ইন্ডিয়া / ভারত (India) : ইতিহাস ও নামকরণ

কীভাবে হলো দেশের নাম (এশিয়া)

ড. মোহাম্মদ আমীন

ইন্ডিয়া (India)

ইংরেজিতে ইন্ডিয়াা (India) কথাটি সিন্ধু নদের আদি ফার্সি নাম হিন্দু থেকে উদ্ভুত। এর অর্থ ইন্দু নদের দেশ (Land of the Indus River)। প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের বলত ইন্দোই বা ‘ইন্দাস’। এর অর্থ হচ্ছে সিন্ধু নদী অববাহিকার অধিবাসী। ‘ইন্দাস’ নাম থেকেই ‘ইন্ডিয়া’ নামটির উৎপত্তি। ইন্ডিয়ার স্থানীয় নাম ভারত বা ভারতবর্ষ। হিন্দু পৌরাণিক রাজা ভরত এর নামানুসারে ভারত নামটির উৎপত্তি হয়েছে। কথিত হয়, এই অঞ্চল বা বর্ষ রাজা ভরতকে দান করা হয়েছিল। তাই এর নাম ভারতবর্ষ। স্বাধীনতার পর ভারতের সংবিধানে ও লোকমুখে ভারত নামটিই মান্যতা লাভ করে। এছাড়াও মধ্যযুগে ফার্সি হিন্দুস্তান (বা হিন্দুস্থান, যার অর্থ ‘হিন্দুদের দেশ’) শব্দটিও উত্তর ভারত অর্থে ব্যবহৃত হতো। এটি বর্তমানে মাঝে মাঝে সমগ্র ভারত বুঝাতেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পুরাতন লিপি থেকে জানা যায় যে, ভারতবর্ষ নামটির পরিচিতির পূর্বে ভারত মূলত জম্বুদ্বীপ নামেই পরিচিত ছিল। আবার অনেকের মতে, আর্যভারত (Aryavarta) শব্দ থেকে ভারত শব্দের উদ্ভব। এর অর্থ আর্যদের দেশ।

ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত এক বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম ভারতীয় প্রজাতন্ত্র। ভৌগোলিক আয়তন বিবেচনায় এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র। জনসংখ্যার বিচারে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ। ভারতের পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান, উত্তর-পূর্বে চীন, নেপাল ও ভূটান এবং পূর্বে বাংলাদেশ, মায়ানমার ও মালয়েশিয়া অবস্থিত। এছাড়া ভারত মহাসাগরে অবস্থিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া ভারতের নিকটবর্তী দ্বীপরাষ্ট্র। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর দ্বারা বেষ্টিত ভারতের উপকূলরেখার সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৭,৫১৭ কিলোমিটার। ভারতের জাতীয় সংগীত জনগণমন অধিনায় জয় হে’ এর রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। উল্লেখ্য বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গানের রচয়িতাও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বিশ্বজোড়া খ্যাত সিন্ধু সভ্যতা ভারতীয় অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে এখানেই স্থাপিত একাধিক সাম্রাজ্য। হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ ধর্মের উৎসভূমি ভারত। খ্রিষ্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে জরথুস্ট্রীয় ধর্ম (পারসি ধর্ম), ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ধীরে ধীরে ভারতীয় ভূখ-ের অধিকাংশ অঞ্চল নিজেদের শাসনাধীনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে পুরো ভারত একটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। অতঃপর এক সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়।

ভারতীয় অর্থব্যবস্থা বাজারি বিনিময় হারের বিচারে বিশ্বে দ্বাদশ ও ক্রয়ক্ষমতা বিচারে বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম। তবে অতিমাত্রায় দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা ও অপুষ্টি এখনও ভারতের অন্যতম প্রধান সমস্যা। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারত একটি বহুধর্মীয়, বহুভাষিক ও বহুজাতিক রাষ্ট্র। ভারতে যত টিভি চ্যানেল আছে, পৃথিবর আর কোনো দেশে তত নেই। ভারতের জাতীয় পতাকা ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুলাই গ্রহণ করা হয়। পতাকার মাঝখানে রয়েছে ২৪- স্প্রোকের অশোকচক্র।

