আপনি সবই জানতেন ৮২
“আপনি কি জানেন, শ্রীজ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস প্রথম উচ্চারণ-সহ বাংলা অভিধান প্রণয়ন করেন?”— কোনো তথ্য উল্লেখ-করে এভাবে প্রশ্ন করাটা রোজ চোখে পড়ে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে— শেষে তথ্য বা উত্তর জুড়ে দিয়ে এভাবে প্রশ্ন করাটা যথার্থ নয়; অধিকন্তু কোনো তথ্য উল্লেখ করে দেওয়ার পর কোনো ব্যক্তি ওই তথ্যটি জানে কি না, তা জানতে চেয়ে প্রশ্ন করাটা বাহুল্য-হাস্যকর। যেমন, ধরুন— সাবিত ছাফিয়াকে নিজের নাম উল্লেখ করে বলল, “তুমি কি জানো, আমার নাম ‘সাবিত’?” ‘সাবিত’ নামের ব্যক্তিটির সঙ্গে জীবনের প্রথম পরিচয়ে উদ্ধৃতির প্রশ্নটি করা হলেও উত্তর হবে ‘হ্যাঁ’। কারণ, ছাফিয়া আগে থেকেই তার (সাবিতের) নাম জানত কি না, সাবিত তা জিজ্ঞেস করেনি; বরং বর্তমানে জানে কি না, তা জিজ্ঞেস করেছে; যেখানে কিনা সে নিজের নামটি ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। ‘বাংলাদেশের রাজধানীর নাম ঢাকা হলে বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কী?’— ব্যাপারটি অনেকটা এরকম। তাই, ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-বোধক জবাবের আশায় এরূপ তথ্য বা উত্তর উল্লেখ করে দিয়ে প্রশ্ন করলে প্রশ্ননির্দেশক বাক্যাংশটি সাধারণ অতীত কালে লেখা আবশ্যক। যেমন:
১. আপনি কি জানতেন, পাণিনিকে প্রথম বর্ণনামূলক বৈয়াকরণ বলা হয়?
২. আপনি কি জানতেন, চর্যাপদে ‘হাঁউ’ শব্দটি ‘আমি’ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
৩. তুমি কি জানতে, ড. মোহাম্মদ আমীনের স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা পরিসংখ্যান নিয়ে?
প্রসঙ্গত, ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-বোধক উত্তরের আশায় কোনো প্রশ্ন করা হলে, এবং সেই প্রশ্নের শেষে উত্তর জুড়ে দেওয়া না-হলে প্রশ্নটি সাধারণ বর্তমান কালে লিখতে হবে। দৃষ্টান্ত হিসেবে একটু আগে উল্লেখ করা উদাহরণ তিনটি সামান্য পরিবর্তন করে উল্লেখ করা হলো:
ক. আপনি কি জানেন, প্রথম বর্ণনামূলক বৈয়াকরণ কে?
খ.. আপনি কি জানেন, চর্যাপদে ‘হাঁউ’ শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
গ. তুমি কি জানো, ড. মোহাম্মদ আমীনের স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা কোন বিষয় নিয়ে? (২৩শে অক্টোবর. ২০২০)
ক্রমশ
উদ্দোগ্ যখন উদ্জোগ্: এক শব্দের দুই রূপ