ও এবং ও-কার

ড. মোহাম্মদ আমীন

‘ও-কার’ না বসালে অর্থগত সমস্যা কিংবা উচ্চারণগত জটিলতার আশঙ্কা থাকলে কেবল সে সকল শব্দের শেষে ও-কার বসে। অন্যত্র শব্দের শেষ বর্ণে ও-কার বসানো মানে শব্দের অর্থ ও বাক্যের বক্তব্য প্রকাশে জটিলতা সৃষ্টি। প্রমিত বাংলা বানানে এমনটি করা বিধেয় নয়।

(১) ‘কাল সন্ধ্যায় রহিম একটি কালো ব্যাগ হাতে আল এর উপর দিয়ে আলো হাতে দৌঁড়ে আসছিল’। 

(২) আন্দাজে বানানো বানান দিয়ে বাক্য কর না। 

এখানে প্রথম বাক্যে ‘কাল’ শব্দে গতকাল, ‘কালো’ শব্দে কৃষ্ণ রং, ‘আল’ শব্দে জমির আইল এবং ‘আলো’ দিয়ে রোশনাই বুঝানো হয়েছে। 

দ্বিতীয় বাক্যে ‘বানান’ শব্দ দিয়ে শব্দের বানান এবং ‘বানানো’ শব্দে তৈরী বুঝানো হয়েছে। 

অতএব দেখা যাচ্ছে, ‘ও’ বা ‘ও-কা’র শব্দের অর্থের পরিবর্তন করে। এরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে শব্দের শেষে সাধারণত ‘ও-কার’ ব্যবহার করা বিধেয় হবে না। 

বাংলা বানানে শব্দের শেষে ‘ও-কার’ একটি জটিল সমস্যা। 

এমন কতগুলো শব্দ আছে যেখানে শব্দের শেষ বর্ণে ‘ও-কার’ হবে কি না তা নিয়ে রীতিমত পণ্ডিতগণেরও হাত কাঁপতে দেখা যায়।

ক্রিয়াপদের যে সকল রূপের উচ্চারণ /ও-ধ্বনি/ দিয়ে শেষ হয়, সে সকল শব্দ কীভাবে লিখব? এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, সাধারণত ক্রিয়ার রূপটির চেহারা সাধু ভাষায় কেমন তার ওপর কথ্য রূপের বানান নির্ভর করবে। ক্রিয়াপদের সাধু রূপে শব্দান্তে /ও/ অক্ষর যদি না থাকে, তো চলিত রূপে /ও-কার/ লেখার যুক্তি নেই।

Language
error: Content is protected !!