Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
কবিতা ও ব্যাকরণ – Dr. Mohammed Amin

কবিতা ও ব্যাকরণ

প্রমিতা দাশ লাবণী
শুবাচি জনাব মুহাম্মাদ আরাফাত ইমরান শুবাচের জানালায় একটি যযাতিতে জানতে চেয়েছেন, “কবিতার ছন্দ ও অন্ত্যমিল রক্ষার্থে কি ‘অন্তঃসারশূন্য’ শব্দটাকে ‘শূন্য অন্তঃসার’ লেখা যাবে? তাঁর প্রশ্নটি চমৎকার। অনেকে উত্তর দিয়েছেন। অধিকাংশই বলেছেন- লেখা যাবে। আবার অনেকে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অতিরিক্ত হিসেবে বলেছেন, “কবিতা কোনো ব্যাকরণ মানে না।” যদি তা সত্য হয়, তাহলে কবিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ সাহেবের কবিতা কী দোষ করল?কাব্যগ্রন্থ ও কবির সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, সেভাবে যদি প্রকৃত অর্থে কবিতার সংখ্যা বাড়ত তাহলে বাংলা সাহিত্য এতদিনে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কাব্যসাহিত্যে পরিণত হতো। ‘কবিতায় ব্যাকরণ লাগে না’ তত্ত্বের অজুহাত দিয়ে যে-কেউ যে-কোনোভাবে পরপর দু-চারটি শব্দ বসিয়ে বলে কবিতা হয়ে গেছে। শব্দগুলো যেখানে পদই হয়নি সেখানে কবিতা হয় কীভাবে?

জনাব Hasnaine Isteafaz Pavel শুবাচের মন্তব্য জানালায় লিখেছেন— “গ্যেটে বলেছিলেন, “ভালো লিখতে চাইলে আপনাকে ব্যাকরণ ভুলে যেতে হবে” কবিতা কোনো নিয়মের মধ্যে গ্রামারের মধ্যে গন্ডি না। কবিতা লিখতে চাইলে আপনি ব্যাকরণ ভুলে যান সমস্যা নেই কিন্তু বানান ভুলে গেলে তো সমস্যা। উনার (এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ) কাব্যগ্রন্থে বানানে সমস্যা, ব্যাকরণগত নয়। এপ্রসঙ্গে আমার মন্তব্য ছিল— ‘ব্যাকরণ’ না মানলে বানান ঠিক রাখবেন কীভাবে? এ তো হাস্যকর কথা। যেমন: আপনার ‘গন্ডি’। ব্যাকরণ ভুলে যাওয়া একটি কবিতা লিখলাম:
“গুলো” ।ছাগল। চড়ে ঘাস;।
বারো? পড়ে বৃষ্টি মাস!
গুলো; হাঁসে, ভাসে কুকুর।।
কলসি পায়ে হাঁটে পুকুর”
একদম ব্যাকরণ মানিনি। যতিচিহ্নেও ব্যাকরণ মেনে বসাইনি। আপনার প্রস্তাবমতে- ব্যাকরণ ভুলে গিয়েছি। এখন এ কবিতার জন্য আপনাদের দেশের স্বাধীনতা পদক পাব তো? বানান কিন্তু ভুল হয়নি। হাসনাইন ইমতিয়াজ জবাব দিলেনআমার গণ্ডি শব্দটা টাইপিং ভুল। আপনার কথা অনুযায়ী বানান ভুল লিখলে সমস্যা নেই। যেহেতু বানান ব্যাকরণের অংশ? এই তো? আমার জবাব—  না, মহোদয়। আমি বলছি ব্যাকরণ জানতে হবে। শব্দভান্ডার সমৃদ্ধ হলে ব্যাকরণ অবহেলা না-করেও কবিতা লেখা যায়। তারপরও অনেক বোদ্ধা কবিরও কবিতা লেখার সময় সীমিত ক্ষেত্রে ব্যাকরণ অবহেলা করা অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। সেসব ব্যতিক্রমে যদি প্রয়োজন হয় (সীমিত ক্ষেত্রে এবং অবশ্যই অনিবার্য হলে) ব্যাকরণ এড়ানো যেতে পারে। যেমনটি রবীন্দ্রনাথ করেছেন।ধন্যবাদ।

