শব্দ এক পদ ভিন্ন
ড. মোহাম্মদ আমীন
অভিধানে শব্দের পাশে পদের নাম লেখা থাকলেও কেবল শব্দ দিয়ে পদকে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করা সবসময় ঠিক নাও হতে পারে। কারণ, শব্দ যখন বাক্যে বসে তখন এর পদ-প্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তাই শব্দের প্রকৃত পদনাম কেবল বাক্যে ব্যবহারের পর নিশ্চিত করে বলা যায়।একই শব্দ বাক্যে বিভিন্ন পদরূপে ব্যবহৃত হতে পারে। একই পদ বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপে কীভাবে ব্যবহৃত হতে পারে তার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো :
সুন্দর : বিশেষণ রূপে: বেশ সুন্দর কথা বলেছ।
বিশেষ্য রূপে: সে সুন্দর কী জানে না।
ভালো : বিশেষণ রূপে: ভালো বাড়ি পাওয়া কঠিন।
বিশেষ্য রূপে: আপন ভালো সবাই চায়।
মন্দ : বিশেষণ রূপে: মন্দ কথা বলতে নেই।
বিশেষ্য রূপে: এখানে কী মন্দটা তুমি দেখলে?
পুণ্য : বিশেষণ রূপে: তোমার এ পুণ্য প্রচেষ্টা সফল হোক।
বিশেষ্য রূপে: পুণ্যে মতি হোক।
নিশীথ : বিশেষণ রূপে: নিশীথ রাতে বাজছে বাঁশি।
বিশেষ্য রূপে: গভীর নিশীথে সুপ্ত প্রকৃতি কানে কানে কী যেন বলে যায়।
শীত : বিশেষণ রূপে: শীতকালে কুয়াশা পড়ে ভীষণ।
বিশেষ্য রূপে: শীতের সকালে চারদিক কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে যায়।
সত্য : বিশেষণ রূপে: সত্য পথে থেকো সত্য কথা বলো।
বিশেষ্য রূপে: এ এক বিরাট সত্য। এ কি সত্য – – -।
মিথ্যা : বিশেষণ রূপে: মিথ্যা কথা সহজেই ধরা যায়।
বিশেষ্য রূপে: মিথ্যা বর্জন করো।
বিশেষণের অতিশায়ন
বিশেষণ পদ যখন দুই বা ততোধিক বিশেষ্য পদের মধ্যে গুণ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি বিষয় তুলনাকালে একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে। যেমন: যমুনা একটি দীর্ঘ নদী, পদ্মা দীর্ঘতর, কিন্তু মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। সূর্য, পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যে তুলনায় সূর্য বৃহত্তম, পৃথিবী চন্দ্রের চেয়ে বৃহত্তর এবং চন্দ্র পৃথিবী অপেক্ষা ক্ষুদ্রতর।
বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র : পদপ্রকরণ
বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র : পদের (পদ-এর) প্রয়োজনীয়তা
মাননীয় সভাপতি কচুর সভাপতি : বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র
সরকারি কিন্তু সহকারী : বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র
চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ সমক্ষ : বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র
বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র : বিপরীতার্থক শব্দ বা বিপরীত শব্দ
বাংলা ব্যাকরণ সমগ্র : শব্দ পদ পদার্থ ও বাক্য