অচিন্তনীয় বনাম অচিন্ত্য
‘অচিন্ত্য’ থেকে ‘অচিন্তনীয়’। ‘অচিন্তনীয়’ ও ‘অচিন্ত্য’ শব্দের বানান ভিন্ন হলেও অর্থ অভিন্ন। ‘অনীয়’ প্রত্যয়যোগে সংস্কৃত ‘অচিন্তনীয়’ (ন+√চিন্ত্+অনীয়) শব্দ গঠিত হয়েছে। তাই শব্দটিতে য-ফলা প্রয়োগ সিদ্ধ নয়। এরূপ, অনীয় প্রত্যয়ে যোগে গঠিত হয়েছে: চিন্তনীয়, লক্ষণীয়, পূজনীয়, মাননীয়, পালনীয় প্রভৃতি। অচিন্ত্য থেকে যেমন অচিন্তনীয়, তেমনি লক্ষ্য থেকে লক্ষণীয়, পূজ্য থেকে পূজনীয়, সহ্য থেকে সহনীয়, মান্য থেকে মাননীয় প্রভৃতি। ‘অচিন্ত্য’ ‘লক্ষ্য’, ‘সহ্য’, ‘মান্য’ প্রভৃতি শব্দে ‘য-প্রত্যয়’ যুক্ত হওয়ায় ‘য-ফলা’ প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে, ‘অনীয়’ প্রত্যয় যুক্ত হলে শব্দের য-ফলা চ্যুত হয়ে যায়।
বাক্যে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত সংস্কৃত ‘অচিন্তনীয়’ শব্দের অর্থ’ অভাবনীয়, চিন্তার অতীত। অন্যদিকে, বাক্যে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত সংস্কৃত ‘অচিন্ত্য’ শব্দের অর্থ চিন্তা করা যায় না এমন, অচিন্তনীয়।
সুত্র: ব্যাবহারিক প্রমিত বাংলা বানান সমগ্র, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.।
অচেনা বনাম অজ্ঞাত
‘অজ্ঞাত’ শব্দের অর্থ যা জানা বা জ্ঞাত নয়। কোনো বিষয় জ্ঞাত বা জ্ঞানের মধ্যে না থাকলে সেখানে অজ্ঞাত শব্দ ব্যবহার করা হয়। প্রয়োগ: বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনেক তথ্য এখনও মানুষের অজ্ঞাত। অজ্ঞাত কেউ এ কাজটি করেছে। কোনো বিষয় জ্ঞানের মধ্যে আছে, কিন্তু পরিচয় জানা নেই। সে ক্ষেত্রে ‘অচেনা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। প্রয়োগ: অচেনা লোকের কথা বিশ্বাস করতে নেই। অচেনা লোকটির মৃত্যুর কারণ এখনও অজ্ঞাত।
আর একটি উদাহরণ দেখা যাক: একটা লাশ উদ্ধার হলো। লাশটি কার এবং কে বা কারা কীভাবে তাকে হত্যা করেছে কিংবা সে আত্মহত্যা করেছে কি না অথবা কোনো প্রাণীর আক্রমণে বা অন্য কোনোভাবে হত হয়েছে কি না তাও বের করা যায়নি। এক্ষেত্রে বলা যায়, লাশটি একজন ‘অচেনা’ মানুষের তবে মৃত্যুর বিষয়টি ‘অজ্ঞাত’।
সুত্র: ব্যাবহারিক প্রমিত বাংলা বানান সমগ্র, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.।