
শেখ লুৎফর রহমান বাঙালি জাতির জনক এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা, শেখ আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর পিতামহ এবং শেখ জাকির বঙ্গবন্ধুর প্রপিতামহ এবং প্রপ্রপিতামহ হচ্ছে শেখ ইকরাম।
.

By Dr.amin
♦ বঙ্গবন্ধুর বংশ ও পরিজন পরিচয়
♦শেখ আউয়াল
♦জিয়াউদ্দিন
♦শেখ বোরহান উদ্দিনের
শেখ আউয়ালের বঙ্গদেশে আগমন
বঙ্গবন্ধুর প্রথম এদেশীয় পূর্বপুরুষ শেখ আউয়াল। তিনি ছিলেন ইরাকের অধিবাসী। তিনি ১৪৬৩ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদের হাসানপুর এলাকার বিখ্যাত ইসলামি সাধক হজরত বায়েজিদ বোস্তামি তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বঙ্গদেশে আসেন। শেখ আউয়াল ছিলেন বায়েজিদ বোস্তামির অন্যতম শিষ্য। তিনি, বায়েজিদ বোস্তামির সঙ্গে বঙ্গদেশে আগমন করেন।
সোনারগাঁওয়ে শেখ আউয়াল
বঙ্গদেশে আসার পর বায়েজিদ বোস্তাামি তাঁর অন্যতম সঙ্গী শেখ আবদুল আওয়ালকে সোনারগাঁও অবস্থান করে বৃহত্তর ঢাকায় ইসলাম প্রচার, ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা ও ইসলামি আদর্শ বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করেন। শেখ আওয়াল তাঁর সহস্রাধিক ভক্ত-অনুগামীসহ অর্পিত কাজে মনোনিবেশ করেন। বাগদাদ হতে আগত এই সাধক হযরত শেখ আওয়ালই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম এ দেশীয় পূর্বপুরুষ।
জিয়াউদ্দিনের পরবর্তী বংশধর
১১৩৪ খ্রিষ্টাব্দে বড়োপির শেখ মহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানি (রা.)-এর ১২তম সন্তান শেখ জিয়াউদ্দিন আবু বকর (রা.) জন্মগ্রহণ করেন এবং ১১৯০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মারা যান। জিয়াউদ্দিন আবু বকরের সপ্তম পুত্র ১১৭৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম শেখ মো. জহির। তিনি ১২৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ৯২ বছর বয়সে মারা যান। ত্বদীয় পুত্র শেখ আবু দাউদ ১২৪০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। ত্বদীয় পুত্র শেখ মোহাম্মদ হাসান ১২৮১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৩৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। ত্বদীয় পুত্র শেখ আবু মনসুর ১৩১৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৪০১ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন।
শেখ আউয়ালের পিতা
আবু মনসুরের দ্বাদশ সন্তান শেখ আবদুল আউয়াল। তিনি ১৪২৮ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদের হাসানপুর এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ৩৬ বছর বয়সে তিনি হাসানপুর থেকে বায়েজীদ বোস্তামির সাথে বাংলাদেশে আগমন করেন।
শেখ পরিবারের পত্তন
