এবি ছিদ্দিক-এর শুবাচ পোস্ট সমগ্র যযাতি সমগ্র শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ ব্যাকরণ বিবিধি

 
চুপ বনাম নিশ্চুপ: নতুন শব্দ তৈরির অভিনব প্রক্রিয়া ৫৫
 
শিক্ষক-শিক্ষার্থী পরিচিতিমূলক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বললেন, “যখন শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক পাঠদান করবেন, তখন তোমরা চুপ হয়ে থাকবে।”
প্রধান শিক্ষকের পর ব্যাকরণের শিক্ষক মাহবুব মোর্শেদ খোকনের বক্তব্য দেওয়ার পালা। খোকন স্যার স্পিকারটি মুখের সামনে টেনে নিয়ে বললেন, “যখন শিক্ষক পাঠদান করবেন, তখন তোমরা কেবল চুপ হয়ে থাকলে চলবে না; নিশ্চুপ হয়ে থাকতে হবে।”
খোকন স্যারের বক্তব্য শোনার পর যে-কোনো ভাষানুরাগীর মনে ‘চুপ’ আর ‘নিশ্চুপ’ শব্দদ্বয়ের প্রকৃত অর্থ এবং প্রায়োগিক পার্থক্য নিয়ে প্রশ্নের উদয় হতে পারে— “ ‘চুপ’ মানে কী? ‘নিশ্চুপ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ কী? এই শব্দ দুটির প্রায়োগিক পার্থক্যই-বা কী?”
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান ‘চুপ’ শব্দের জন্যে ‘নীরব’, ‘নিস্তব্ধ’, ‘নিঃশব্দ’ প্রভৃতি অর্থ উল্লেখ করেছে। একই অভিধানে ‘নিশ্চুপ’ শব্দের জন্যে ‘সম্পূর্ণ নিঃশব্দ’ অর্থ উল্লেখ রয়েছে। আভিধানিক অর্থ বিবেচনায় নিলে আলোচ্য শব্দদ্বয়ে মধ্যে কোনো ব্যাবহারিক পার্থক্য নিরূপণ করা যায় না। কেননা, ‘চুপ’ হচ্ছে তা, যাতে কোনোরূপ সাড়াশব্দ থাকে না। অর্থাৎ, সম্পূর্ণ শব্দহীন বা আওয়াজহীন অবস্থাই হচ্ছে ‘চুপ’। যেখানে শব্দ বা আওয়াজ থাকে, সেখানে ‘চুপ’-অবস্থা থাকে না; আদেশ বা অনুরোধের মাধ্যমে ‘চুপ’-এর সৃষ্টি করতে হয়। এই দিকটি বিবেচনায় নিলে যা ‘চুপ’, তাই (তা-ই) ‘নিশ্চুপ’। তাহলে কি শুরুর তৃতীয় প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই?
উত্তর আছে। আর, ওই প্রশ্নের উত্তর নিরূপণের সবচেয়ে সহজ ও শ্রমলাঘব পন্থা হচ্ছে অভিধানে ঢু মেরে শব্দ দুটির ব্যুৎপত্তি দেখে নিয়ে ব্যুৎপত্তিগত অর্থ নির্ণয় করে প্রায়োগিক পার্থক্য নিরূপণ করা। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানের পৃষ্ঠা ওলটালে দেখা যায়, অভিধানটিতে ‘নিশ্চুপ’ শব্দের ব্যুৎপত্তি হিসেবে ‘স. নির্ + বা. চুপ’ উল্লেখ করা হয়েছে। ‘নিশ্চুপ’ শব্দের এই ব্যুৎপত্তি মেনে নিলে দুইটি বড়ো মাপের ত্রুটি সামনে চলে আসে, যেগুলো শব্দটির প্রায়োগিক যথার্থতার প্রসঙ্গে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে দেয়। ত্রুটি দুটি হলো—
প্রথম ত্রুটি: তৎসম শব্দের সঙ্গে অতৎসম শব্দের সন্ধি ব্যাকরণের রীতিবিরুদ্ধ। কেউ এমনটি করে কোনো নতুন শব্দ তৈরি করলে গুরুচণ্ডালী দোষে দুষ্ট হওয়ার অযুহাতে ওই শব্দের গায়ে ‘অসংগত-অশুদ্ধ’ তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়, যেমনটি ‘উপরোক্ত’ শব্দের গায়েও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দিকটি বিবেচনায় নিলে ‘নিশ্চুপ’ শব্দটিও একটি অসংগত বা তথাকথিত অশুদ্ধ শব্দ।