ভারত ২৯টি রাজ্য ও সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলবিশিষ্ট একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সাধারণতন্ত্র। ভারতের প্রত্যেক রাজ্যে নির্বাচিত রাজ্য সরকার রয়েছে। নির্বাচিত সরকার রয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পন্ডিচেরি ও দিল্লিতেও। অপর পাঁচটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রাষ্ট্রপতির প্রত্যক্ষ শাসনাধীন। এ অঞ্চলগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে থাকেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইনবলে ভাষার ভিত্তিতে রাজ্যগুলি স্থাপিত হয়। তৃণমূল স্তরে প্রশাসন পরিচালনার লক্ষ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো মোট ৬১০টি জেলায় বিভক্ত। জেলাগুলো আবার মহকুমা বা তহসিলে এবং গ্রামে বিভক্ত।

ভারতের রাজ্যগুলো হচ্ছে : ১. অন্ধ্রপ্রদেশ, ২. অরুণাচল প্রদেশ, ৩. অসম, ৪. বিহার, ৫. ছত্তীসগড়, ৬. গোয়া, ৭. গুজরাট, ৮. হরিয়ানা, ৯. হিমাচল প্রদেশ, ১০. জম্মু ও কাশ্মির, ১১. ঝাড়খন্ড, ১২. কর্ণাটক, ১৩. কেরলা, ১৪. মধ্যপ্রদেশ, ১৫. এহারাষ্ট্র, ১৬. মণিপুর, ১৭. মেঘালয়, ১৮. মিজোরাম, ১৯. নাগাল্যান্ড, ২০. ওড়িশা, ২১. পাঞ্জাব, ২২. রাজস্থান, ২৩. সিকিম, ২৪. তামিলনাড়ু, ২৫. ত্রিপুরা, ২৬. উত্তরপ্রদেশ, ২৭. উত্তরাখ-, ২৮. পশ্চিমবঙ্গ ও ২৯. তেলঙ্গানা। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো হচ্ছে : ক. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, খ. চন্ডীগড়, গ. দাদরা ও নগর হাভেলি, ঘ. দমন ও দিউ, ঙ. লাক্ষাদ্বীপ, চ. পন্ডিচেরী, ছ. দিলি এবং জাতীয় রাজধানী অঞ্চল।

ভারতের ৭০ শতাংশ অধিবাসী গ্রামাঞ্চলে বাস করে। এর বৃহত্তম মহানগরগুলোর মধ্যে মুম্বাই, নয়াদিল্লি, বেঙ্গালুর, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ ও আহমদাবাদ উল্লেখযোগ্য। আফ্রিকা মহাদেশের পরেই ভারত সংস্কৃতি, ভাষা ও জাতিগতভাবে বিশ্বে সর্বাধিক বৈচিত্র্যপূর্ণ ভৌগোলিক অঞ্চল। ভারতের দুটি প্রধান ভাষাগোষ্ঠী হলো ইন্দো-আর্য (মোট জনসংখ্যার ৭৪%) এবং দ্রাবিড় (মোট জনসংখ্যার ২৪%)। ভারতে উপ-ভাষার সংখ্যা ১,৬৫২টি। ভারতের মেঘালয় পৃথিবীর সবচেয়ে সিক্ত জনবহুল এলাকা। ভারতের ৮০.৫% অধিবাসী হিন্দু। অন্যান্য ধর্মসম্প্রদায়গুলির মধ্যে মুসলমান (১৩.৪%), খ্রিস্টান (২.৩%), শিখ (১.৯%), বৌদ্ধ (০.৮%), জৈন (০.৪%)। এছাড়া এখানে ইহুদি, পারসি ও বাহাই ধর্মাবলম্বী লোকও রয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা সমগ্র বিশ্বের নিরিখে তৃতীয় বৃহত্তম এবং অ-মুসলমান প্রধান দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তম। দেশে আদিবাসী জনসংখ্যা ৮.১%। সুন্দরবন ভারতের জাতীয় উদ্যান। বিশ্বের বৃহত্তম নদী-বদ্বীপ গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত এই বনাঞ্চলটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রসারিত।

