Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
উইনস্টনের হিক্কা – Dr. Mohammed Amin

উইনস্টনের হিক্কা

ড. মোহাম্মদ আমীন
সৌদি আরব ও জর্ডানের সীমান্ত নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রিটেন। দায়িত্ব পড়েছে উইন্সটন চার্চিলের কাঁধে। এমন দায়িত্ব পেলে সবাই খুশি হন, সম্মানের বিষয়— প্রাপ্তিযোগ তো আছেই। চার্চিল মোটেও খুশি নন, বরং বিরক্ত। সৌদি আরব এবং জর্ডান দুদেশেই অ্যালকোহল নিষিদ্ধ। অথচ জীবন মানে অ্যালকোহল— পৃথিবীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পানীয় অ্যালকোহল, স্বর্গেও। বিদেশ যাবেন অথচ ভোদকা-অ্যালকোহল পাবেন না— এমন বিদেশ ভ্রমণের চেয়ে গির্জায় গিয়ে পাদ্রির সামনে বসে যিশুখ্রিষ্টের প্রশংসা করা অনেক কম কষ্টের। তাঁর মন খারাপ হতে শুরু করল। কিন্তু  মন খারাপটা চরমে পৌঁছার আগে মন ভালো করার জবরদস্ত খবর চলে এল।
সৌদি আরব অন্তত চার্চিলের জন্য ওই দেশে অ্যালকোহলের ফোয়ারা বইয়ে দিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হবে না। মহাখুশি চার্চিল। সৌদি বাদশাহ খবর নিয়ে জেনেছেন, চার্চিল রাশিয়ান ভোদকা পছন্দ করেন। তিনি রাশিয়ান ভোদকা পেলে এমন পান করেন যে, কাপড়চোপড়ের খবর পর্যন্ত থাকে না। সৌদি আরব রাশিয়ান ভোদকা এনে অতিথিশালা মদ্যশালায় পরিণত করে দিল।
সৌদি আরবের পবিত্র ভূমিতে পা রাখার পর পরই রাশিয়ান ভোদকা দিয়ে তাঁকে ডুবিয়ে রাখল সৌদি প্রশাসন। চার্চিলও মহাখুশি— বোতলের পর বোতল ভোদকা টেনেছেন— মাগনা পেলে ব্রিটেনের চার্চিলও গলায় আলকাতরা ঢালেন। অতিরিক্ত ভোদকা পান করার কারণে সৌদি আরব আসার একদিনের মধ্যে চার্চিল হিক্কা তোলা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। যেখানে যাচ্ছিলেন সেখানেই হিক্কা তুলছিলেন। তারপরও হাত থেকে ব্র্যান্ডির গ্লাস ছাড়ছিলেন না।
এ অবস্থায় রওয়ানা দিলেন সীমান্ত নির্ধারণে। দু দেশের সীমান্ত বরবার তৈরি তাবুর পাশে প্রচণ্ডভাবে ঢলে ঢলে হাঁটছিলেন চার্চিল। হাত কাঁপছিল তার, মাথা সূর্যের গতিতে নিজ অক্ষের চারদিকে ঘুরছিল। কিছুদূর যেতেই তাঁর হাত পিছলে গেল। গ্লাসের সব ভোদকা পড়ে গেল তৃষ্ণাকাতর মরুভূমিতে। সৌদি প্রতিনিধি এগিয়ে এলেন বোতল নিয়ে, স্যার, প্রয়োজনে পুরো মরুভূমিতে ব্র্যান্ডির বন্যা বইয়ে দেব, শুধু আপনার জন্য। আরেক গ্লাস নিন। সৌদি প্রতিনিধি শেখ ইখওয়ান বিন আফজাল আরেক গ্লাস ব্রান্ডি তুলে দিলেন চার্চিলেন হাতে। জর্ডানের প্রতিনিধি মাতাল চার্চিলের কাণ্ড আর সৌদি প্রতিনিধির খ্রিষ্টান-তোষণ দেখে হাসছিলেন। দু চুমুক ভোদকা মুখে দিয়ে কিছুদূর যাবার পর আবার হিক্কা উঠল চার্চিলের।
সীমান্ত ভূমিতে আবার গড়িয়ে পড়ল আর এক গ্লাস রাশিয়ান ব্রান্ডি।
এগিয়ে এলেন সৌদি শেখ ব্রান্ডির গ্লাস নিয়ে, স্যার, আরব সাগরের সব জলকে আপনার জন্য ভোদকা করে দেব। আর একটা গ্লাস ভরে দিলেন শেখ আফজাল।
“এ ভূমিতে ব্রান্ডি পড়েছে”, চার্চিল জর্ডান প্রতিনিধি মোহাইমেনের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আপনার পতিত ব্রান্ডি লাগবে?
ভোদকা হারাম।
তাহলে পতিত ভোদকা লাগবে না? আবার প্রশ্ন করলেন চার্চিল।
হারাম ও মূল্যহীন পতিত ব্রান্ডি দিয়ে কী করব?
লাগবে না?
না। 
তাহলে সৌদি আরবকে দিয়ে দিই? প্রচণ্ড হিক্কা দিয়ে চার্চিল বললেন।
দিয়ে দিন, অবহেলার গলায় জর্ডান প্রতিনিধি বললেন।
জর্ডানের জন্য তত মূল্যবান নয় গণ্যে চার্চিল সৌদি-জর্ডান সীমান্তের কয়েক হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা সৌদি আরবকে দিয়ে দিলেন।
ওই এলাকাটি এখনো উইনন্সটনের হিক্কা (Winston’s Hiccup) নামে পরিচিত। সৌদি আরব গেলে ঘুরে আসতে পারেন উইনস্টনের হিক্কা।
———————————————————————