দ্বিতীয় ত্রুটি: কোনো প্রাতিপদিক বা পূর্ণ শব্দের পূর্বে ‘নির্’ (নিঃ) উপসর্গ যুক্ত হলে হয়তো ওই শব্দের না-বোধক অর্থ সৃষ্টি করে, নয়তো বহির্গামিতা নির্দেশ করে, অথবা একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক নতুন অর্থ ধারণ করে; কিন্তু কখনোই মূল শব্দকে বিশিষ্ট করে তোলে না। যেমন—
নির্ + চিহ্ন = নিশ্চিহ্ন— মূল শব্দের না-বোধক অর্থ;
নির্ + গত = নির্গত— বহির্মুখিতা;
নির্ + ধারণ = নির্ধারণ— একেবারেই ভিন্নার্থের শব্দ।
এই অনুসারে ‘নিশ্চুপ’ শব্দের অর্থ হওয়া উচিত ‘নয় চুপ যা’ অথবা একেবারেই ভিন্ন-অপ্রাসঙ্গিক নতুন কোনো অর্থ। কিন্তু ‘নিশ্চুপ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অনুসারে ‘নির্’ উপসর্গ ‘চুপ’ প্রাতিপদিককে বিশেষিত করেছেমাত্র।
মোদ্দা কথায়, বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে ‘নিশ্চুপ’ শব্দটির জন্যে যে ব্যুৎপত্তি উল্লেখ রয়েছে, তা অনুযায়ী ‘নিশ্চুপ’ একটি ভুল (পড়ুন: অসংগত) শব্দ। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ‘নিশ্চুপ’ শব্দটি মোটেও অসংগত বা ভুল নয়। কেননা, শব্দটি মোটেও সন্ধিসাধিত নয়!
‘নিশ্চুপ’ শব্দের শুদ্ধতা এবং ‘চুপ’ আর এই শব্দটির ব্যাবহারিক পার্থক্য নিরূপণের অব্যর্থ পন্থা হচ্ছে ‘নিশ্চুপ’ শব্দের গঠনপ্রক্রিয়া আলোচনা করা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ‘নিশ্চুপ’ শব্দটি কোনো চিরায়ত বাংলা শব্দগঠন প্রক্রিয়ার সাহায্যে গঠিত হয়নি, হয়েছে ইংরেজি শব্দগঠন প্রক্রিয়ার এক বিশেষ পদ্ধতির সাহায্যে, যেটি ‘blending process’ সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত। এই শব্দগঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা জন্মালে ‘চুপ’ আর ‘নিশ্চুপ’ শব্দের ব্যাবহারিক পার্থক্য যে-কেউই একেবারেই নিপুণভাবে নির্ণয় করতে পারবেন বলে আমার ধারণা। আর তাই, আলোচনার পরবর্তী ধাপে ‘blending process’-এর ওপর আলোকপাত করে সামনের দিকে আগানো হয়েছে।
প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী দামুদার ঠাকুর তাঁর ‘Linguistics Simplified Morphology’ গ্রন্থে ‘blending process’-এর একটি সুন্দর ও সহজ সংজ্ঞার্থ উল্লেখ করেছেন। তাঁর সংজ্ঞার্থটি অনেকটা নিম্নরূপ—
*“In linguistics, blending is the process whereby a new word is formed by combining the meaning and also the sound of two words.”
তাঁর সংজ্ঞার্থ থেকে আমরা বলতে পারি— ভাষাবিজ্ঞানের আলোচনায় ‘blending’ হচ্ছে এমন এক শব্দগঠন প্রক্রিয়া, যেখানে দুইটি শব্দের ধ্বনি ও অর্থের মিলনের মাধ্যমে একটি নতুন শব্দ গঠিত হয়।
‘blending’ শব্দগঠন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট নতুন শব্দগুলোকে ‘blends words’ বা ‘portmanteau words’ বলা হয়। সৃষ্ট নতুন শব্দের অর্থে উভয় শব্দের অর্থ সমভাবে প্রাধান্য পায়।
‘portmanteau words’-কে বাংলায় ‘জোড়কলম শব্দ’ বা ‘দো-আঁশলা শব্দ’ বলা হয়। অনেকে এরূপ শব্দকে ‘হাঁসজারু’ শব্দও বলে থাকেন। ইংরেজিতে জোড়কলম শব্দ ব্যবহারের ভূরিভূরি দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন:
smoke + fog = smog;
international + police = interpol;
American + Canadian = Americanadian;
television + broadcast = telecast;
motorists + hotel = motel.
