Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
এবি ছিদ্দিক-এর শুবাচ পোস্ট সমগ্র যযাতি সমগ্র শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ ব্যাকরণ বিবিধি – Page 99 – Dr. Mohammed Amin

এবি ছিদ্দিক-এর শুবাচ পোস্ট সমগ্র যযাতি সমগ্র শুদ্ধ বানান চর্চা শুবাচ ব্যাকরণ বিবিধি

 কোবিদ: শব্দের প্রয়োগ সুবিধা অসুবিধা ২
জনাব Hafiz Uddin শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ) গ্রুপে ‘কোবিদ’ শব্দটি পোস্ট করে শব্দটির বাক্যে প্রয়োগ দেখতে চেয়েছিলেন। পোস্টটিতে জনাব NurulHaq Khan-এর একটি প্রতিমন্তব্য ছিল নিম্নরূপ—
“যেহেতু সমার্থক প্রচলিত শব্দ রয়েই গেছে
সেখানে এমন অপ্রচলিত শব্দ ব্যবহারের
যৌক্তিকতা আছে কি?… ‘মিহির বাবু
কোবিদ’ কথাটি শুনে বাবু অতিশয় ক্ষুব্ধ
যে হবেন না তার কোন নিশ্চয়তা নেই,
কেননা এটি প্রশংসা না গালি হলো
৯৯.৯% মানুষই তা বুঝতে অক্ষম।”
 
সাধারণ দৃষ্টিতে জনাব NurulHaq Khan যথার্থ কথাই বলেছেন। আসলে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয় এমন অনেক শব্দ রয়েছে যেগুলোর অর্থ সর্বসাধারণের না-জানার সম্ভবনাটাই বেশি। উদাহরণস্বরূপ ‘ময়াল’ শব্দটি উল্লেখ করা যায়। যদি কেউ বলে যে, “চিড়িয়াখানায় মস্তবড় ময়ালটি দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম।” তাহলে যাঁদের বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার মোটামুটি ভালো, তাঁদের পক্ষেও ‘ময়াল’ শব্দটির অর্থ অনুধাবন করা কষ্টকর হবে। খুব কম সংখ্যাক লোক রয়েছেন, যাঁরা জানেন যে, ময়াল হচ্ছে অজগরের অপর একটি নাম। তাই যেখানে ‘জ্ঞানী’, ‘পণ্ডিত’, ‘দক্ষ’ ইত্যাদি কিংবা ‘অজগরে’ কাজ হচ্ছে, সেখানে শুধু শুধু ‘কোবিদ’ কিংবা ‘ময়াল’ ব্যবহারের কী দরকার? তবে এটিও সত্য যে, কোনো ভাষায় যত বেশি বৈচিত্রময় শব্দ ব্যবহার করা হয়, সেই ভাষা তত বেশি সমৃদ্ধ হয়, বিশেষ করে ঐ ভাষার সাহিত্য। অর্থাৎ, যে ভাষার শব্দভাণ্ডার যত সমৃদ্ধ, সেই ভাষা তত বেশি বিস্তার লাভ করতে পারে। বলা হয় যে, স্যার উইলিয়াম শেকসপিয়রদের সময়কার ইংরেজি সাহিত্যের তুলনায় আধুনিক ইংরেজি সাহিত্য অত্যন্ত দরিদ্র। বিশ্লেষকগণ এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আধুনিক লেখকগণের বিচিত্র শব্দ চয়নের প্রতি অনীহা। যেখানে শেকসপিয়র-অস্টিনদের এক-একটি সনেট কিংবা ছোটোগল্প পড়ার জন্য শত বার অভিধান খুলতে হয়, সেখানে বর্তমানে বলতে গেলে অভিধান ছাড়াই অনেক বড়ো বড়ো ইংরেজি উপন্যাস পড়া ও অর্থ অনুধান করা যাচ্ছে। বাংলা সাহিত্যের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। যেখানে বঙ্কিমদের লেখা একটি বাক্যের পাঠোদ্ধার করতে পাঠকের ঘাম ছুটে যায়, সেখানে এখন বিনা ক্লেশে বর্তমান লেখকগণের অনেক বড়ো বড়ো উপন্যাসের অর্থ অনুধাবন করা যাচ্ছে। ফলস্বরূপ পাঠকের পরিশ্রমের লাঘব ঘটলেও ভাষা তার গভীরতা হারিয়ে ফেলছে, যা মোটেও কাম্য নয়। তাই মাঝেমধ্যে অপরিচিত শব্দ ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি না হলেও একেবারে এড়িয়া যাওয়া মতোও নয়। কেননা, এই অপরিচিত শব্দগুলোর অর্থ খুঁজতে গিয়ে শব্দগুলোর অর্থ শেখার পাশাপাশি ঐ শব্দগুলোর উৎপত্তি, বিকাশ, ব্যবহার ইত্যাদিও শেখা হয়ে যায়। জানা যায় অনেক অজানা বিষয়। তাছাড়া অপরিচিত শব্দগুলোর অর্থ অভিধান ঘেঁটে বের করার চেষ্টা করলে আরও অনেক বিচিত্র শব্দ চোখে পড়ে, যা ঐ ব্যক্তিকে নতুন শব্দ শেখার প্রতি আরও কৌতূহলী করে তোলে। পরিশেষে যে কথাটি বলতে চাইছি, দিনে অন্তত দু-তিনটি করে বিচিত্র কিংবা অপরিচিত শব্দ শেখার এবং শব্দগুলো ব্যাবহারিক প্রয়োগের চেষ্টা করি। তাতে শব্দভাণ্ডার যেমন গভীর হবে, ভাষাও তেমন শক্তিশালী হবে। সে সঙ্গে অন্যরাও শব্দগুলো শিখতে পারবে। (২৭শে ডিসেম্বর, ২০১৭)
 
ক্রমশ
উপসর্গের নিজস্ব অর্থ আছে