ভারতের আয়তন ৩২,৮৭,৫৯০ বর্গকিলোমিটার বার ১২,৬৯,৩৪৬ র্বগমাইল। তন্মধ্যে জলভাগের পরিমাণ ৯.৬%। আয়তন বিবেচনায় ভারত পৃথিবীর ৭ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অনুমিত হিসাবমতে ভারতের জনসংখ্যা ১২৭,৬২,৬৭,০০০ এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩৮৪ জন। জনসংখ্যা বিবেচনায় ভারত বিশ্বের ২য় বৃহত্তম রাষ্ট্র। প্রথম হচ্ছে চীন। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় বিশ্বে ভারতের স্থান ৩১। ভারতের জনগণের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ৬,২০৯ ইউএস ডলার, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ১২৪-তম। ভারতের গিনি ও এইচডিআই যথাক্রমে ৩৩.৯ ও ০.৫৮৬ (১৩৫-তম)। ভারতীয় মুদ্রার নাম রপি এবং রাজধানী নয়াদিল্লি।

শ্যাম্পুর উৎপত্তি ভারতে। এটি হার্বাল ঔষধ হিসাবে ব্যবহার করা হতো। শ্যাম্পু সংস্কৃত শব্দ ভারতীয় চাম্পু হতে উদ্ভুত। এর অর্থ মর্দন করা। ভারত প্রতিবছর ১.২ মিলিয়ন টন আম উৎপাদন করে। যা ৮০ হাজার নীল তিমির ওজনের সমান। ভারত পৃথিবীর সর্বাধিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী দেশ। এখানে প্রতিবছর ১৩৩ মিলিয়ন টন দুগ্ধ উৎপাদন হয়। কাবাডি খেলায় ভারত বিশ্বের সেরা। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল বিশ্ব-কাবাডি প্রতিযোগিতায় ভারতীয় দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মহিলা কাবাডিতেও কেউ তাদের হারাতে পারেনি।

ভারতের মিসাইলের জনক ও ভারতের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালাম ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে সুইজারল্যান্ড সফর করেন। তিনি সুইজারল্যান্ড হতে আসার পর তার সম্মানে মে মাসের ২৬ তারিখকে বিজ্ঞান দিবস ঘোষণা করা হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর বেতনের ৫০ ভাগ নিতেন। তাঁর দাবি, অত টাকা তার প্রয়োজন হয় না। ১২ বছরের রাষ্ট্রপতির শেষদিকে তিনি কেবল বেতনের ২৫% গ্রহণ করতেন। ভারতের প্রথম রকেট এত হালকা ছিল যে, এটি বাইসাইকেলে করে কেরালার তিরবনন্তপুরমের তাম্বা উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া গিয়েছিল।

ভারতের জনসংখ্যা যেমন বেশি তেমনি বৈচিত্র্যময়। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ইংরেজিভাষী দেশ। এর ১২৫ মিলিয়ন লোক ইংরেজি ভাষায় কথা বলে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগ। ইংরেভাষীর সংখ্যা বিবেচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে প্রথম। বিশ্বের বৃহত্তম পরিবারও ভারতে অবস্থিত। ওই পরিবারের কর্তার ৩৯ জন স্ত্রী এবং ৯৪ জন সন্তান-সন্ততি রয়েছে।
শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বের বৃহত্তম স্কুল লখনৌর সিটি মন্টেসরি স্কুল। এ স্কুলে ৪৬ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে। খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ অব্দে প্রতিষ্ঠিত তক্ষ্মশীলা বিশ্ববিদ্যালয়কে পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় বলা হয়। ভারতের রেলওয়ে প্রশাসনে পৃথিবীর সবচেয়ে অধিক সংখ্যক লোক কাজ করে। এখানে কর্মরত লোকের সংখ্যা ১.৩ মিলিয়ন। যা পৃথিবীর অনেক দেশের লোকসংখ্যার চেয়ে অধিক। খুনের ঘটনার ক্ষেত্রে ভারত পৃথিবীতে প্রথম। দ্বিতীয় হচ্ছে রাশিয়া। উল্লেখ্য ভারতে প্রতিবছর গড়ে ৩২,৭১৯ জন লোক খুন হয়। ভারতে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৪ কোটি লোক ভোট দিয়েছিল। যার সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সম্মিলিত জনসংখ্যা চেয়ে বেশি। ভারতে প্রতিবছর যত শিশু জন্মগ্রহণ করে তার সংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। বিশ্বের মোট কর্মীসংখ্যার ২৫% ভারতীয়।