বাংলা ভাষায়ও জোড়কলম শব্দের প্রয়োগ দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ইংরেজির মতো বাংলায়ও দুইভাবে জোড়কলম শব্দ গঠিত হতে পারে। যথা:
১. দুটি শব্দ সম্পূর্ণরূপে যুক্ত হয়, যেখানে প্রথমটির শেষাংশ এবং দ্বিতীয়টির শুরুর অংশ একই হওয়ায় একইরকম বর্ণগুলো একটির ওপর অন্যটি চড়ে বসে (overlap) জোড় বাঁধে। যেমন:
ক. হাঁস + সজারু = হাঁসজারু। এখানে নতুন সৃষ্ট জোড়বদ্ধ শব্দের বানানে ‘হাঁস’-এর শেষ বর্ণ ‘স’ এবং ‘সজারু’-র আদি বর্ণ ‘স’ মিলে কেবল একটি ‘স’-তে পরিণত হয়ে ‘হাঁসজারু’ শব্দটি গঠন করেছে। ‘হাঁসজারু’ বলতে এমন কাল্পনিক প্রাণীকে বোঝানো হয়, যেটির সম্মুখভাগ হাঁসের মতো এবং পেছনের ভাগ সজারুর মতো।
খ. বক + কচ্ছপ = বকচ্ছপ। এখানে জোড়বদ্ধ শব্দের বানানে ‘বক’ শব্দের শেষ বর্ণ ‘ক’ এবং ‘কচ্ছপ’ শব্দের আদি বর্ণ ‘ক’ একে-অন্যের ওপর চড়ে বসে একটি ‘ক’-তে পরিণত হয়ে ‘বকচ্ছপ’ শব্দটি গঠন করেছে। ‘বকচ্ছপ’ বলতে এমন কাল্পনিক প্রাণীকে বোঝানো হয়, যার সামনের অংশ বকের মতো এবং পিঠ ও দেহ কচ্ছপের মতো।
২. একটি শব্দ বা শব্দের শুরুর অংশ এবং অন্য আরেকটি শব্দের শেষের অংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়। যেমন: ধোঁয়া + কুয়াশা = ধোঁয়াশা। এখানে ‘ধোঁয়া’-র ‘ধোঁ’ এবং ‘কুয়াশা’-র ‘য়াশা’ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ ‘ধোঁয়াশা’ গঠিত হয়েছে। ‘ধোঁয়াশা’ বলতে ধোঁয়া আর কুয়াশার মিশ্রণে সৃষ্ট আচ্ছন্ন অবস্থাকে বোঝানো হয়, যা শহরাঞ্চলে শীতের সকালে দেখতে মেলে।
একইরকম,
মিন্নত + বিনতি = মিনতি;
তফাৎ + ডিফারেন্স = তফারেন্স;
ঝট্ + তড়িৎ = ঝটিৎ
বাইক + সাইকেল = বাইকেল প্রভৃতি।
এবার মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসছি।
যেটি বলছিলাম— ‘নিশ্চুপ’ একটি জোড়কলম শব্দ, যেটি দুই নম্বর পদ্ধতিতে গঠিত হয়েছে। মূলত সংস্কৃতের ‘নিশ্চল’ এবং বাংলার ‘চুপ’ দুই নম্বর পদ্ধতিতে জোড় বেঁধে ‘নিশ্চুপ’ শব্দের সৃষ্টি হয়েছে। ‘নিশ্চল’ মানে ‘অ(ন)চল’; অর্থাৎ, ‘স্থির’। ‘চুপ’ মানে ‘নিঃশব্দ’ বা ‘আওয়াজহীন’। যেহেতু নতুন সৃষ্ট জোড়কলম শব্দটিতে পূর্বের দুটি শব্দের অর্থই সমানভাবে প্রকাশ পায়, সেহেতু ‘নিশ্চুপ’ শব্দের গঠনগত অর্থ দাঁড়ায়— স্থির-নিঃশব্দ অবস্থা। অর্থাৎ, যাতে (যা-তে) কোনো শব্দ থাকে না, কোনো নড়াচড়া থাকে না, তাই (তা-ই) হচ্ছে ‘নিশ্চুপ’। এবার ‘চুপ’ আর ‘নিশ্চুপ’ শব্দের কয়েকটি প্রয়োগোদাহরণ দেখাচ্ছি:
আর্জেন্টিনা আর জার্মানির মধ্যে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ চলছে। খেলা প্রায় শেষের দিকে, কিন্তু দু-দলই গোলশূন্য সমতায়। ওই সময়টাতে আর্জেন্টিনার সমর্থক সানজুর মুখে টুঁ শব্দ নেই। সে কখনো শূন্যে হাত-পা ছুড়ছে, কখনো নিজের আঙুলের নখ কামড়াচ্ছে, আবার কখনো-বা কোল বালিশটিতে কিল-ঘুসি মারছে। সানজুর এইরূপ নিঃশব্দ-উত্তেজনাময় অবস্থাই হচ্ছে ‘চুপ’।
খেলার অন্তিম মুহূর্তে গিয়ে মারিও গোটসের (গোৎজে) চোখধাঁধানো গোলে সানজুর আওয়াজের পাশাপাশি নড়াচড়াও বন্ধ হয়ে গেল। সানজু যেন পাথরের কোনো মূর্তি হয়ে গিয়েছে, একেবারেই নিশ্চল-নিস্তব্ধ। প্রিয় দলের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে সানজুর এরূপ ‘নিঃশব্দ-নিশ্চল’ অবস্থাই হচ্ছে ‘নিশ্চুপ’।
অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারেরা যেভাবে নিঃশব্দে কাজ করেন, তা হচ্ছে ‘চুপ’-এর দৃষ্টান্ত। কিন্তু একই কক্ষে রোগীর স্থির-নিস্তব্ধ অবস্থা হচ্ছে ‘নিশ্চুপ’-এর উদাহরণ।
তন্বী রোজ গান গাইতে গাইতে রান্না করে। কিন্তু যখনই বাড়িতে কোনো মেহমান আসে, তখন তার গান গাওয়া বন্ধ হয়ে যায়; বিনা সংগীতে— বিনা শব্দে তার রান্নার কাজ চলে। যেহেতু গান না-থাকলেও তার কাজ থেমে নেই, সেহেতু সে চুপ মেরে রান্না করছে।
বাড়িতে থাকলে তন্বীর মতো তার সহপাঠী টমও সারাক্ষণ গান গেয়ে, গান শুনে, এবং ছোটোর সঙ্গে বিড়ালযুদ্ধ করে কাটায়। কিন্তু যখনই বাসায় কোনো অতিথির আগমন ঘটে, তখন টম নিজের কক্ষের খিল লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে থাকে; তাকে গুঁতিয়েও তার কক্ষ থেকে আর বের করা যায় না। অতিথির আগমনে টমের এরূপ নীরব-নিশ্চল অবস্থাই হচ্ছে ‘নিশ্চুপ’-এর দৃষ্টান্ত।
ধর্মীয় মাহফিলে শ্রোতৃমণ্ডলী নিশ্চুপ হয়ে বক্তার বক্তব্য শোনেন। কেননা, বক্তা যখন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বক্তব্য দেন, তখন শ্রোতৃমণ্ডলী কোনোরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দের সৃষ্টি না-করে নির্দিষ্ট ছাউনির নিচে স্থির হয়ে বসে তাঁর বক্তব্য শোনেন।
একজন সাধু ব্যক্তি নিশ্চুপ হয়ে ধ্যানে বসেন, কিন্তু একজন মুসলমান চুপ হয়ে নামাজ আদায় করেন।
চুপটি মেরে থেকেও যে-কোনো জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যায়, অন্যকে বিরক্ত করা যায়, অন্যের কাজে ব্যাঘাত ঘটানো যায়। কিন্তু নিশ্চুপ থেকে অন্যকে বিরক্ত করা যায় না, অন্যের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যায় না। যেমন: বিদায় অনুষ্ঠানে সকলে নিঃশব্দ-স্থির হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য শুনলে অনুষ্ঠানে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে না, অতিথির বক্তব্যের মাঝে কোনো প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হবে না। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী যদি কোনোরূপ শব্দ না-করেও শরীরের অশোভন অঙ্গভঙ্গি করে, অনুষ্ঠান-ছাউনির নিচে বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা করে, তাহলে অনুষ্ঠানের শ্রী নষ্ট হবে, অতিথির স্বতঃস্ফূর্ত বক্তব্যে বাধা সৃষ্টি করবে। আমাদের আশপাশে এরূপ ব্যক্তির ঘাটতি কখনোই দেখা দেয় না, শ্রেণিকক্ষে তো নয়ই! এতক্ষণে খোকন স্যারের বক্তব্যে ‘নিশ্চুপ’ শব্দটি প্রয়োগের মূল হেতু নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন!
< এবি ছিদ্দিক
* সংজ্ঞার্থটি সামান্য সাজানো হয়েছে।
[ জেনে রাখা ভালো: ১. লুইস কেরলকে ‘portmanteau words’-এর জনক বলা হয়।
২. ভাষাবিজ্ঞানী ড. রামেশ্বর শয়ের মতে ‘নিশ্চুপ’ শব্দটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম ব্যবহার করেছিলেন।
৩. হাঁসজারু, বকচ্ছপ প্রভৃতি শব্দ সুকুমার রায়ের কবিতায় পাওয়া যায়। ] (২৯শে এপ্রিল< ২০২০)
ক্রমশ
ক্রিয়াপদের শেষে ও-কার: প্রমিত-অপ্রমিত কিংবা সংগত-অসংগত

Language
error: Content is protected !!