Shah AL Hadi মন্তব্য জানালয় লিখেছেন, “কবিতা নিয়ে এই যুক্তিপূর্ণ আলোচনাটি উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। আমি কবিতার একজন সাধারণ পাঠক, সমালোচক নই। আজকাল ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা কিছু কবি(!) ছাঁইপাশ কী যেন লিখেন তিনি হয়তো নিজেও হয়তো জানেন না। তার কারণ, শব্দভান্ডা বিচরণ-েবিমুখ হয়ে কতগুলো এলোপাথারি শব্দে কিছু লিখে দাবি করেন কবিতা হয়ে গেলো! আর সেটা ‘হবু রাজা’র সভাসদদের মতো কিছু পাঠক ‘মারহাবা-মারহাবা’ জয়ধ্বনি দিয়ে তোলপাড় করে ছাড়েন।

আমার জানামতে, কবিতা লেখার জন্যই সবচেয়ে বেশি ব্যাকরণ জানতে হয়, অধিক সংখ্যক শব্দ মুখস্থ রাখতে হয়। কারণ, কবিতায় অল্পকথায় অন্ত্যমিল আর ছন্দ সজ্জা করতে হয়। যার ব্যাকরণজ্ঞান যত বেশি এবং শব্দভান্ডার যত সমৃদ্ধ কেবল তিনিই সবচেয়ে বেশি সুচারুভাবে শৈল্পিকব্যঞ্জনায় এমন দুরুহ কাজটি করতে পারেন। এটি অত্যন্ত কঠিন ও জটিল বলে কবিতা লেখাও কঠিন। তারপরও মাঝে মাঝে শব্দকে ছন্দের কারণে এদিক-ওদিক করতে হয়। রবীন্দ্রনাথের মতো কবিকেও ছন্দের কারণে হাতেগোনা কয়েকটি ক্ষেত্রে হলেও কবিতায় শব্দসজ্জাকে এদিক-ওদিক করতে হয়েছে। আর্ষপ্রয়োগ হিসেব তা এখন অভিধানেও স্থান পেয়েছে। এটি করা হয়েছে ‘কবিতার ব্যাকরণ’ না-মানার জন্য নয়, বরং কবির শব্দব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতার জন্য। রবীন্দ্রনাথ নিজেও এটি বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছেন। ‘অন্তঃসারশূন্য’ শব্দকে যিনি ‘শূন্য অন্তঃসার’ লিখতে চান তিনি কী রবীন্দ্রনাথ প্রমুখের মতো ‘আর্ষ’?

‘অন্তঃসারশূন্য’ শব্দের পরিবর্তে যদি একই অর্থে ‘শূন্য অন্তঃসার’ লেখা শুদ্ধ হয় তাহলে- ভালোবাসা ও বাসা ভালো। গোল আলু আর আলু গোল। ভাষা জীবন্ত ও জীবন্ত ভাষা। মরা মাছ ও মাছ মরা। প্রভুভক্ত কুকুর আর কুকুর প্রভুভক্ত।গাছের ফল ও ফলের গাছ প্রভৃতিও একই অর্থের হয়ে যাবে।

শুবাচি জনাব Abu Saifaএর মন্তব্য দিয়ে শেষ করছি। তিনি লিখেছেন অসাধারণ পোস্ট।
‘শব্দে শব্দে বিয়া দিলেই কবিতা হয়না।’
‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।’
প্রাচীনকালে কবিকে অনেক মর্যাদার চোখে দেখা হতো। কবিতার দীনতার জন্য আজ আর কবিদের সে মর্যাদা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র: কবিতা কোনো ব্যাকরণ মানে না, প্রমিতা দাশ লাবনী, শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)।


All Link

বিসিএস প্রিলি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল

ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা বইয়ের তালিকা

বাংলা সাহিত্যবিষয়ক লিংক

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/২

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন /৩

কীভাবে হলো দেশের নাম

ইউরোপ মহাদেশ : ইতিহাস ও নামকরণ লিংক

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/১

দৈনন্দিন বিজ্ঞান লিংক

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/২

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৩

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৪

কীভাবে হলো দেশের নাম

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র/১

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র/২

বাংলাদেশের তারিখ

ব্যাবহারিক বাংলা বানান সমগ্র : পাঞ্জেরী পবিলেকশন্স লি.

শুদ্ধ বানান চর্চা প্রমিত বাংলা বানান বিধি : বানান শেখার বই

কি না  বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি

মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন

ভূ ভূমি ভূগোল ভূতল ভূলোক কিন্তু ত্রিভুবন : ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ

মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন

প্রশাসনিক প্রাশাসনিক  ও সমসাময়িক ও সামসময়িক