দাবা, বোতাম, রুলার, স্যাম্পু, গণিতে ব্যবহৃত শূন্য, পাই (pi) এর মান, ত্রিকোণমিতি, অ্যালজেব্রা, ক্যালকুলাস, ক্যাটারেক্ট সার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, ডায়মন্ড খনি এবং চাঁদে পানি প্রভৃতির আবিষ্কারক ভারতীয়। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সরকারিভাবে কেবল ভারতে ডায়মন্ড পাওয়া যেত। ভারতে বিশ্বের বৃহত্তম পোস্টাল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠিত। এখানে মোট ডাকঘরের সংখ্যা ১,৫৫,০১৫। প্রতিটি পোস্ট অফিস প্রায় ৭,১৭৫ জন লোককে ডাক-সেবা দিয়ে থাকে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে দাল লেক ও শ্রীনগরে ভাসমান ডাকঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়।

এ পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণজমায়েত হয়েছিল ভারতে। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে কুম্ভমেলায় ৭৫ মিলিয়ন লোক তীর্থযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিল। প্রতি ১২ বছর পর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কুম্ভমেলায় এত জনসমাগম হয়েছিল যে, তা মহাশূণ্য থেকেও দৃষ্টিগোচর হয়েছিল। মার্শাল আর্ট, যোগ ব্যায়াম প্রভৃতির উৎপত্তি ভারত। ভারত পৃথিবীর প্রথম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। তবে ভারত এ পর্যন্ত কোনো দেশে আক্রমণ করেনি।

সক্রিয় সেনা সংখা বিবেচনায় ভারত বিশ্বে তৃতীয়। প্রথম ও দ্বিতীয় হচ্ছে যথাক্রমে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। তিরুপতি বালাজি মন্দির ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে বছরে যত লোক আসে, তার সংখ্যা মক্কা ও ভ্যাটিকান সিটি ভ্রমণে যাওয়া লোকের চেয়েও অধিক। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মসজিদ রয়েছে ভারতে। এর সংখ্যা তিল লাখের অধিক। ভারতের ২০-৪০% লোক ধর্মীয় ও অন্যান্য কারণে নিরামিষভোজী। এত বেশি সংখ্যক নিরামিষভোজী পৃথিবীর আর কোথাও নেই। নিরামিষভোজীদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে ভারতে পিজাহাট, কেএফসি ও ম্যাকডোনাল্ট নিরামিষ মেনুর প্রচলন করেছে।

ভারতের শকুন্তলা দেবিকে মানব-কম্পিউটার বলা হয়ে থাকে। তাকে ৭,৬৮৬,৩৬৯,৭৭৪,৮৭০ এর সঙ্গে ২,৪৬৫,০৯৯,৭৪৫,৭৭৯ গুণ করলে কত হবে তা জানতে চাওয়া হলে জনাকীর্ণ সম্মেলনে তিনি ২৮ সেকেন্ডের মধ্যে ঠিক উত্তর দিয়ে সবাইকে হতবাক করে দিয়েছিলেন। মহান্ত ভারতদাস দর্শনদাস গির জঙ্গলে বাস করেন। তাকে ভোট দেওয়ার সুবিধা প্রদানের জন্য ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে একটি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। যে ভোটকেন্দ্রে কেবল তিনিই একমাত্র ভোটার ছিলেন।

কুসংস্কারের ক্ষেত্রেও ভারতের বৈচিত্র্য বেশ আকর্ষণীয়। পরিবেশ দূষণ কমানোর অজুহাতে জরোয়াসত্রিনিজম অনুসারীগণ মৃতদেহ কবরস্থ করার পরিবর্তে শকুনে খাওয়ার জন্য নীরবতার টাওয়ার (Towers of Silence) নামে খ্যাত ভবনে রেখে দেয়। শকুন মাংস খাওয়ার পর হাড়গোড় শুকিয়ে গেলে তা কেন্দ্রীয় কূপে ফেলে দেওয়া হয়। ভারতের কর্মনসা নদী অভিশপ্ত বলে বিবেচিত। লোকদের বিশ্বস এ নদীর জল স্পর্শ করলে চরম অমঙ্গল ঘটে। তাই এ নদীর আশেপাশের লোকজন শুকনো খাবার খায়, কারণ রান্না করতে জল লাগে।


ব্রুনাই (Brunei) : ইতিহাস ও নামকরণ

চায়না (China) : ইতিহাস ও নামকরণ

কাম্বোডিয়া (Cambodia) : ইতিহাস ও নামকরণ

সাইপ্রাস (Cyprus) : ইতিহাস ও নামকরণ

জজিয়া (Georgia) : ইতিহাস ও নামকরণ

সূত্র:  কীভাবে হলো দেশের নাম, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।

Language
error: Content is protected !!