ড. মোহাম্মদ আমীন
ঢাকায় আসার পর থেকে অনেক দিন অন্যের আশ্রয়ে থাকতে থাকতে প্রায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়লেন ছফা। আচরণিক স্পর্শকাতরতার কারণে কেউ থাকে বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারতেন না।অতি দরিদ্র পিতার কাছ থেকেও আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সামান্য সুযোগও ছিল না। থাকা-খাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ল। অনোন্যপায় ছফা, বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থায় গিয়ে প্রুফ দেখার কাজ শুরু করে দিলেন।
তখন ফর্মা প্রতি কত টাকা দেওয়া হতো?
আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার বললেন, তিন বার প্রুফ দেখলে সাড়ে তিন আনা পারিশ্রমিক দেওয়া হতো।
এ অবস্থাতেও ছফা সুযোগ পেলে তাঁকে বিয়ে করার জন্য পরিচিত মেয়েদের প্রায় কোনো রাখঢাক ছাড়াই অনুরোধ করে বসতেন। বলে বেড়াতেন- শামীম সিকদার, সুরাইয়া খানাম, নার্গিস আক্তার এমন কি মালেকা বেগমের মতো স্মার্ট মেয়েও আমাকে বিয়ে করতে চাইছেন।আসলে কেউ তাঁকে বিয়ে করতে চা্ইতেন না, বরং ছফার প্রস্তাবে বিরক্ত এবং কেউ কেউ অপমান বোধ করতেন।
একদিন ছফা, শামীম শিকদারকে নিয়ে গেলেন আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যারের বাসায়।
কী ব্যাপার? আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার জানতে চাইলেন।
ছফা বললেন, শামীম সিকদার আমাকে বিয়ে করতে চাইছে, বিয়ে করার জন্য নিয়ে এলাম।
আমার বাসায় কেন?
আমার থাকার জায়গা নেই। আপনার বাসায় থাকতে দিতে হবে।
আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার বললেন, এক মাস থাকতে দিতে পারি, তবে একটা শর্ত আছে।
কী শর্ত? ছফা জানতে চাইলেন।
আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার বললেন, আগে বিয়েটা রেজিস্ট্রি করতে হবে। কাজির প্রয়োজন। তারপর থাকাথাকি। আপনি কাজি নিয়ে আসুন।
ছফা কাজি আনার জন্য চলে গেলেন। ছফা চলে যাবার কিছুক্ষণ পর শামীম সিকদারও চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন, আমি যাচ্ছি।
বিয়ে?
শামীম শিকদার বললেন, একটু মজা করলাম ছফা ভাইয়ের সঙ্গে। তিনি যেখানে সেখানে বিরক্ত করেন- সবাইকে বলে বেড়ান, আমি নাকি তাঁকে বিয়ে করার জন্য পাগল। আসলে, ছফা ভাই হিউম্যান বিহেভিয়ারে দুর্বল।
তারপর কী হলো?
শামীম সিকদার চলে গেলেন। ছফাও আর ফিরলেন না।
এখানেই বিয়ে শেষ। জীবনে তিনি আর বিয়েই করতে পারলেন না।
চিরকুমার অবস্থায় ত্যাগ করলেন পৃথিবী।
বিস্তারিত: অর্হণা, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১
শুদ্ধ বানান চর্চা প্রমিত বাংলা বানান বিধি : বানান শেখার বই
প্রায়শ ভুল হয় এমন কিছু শব্দের বানান/২