঠ শব্দের ব্যুৎপত্তি
‘অকুণ্ঠ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ—  অকাতর, অসঙ্কুচিত, অব্যাহত, অপ্রতিহত, নিঃশঙ্ক প্রভৃতি। সংস্কৃত ভাষা হতে আগত এই শব্দটি বাংলায় অনেক পরিবর্তন ও অর্থসম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। সংস্কৃত ভাষায় অকুণ্ঠ শব্দের অর্থ : তীক্ষ্ণ বা ধারালো। অর্থাৎ যা ভোঁতা নয়, যাতে মরিচা পড়েনি এবং যা সহজে অন্যকে কর্তন করতে পারে, খণ্ডিত করতে পারে, রক্তাক্ত করতে পারে— সেটিই অকুণ্ঠ।বাংলা ভাষায় অকুণ্ঠ শব্দের অর্থ— অকাতর, অসঙ্কুচিত, অব্যাহত, অপ্রতিহত, নিঃশঙ্ক প্রভৃতি। এমন অর্থ পরিবর্তনের কারণ কী? যা ধারালো ও তীক্ষ্ণ তা অকাতরে বা নির্ভীকচিত্তে অন্যকে কর্তন করতে পারে। মনে হয়, সংস্কৃত অকুণ্ঠ শব্দের এ যোগ্যতাকে বাংলা বিচক্ষণতার সঙ্গে ‘অকুণ্ঠ’ অর্থে ধারণ করে নিয়েছে। সংস্কৃত ‘অকুণ্ঠ’ বসে যন্ত্রপাতির আগে কিন্তু বাংলা ‘অকুণ্ঠ’ বসে প্রেম, প্রীতি, স্নেহ, সোহাগ, আদর, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, মন, হৃদয়, চিত্ত, সমর্থন প্রভৃতি নান্দনিক শব্দের আগে। এসব শব্দের আগে ভোঁতা বা মরচে-পড়া কোনো বিশেষণ উপযুক্ত নয়। প্রেম-ভালোবাসা ও আদর-সোহাগ তীক্ষ্ণ না-হলে কি চলে! তাই বাঙালিরা সংস্কৃত ক্ষুরের আগে বসা বিষয়টা ভালোবাসায় নিয়ে এসেছে।

“নাপিত অকুণ্ঠক্ষুর দিয়ে পরম আদরে শিশুটির চুল ছেঁটে দিল”— এমন কথা বাংলায় কেউ বলে না, সংস্কৃত ভাষায় বলে। বাঙালিরা বলতে পারে—  “বিরোধী দল অকুণ্ঠচিত্তে (সংস্কৃতে ধারালো চিত্তে) সরকারি দলকে সমর্থন দিল।’ সংস্কৃত ভাষায় অবশ্য এ বাক্যটি কেউ বলবে না। কারণ সংস্কৃত ‘অকুণ্ঠ’ আর বাংলা ‘অকুণ্ঠ’ প্রায়োগিক দিক থেকে ভিন্ন। তবে এ পরিবর্তনের কারণ আছে। বাঙালিদের ভালোবাসা-দাতাদের হুজুগে চরিত্রের মতোই বিস্ময়কর। প্রকাণ্ড ভালোবাসার প্রবল টান দুদিন পরই ক্ষুরের মতো ধারালো হয়ে কাটতে শুরু করে। দেখুন ‘অগ্নিকোণ’ শব্দের ব্যুৎপত্তি।

অচেনা বনাম অজ্ঞাত

সূত্র : বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।