Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
অসমাপিকা ক্রিয়া ও সমাপিকা ক্রিয়া – Dr. Mohammed Amin

অসমাপিকা ক্রিয়া ও সমাপিকা ক্রিয়া

বিধুভূষণ ভট্টাচার্য

‘সমাপিকা’ ও ‘অসমাপিকা’ ক্রিয়া

‘উ’ ও ‘ও’ এর একটি প্রসঙ্গঃ
উঠে/ওঠে ? উপরে/ ওপরে ? উঠা/ওঠা, বুঝে/বোঝে, শুনে/শোনে, ফুটে/ ফোটে

”বাঙলায় সমাপিকা ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ক্রিয়া পদের আদ্যস্বরের উচ্চারণ বিবৃত হবে। অসমাপিকা ক্রিয়ায় ক্ষেত্রে হবে সংবৃত।
[কথাগুলো একটু জটিল ও কাঠখোট্টা শোনাচ্ছে, তাই না? দেখি উদাহরণ দিয়ে কতোটুকু বোঝানো যায়।]

উদাহরণঃ
১. ছেলেটি টিভি দেখে।
এখানে ‘দেখে’ সমাপিকা ক্রিয়া। অর্থাৎ ‘দেখে’ পদটি দিয়ে বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণ হয়েছে।

আরেকটি উদাহরণঃ
২. ছেলেটি টিভি দেখে ঘুমাবে।
এখানে ‘ঘুমাবে’ সমাপিকা ক্রিয়া; ‘দেখে’ অসমাপিকা ক্রিয়া। কারণ, ‘ঘুমাবে’ পদটি দিয়ে অর্থ সম্পূর্ণ হয়েছে।

আরও একটি উদাহরণ দেখা যাকঃ
৩. ছেলেটি টিভি দেখে খাবার খেয়ে বই পড়ে ঘুমাবে।
এই বাক্যে ক্রিয়াপদ ৪টি – ‘দেখে’, ‘খেয়ে’, ‘পড়ে’, ‘ঘুমাবে’। কিন্তু সমাপিকা ক্রিয়া একটিই – ‘ঘুমাবে’। অর্থাৎ ‘ঘুমাবে’ না বলা পর্যন্ত বাক্য সম্পূর্ণ হচ্ছিলো না। বাকি ৩টি ক্রিয়াপদ অসমাপিকা ক্রিয়া।

এবার প্রসঙ্গে আসি।
লক্ষণীয়, উদাহরণ ১ এ ‘দেখে’ যেহেতু সমাপিকা ক্রিয়া, তাই এর আদ্যস্বরের উচ্চারণ হবে বিবৃত। যথাঃ [দ্যাখে]।
কিন্তু, উদাহরণ ২ ও ৩ এ ‘দেখে’ যেহেতু অসমাপিকা ক্রিয়া, তাই এর আদ্যস্বরের উচ্চারণ হবে সংবৃত। যথাঃ [দেখে]।
বাক্যগুলো পড়তে গেলেই উচ্চারণের পার্থক্যটা বোঝা যাবে।

এবার মূল প্রসঙ্গঃ ক্রিয়া পদের শুরুতে কখন ‘উ’ আর কখন ‘ও’ হবে।
ওপরের আলোচনার সূত্র ধরে বলা যায়,
অসমাপিকা ক্রিয়ার শুরুতে ‘উ’ (সংবৃত); এবং সমাপিকা ক্রিয়ার ক্ষেত্রে ‘ও’ (বিবৃত) হবে।

উদাহরণঃ
৪. আকাশে পাখি ওড়ে
৫. পাখিটা উড়ে গেলো
এখানে উদাহরণ ৪ এ ‘ওড়ে’ সমাপিকা ক্রিয়া, তাই ‘ও’ হয়েছে। উদাহরণ ৫ এ ‘উড়ে’ অসমাপিকা ক্রিয়া, তাই ‘উ হয়েছে। উদাহরণ ৫ এ সমাপিকা ক্রিয়া হচ্ছে ‘গেলো’।

একইভাবে আরও কয়েকটি উদাহরণঃ
৬. ঘুম থেকে ওঠো
৭. ঘুম থেকে উঠে নাশতা করো
৬. সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে
৮. সূর্য পূর্ব দিকে উঠে পশ্চিমে ডুবে গেলো
৯. মেয়েটি বই খোঁজে
১০. মেয়েটি বই খুঁজে পেয়েছে।

আরেকটি কথা।
সাধুরীতিতে ‘উপর’ বানানটি ধ্বনি পরিবর্তনের স্বরসঙ্গতির নিয়ম অনুসারে চলিতরীতিতে ‘ওপর’ হয়েছে। এখন ‘ওপর’ লেখাটাই শুদ্ধ।

সূত্র : বিধুভূষণ ভট্টাচার্য, শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)।