শেখ আউয়াল হযরত শেখ মহিউদ্দিন আবদুল কাদের জিলানীর বংশধর। শেখ আউয়ালের জ্যেষ্ঠ সন্তানের নাম শেখ জহির উদ্দিন। শেখ জহির উদ্দিনের পুত্র শেখ জান মোহাম্মদ ওরফে তেরকি শেখ। জান মোহাম্মদ ওরফে তেরকি শেখের পুত্র শেখ বোরহান উদ্দিন। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। ব্যবসার কাজে শেখ বোরহান উদ্দিন প্রায়সময় গোপালগঞ্জে গিমাডাঙ্গায় যেতেন। সেখানে তিনি সৎ ব্যবসায়ী এবং আদর্শ মানুষ হিসেবে খ্যাত হয়ে ওঠেন। এ সূত্রে গিমাডাঙ্গা সংলগ্ন টুঙ্গীপাড়ার কাজি পরিবারের এক রমণীর সঙ্গে শেখ বোরহান উদ্দিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এভাবেই টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারের গোড়াপত্তন ঘটে। বিস্তারিত
শেখ বোরহান উদ্দিনের পরিবার
শেখ বোরহান উদ্দিনের ছিল তিন পুত্র সন্তান। তারা হলেন : শেখ ইকরাম বা শেখ আকরাম, শেখ তাজ মোহাম্মদ ও শেখ কুদরতুল্লা ওরফে কদু শেখ। শেখ ইকরামের দুই ছেলে যথাক্রমে শেখ জাকির হোসেন ও শেখ ওয়াসিম উদ্দিন। শেখ জাকিরের তিন ছেলে যথাক্রমে শেখ আব্দুল মজিদ, শেখ আব্দুল রাসেল ও শেখ আবদুল হামিদ। শেখ আবদুল হামিদের তিন ছেলে এবং তারা হলেন শেখ লুৎফর রহমান, শেখ শফিউর রহমান ও শেখ হাবিবুর রহমান।
শেখ মুজিবের পিতা, পিতামহ এবং প্রপিতামহ
শেখ লুৎফর রহমান বাঙালি জাতির জনক এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা, শেখ আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর পিতামহ এবং শেখ জাকির বঙ্গবন্ধুর প্রপিতামহ এবং প্রপ্রপিতামহ হচ্ছে শেখ ইকরাম।
বঙ্গবন্ধুর ভাষ্যে তার বর্তমান বংশধর
বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘শেখ বোরহান উদ্দিনের পরে তিন-চার পুরুষের কোনো ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে শেখ বোরহান উদ্দিনের ছেলের ছেলে অথবা দুই-এক পুরুষ পরে দুই ভাইয়ের ইতিহাস পাওয়া যায়। এদের সম্বন্ধে অনেক গল্প আজও শোনা যায়। এক ভাইয়ের নাম শেখ কুদরত উল্লাহ ওরফে কদু শেখ, আর এক ভাইয়ের নাম শেখ একরাম উল্লাহ বা শেখ ইকরাম। আমরা এখন যারা আছি তারা এই দুই ভাইয়ের বংশধর।’
বঙ্গবন্ধুর কয়েকজন ঘনিষ্ট মুরুব্বি
বঙ্গবন্ধুর দাদারা ছিল তিন ভাই। বঙ্গবন্ধুর বড়ো চাচা এন্ট্রাস পাস করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দাদা যখন মারা যান তখন তার বাবা এন্ট্রাস পড়েন। বঙ্গবন্ধুর দাদার বড়ো ভাইয়ের কোনো ছেলে ছিল না। চার মেয়ে ছিল। বঙ্গবন্ধুর বাবার সঙ্গে তার ছোটো মেয়ের বিবাহ দেন এবং সমস্ত সম্পত্তি বঙ্গবন্ধুর মাকে লিখে দেন।বঙ্গবন্ধুর নানার নাম ছিল শেখ আবদুল মজিদ। বঙ্গবন্ধুর দাদার নাম শেখ আবদুল হামিদ। ছোটো দাদার নাম শেখ আবদুর রশিদ। আবদুর রশিদ পরবর্তীকালে ইংরেজদের দেওয়া ‘খান সাহেব’ উপাধি পান। জনসাধারণ তাকে ‘খান সাহেব’ বলে ডাকতেন।
বঙ্গবন্ধুর মা ও বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীর বংশধর
শেখ জাকিরের ছেলে, শেখ আবদুল মজিদের বংশধর বঙ্গবন্ধুর মাতা সায়েরা খাতুন। অন্যদিকে, শেখ জাকিরের ছেলে শেখ ওয়াসিম উদ্দিনের বংশধর হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন নেছা। শেখ ফজিলাতুন্নেছার পিতার নাম মো. জহুরুল হক ওরফে দুদু মিয়া এবং দাদার নাম শেখ মো. আবুল কাশেম। অর্থাৎ শেখ লুৎফর রহমান বিয়ে করেন ত্বদীয় চাচা শেখ মজিদের মেয়ে সায়েরা বেগমকে। শেখ মুজিবুর রহমানের বিয়ে হয় চাচা শেখ জহিরুল হকের মেয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা বেনুর সঙ্গে। পরবর্তী অংশ