ড. মোহাম্মদ আমীন
আব্রাহাম লিংকনের জুতা এবং রাজা ফিলিপের হাড়গোড়: বিখ্যাতদের কৌতুক হাস্যরস ও প্রজ্ঞাযশ
আব্রাহাম লিংকনের জুতা
আমেরিকান সিভিল ওয়ারের সময় একদিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন হোয়াইট হাউসে নিজের জুতো পালিশ করছিলেন। এসময় ক্যাবিনেটের সেক্রেটারি অব স্টেট মিস্টার হেনরি শোয়ার্ড জরুরি কাজে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
প্রেসিডেন্টকে জুতো পালিশ করতে দেখে শোয়ার্ড বিস্মিত হয়ে বললেন,
স্যার, আপনি কী করছেন?
জুতা পালিশ করছি।
কার জুতা, স্যার?
আমার নিজের জুতা
একথা শুনে শোয়ার্ড বললেন, আমাদের দেশে তো কোনো ভদ্রলোক নিজের জুতা পালিশ করেন না।
লিংকন বললেন, তাহলে বলুন, আপনার দেশের ভদ্রলোকেরা কার জুতা পালিশ করেন?
প্রেসিডেন্টকে জুতো পালিশ করতে দেখে শোয়ার্ড বিস্মিত হয়ে বললেন,
স্যার, আপনি কী করছেন?
জুতা পালিশ করছি।
কার জুতা, স্যার?
আমার নিজের জুতা
একথা শুনে শোয়ার্ড বললেন, আমাদের দেশে তো কোনো ভদ্রলোক নিজের জুতা পালিশ করেন না।
লিংকন বললেন, তাহলে বলুন, আপনার দেশের ভদ্রলোকেরা কার জুতা পালিশ করেন?
রাজা ফিলিফ-এর হাড়
আলেকজান্ডার ( খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫৬- খ্রিষ্টপূর্ব ৩২২) দার্শনিক ডায়োজেনেসকে রাজ দরবারে দাওয়াত দিতে গেলেন। দেখলেন দার্শনিক ডায়োজেনেস শহরের অদূরে অবস্থিত মরাখানায় হাড়ের গাদায় বসে একাগ্রচিত্তে হাড় খুঁজছেন। পাওয়ামাত্র জড়ো করছেন। অন্যদিকে খেয়াল নেই। সসৈন্যে মহাবীর সম্রাট আলেকজান্ডার এসেছেন। তাও ডায়োজেনেসের চোখে পড়ল না।
মহান দার্শনিক, কী করছেন আপনি, আলেকজান্ডার বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইলেন।
চোখ তুলে ডায়োজেনেস নির্বিকার গলায় বললেন, আপনার পিতা রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের হাড় খুঁজছি।
পেলেন?
কীভাবে পাব?
কেন?
আপনার মহাপরাক্রম পিতা রাজা ফিলিপস বাহাদুরের হাড় হাজার হাজার দাস, চাকর-বাকর, গোরুছাগল আর শূকর-কুকুরের হাড়ের সঙ্গে একীভূত হয়ে গেছে। পৃথক করতে পারছি না। একটু সাহায্য করবেন?
লজ্জায় অবনত আলেকজান্ডার কিছু না বলে চলে এলেন।
—————————–
ডায়োজেনেস গ্রিক দার্শনিক। জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব ৪১২ মতান্তরে ৩৯৯ বর্তমান তুরস্কের সিনোপে। খ্রিষ্টপূর্ব পূর্ব ৩২৩ অব্দে কোরিন্থে মারা যান ডায়োজেনিস একটি পিপার মধ্যে থাকতেন এবং তার কেবল একটি আলখাল্লা, একটি লাঠি আর রুটি রাখার একটি থলে ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
মার্কটোয়েন-এর প্রকাশক
মার্ক টোয়েন লেখক হওয়ার চেষ্টা করছেন। কোনো লেখা তখনো প্রকাশিত হয়নি। এ অবস্থায় একদিন একটা গল্পের পাণ্ডুলিপি নিয়ে পত্রিকার এক সম্পাদকের কাছে গেলেন। সম্পাদক গল্পটি পড়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, গল্পটি আপনার নিজের পছন্দ হয়েছে?
মার্ক টোয়েন বললেন, খুব যে পছন্দ হয়েছে, তা নয়।
নিজেদের লেখা পছন্দ না হলে প্রথিতযশা লেখকেরা কী করতেন, মনে আছে আপনার?
কার কথা বলছেন আপনি?
এই ধরুন গিয়ে, নিকোলাই গোগল তাঁর ‘মৃত আত্মা’র দ্বিতীয় পর্ব লিখে পড়া শুরু করলেন। পড়ে পছন্দ না-হওয়ায় তিনি পাণ্ডুলিপিটি কী করেছিলেন জানেন।
মার্ক টোয়েন জানতেন না কী করেছিলেন। তবু নিজের জ্ঞান জাহির করার জন্য বললেন, পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।
ঠিক তাই, বললেন সম্পাদক।
সম্পাদকের কথা শেষ হওয়ার পর মার্ক টোয়েন বললেন, তাহলে আপনি আমাকে প্রতিথযশা লেখক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন? কিন্তু আমার তো একটা লেখাও প্রকাশিত হয়নি!
মার্ক টোয়েন বললেন, খুব যে পছন্দ হয়েছে, তা নয়।
নিজেদের লেখা পছন্দ না হলে প্রথিতযশা লেখকেরা কী করতেন, মনে আছে আপনার?
কার কথা বলছেন আপনি?
এই ধরুন গিয়ে, নিকোলাই গোগল তাঁর ‘মৃত আত্মা’র দ্বিতীয় পর্ব লিখে পড়া শুরু করলেন। পড়ে পছন্দ না-হওয়ায় তিনি পাণ্ডুলিপিটি কী করেছিলেন জানেন।
মার্ক টোয়েন জানতেন না কী করেছিলেন। তবু নিজের জ্ঞান জাহির করার জন্য বললেন, পুড়িয়ে ফেলেছিলেন।
ঠিক তাই, বললেন সম্পাদক।
সম্পাদকের কথা শেষ হওয়ার পর মার্ক টোয়েন বললেন, তাহলে আপনি আমাকে প্রতিথযশা লেখক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন? কিন্তু আমার তো একটা লেখাও প্রকাশিত হয়নি!
বিখ্যাতদের কৌতুক হাস্যরস ও প্রজ্ঞাযশ (২য় খণ্ড), ড. মোহাম্মদ আমীন।