Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
এবি ছিদ্দিক-এর শুবাচ পোস্ট সমগ্র যযাতি সমগ্র শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ ব্যাকরণ বিবিধি – Page 88 – Dr. Mohammed Amin

এবি ছিদ্দিক-এর শুবাচ পোস্ট সমগ্র যযাতি সমগ্র শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ ব্যাকরণ বিবিধি

ঠিক আর সঠিক ১৩
 
‘ঠিক’ এবং ‘সঠিক’-এর মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। শব্দ দুটির আভিধানিক অর্থও প্রায় একই। অর্থাৎ, ‘শুদ্ধ’, ‘নির্ভুল’, ‘হুবহু’, ‘সম্পূর্ণ’, ‘যথাযথ’, ‘কম বা বেশি নয়’, ‘সত্য’ ইত্যাদি অর্থে শব্দ দুটির যে-কোনো একটি ব্যবহার করা যাবে। তবে ‘সঠিক’-এর তুলনায় ‘ঠিক’ শব্দটির ব্যবহারের পরিসর কিছুটা বিস্তৃত। উল্লেখ-করা অর্থ ছাড়াও ‘পরিপাটি’, ‘প্রস্তুত’ ইত্যাদি অর্থেও ‘ঠিক’ শব্দটি ব্যবহার করা যায়। মূলত, চাইলে যে-কোনো ক্ষেত্রে ‘সঠিক’-এর পরিবর্তে ‘ঠিক’ ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু সকল ‘ঠিক’-এর পরিবর্তে ‘সঠিক’ ব্যবহার করা যাবে না।
প্রয়োগ: ১. “ঠিক/সঠিক(শুদ্ধ/যথাযথ) উত্তরটি লেখ।” বাক্যটি ‘ঠিক’ বা ‘সঠিক’-এর যে-কোনো একটি দিয়ে লেখা যাবে।
২. “বিছানাটি একটু ঠিক(পরিপাটি) করে দাও।” বাক্যটিতে কেবল ‘ঠিক’ শব্দটিই ব্যবহার করা যাবে।
৩. ঠিক/সঠিক(যথাযথ) সময়ে পৌঁছাতে হবে।
৪. ঠিক/সঠিক(সত্য) কথা বল।
মূল বিষয়: ব্যাকরণ অনুযায়ী ‘সঠিক’ শব্দটি সংগত নয়। কারণ, ‘স’ প্রত্যয়টি কেবল বিশেষ্যের পূর্বে যুক্ত হয় এবং যুক্ত হয়ে ঐ বিশেষ্যকে বিশেষণে পরিণত করে। ‘স’ যুক্ত হওয়ার ফলে সৃষ্ট বিশেষণটি দিয়ে মূল বিশেষ্য ‘সহ’, ‘সহিত’, ‘সমেত’, ‘অভিন্ন’ ‘সমান’ ইত্যাদি অর্থ বোঝানো হয়। যেমন: স্ত্রী-সহ > সস্ত্রীক, টীকা-সহ > সটীক, অভিন্ন জাতি > সজাতি ইত্যাদি। কিন্তু ‘ঠিক’ হচ্ছে একটি বিশেষণ পদ। তাই, ‘ঠিক’ শব্দটির সঙ্গে পুনরায় ‘স’ যুক্ত করে আবারও বিশেষণে রূপান্ত করতে চাইলে বাহুল্য হয়ে যাবে। বাহুল্যতার দায় এড়িয়েও ‘ঠিক’ শব্দের সঙ্গে ‘স’ যুক্ত করলে শব্দটির অর্থ হবে, ‘ঠিক-সহ’; যা শব্দটির ব্যাবহারিক অর্থের সঙ্গে মোটেও সংগত নয়। যেমন: “সঠিক(ঠিক-সহ) সময়ের জন্য অপেক্ষা কর।” বাক্যটিতে ‘সঠিক’-এর ব্যবহার আপাত দৃষ্টিতে যথাযথ মনে হলেও ব্যাকরণগতভাবে অসংগত। তাই নিত্যদিনের ব্যবহারে ‘সঠিক’ শব্দটি ব্যবহার না-করাটাই সমীচীন। ‘সঠিক’ শব্দের অশুদ্ধতার বিচারে প্রত্যয়ের আরও একটি দিক উল্লেখ করা যায়। নিয়মটি হচ্ছে— কোনো শব্দের অর্থের পরিবর্তন সাধনের জন্য প্রত্যয় যুক্ত করা হয়। অর্থাৎ, প্রত্যয়যোগে গঠিত শব্দটির অর্থ যে শব্দের সঙ্গে প্রত্যয় যুক্ত হয়, সেই শব্দের অর্থ থেকে কিছুটা হলেও ভিন্ন হবে। তা না-হলে নতুন সৃষ্ট শব্দটিকে ব্যাকরণসম্মনত হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না; যে কারণে ‘স্বাগত’-এর সঙ্গে ‘ম’ প্রত্যয় যুক্ত করে ‘স্বাগতম’ শব্দটি পাওয়া গেলেও শব্দটির জন্য আলাদা কোনো অর্থ থাকে না বলে ‘স্বাগতম’ শব্দটি অশুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। একইভাবে ‘ঠিক’-এর সঙ্গে ‘স’ প্রত্যয় যুক্ত করে ‘সঠিক’ লেখা হলেও শব্দটির(সঠিক) জন্য মূল শব্দের অর্থ থেকে ভিন্ন কোনো অর্থ পাওয়া যায় না। তাই ‘সঠিক’ শব্দটিকে ব্যাকরণসম্মত না-বলাটাই যথাযথ।
পুনশ্চ: ‘সঠিক’ শব্দটি বাংলা ভাষায় এমনভাবে মিশে গিয়েছে যে, এখন শব্দটির অশুদ্ধতা নিয়ে আর খুব একটা মাথা ঘামানো হয় না। তারপরও, সবচেয়ে উত্তম হবে, যদি ‘সঠিক’ ও ‘ঠিক’ শব্দ দুটির মধ্য থেকে কেবল ‘ঠিক’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান ‘সঠিক’ শব্দটি কোনোরূপ শুদ্ধতা-অশুদ্ধতা মন্তব্য ছাড়া স্বতন্ত্র ভুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে। (২৮শে নভেম্বর, ২০১৮)
 
ক্রমশ
সহমত আপা কেন লেখা যাবে না ১২