Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
করোনাভাইরাস: সৃষ্টির সেরা আশীর্বাদ – Dr. Mohammed Amin

করোনাভাইরাস: সৃষ্টির সেরা আশীর্বাদ

ড. মোহাম্মদ আমীন

অনেকে অনুরোধ করেছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে লিখতে। কয়েকজনের পরিষ্কার অভিযোগ – এমন সময় আপনার সাহিত্যকর্ম করা অনুচিত। আমি কী করব? ম্যাসেঞ্জারে একজন লিখলেন, “সাহিত্যকর্ম বাদ দিয়ে ভাইরাসকর্ম করেন।” সবাই যদি ভাইরাস বিজ্ঞানী হয়ে যায়, তাহলে রান্না করবে কে? চুল বাঁধবে কোনজন? রাস্তাঘাটই বা পরিষ্কার করবে কে? লাশ দাফন করবে কে? ভয়ার্তদের সান্ত্বনাই বা দেবে কে? কে শিশুদের পরিচর্যা করবে? গৃহে আবদ্ধ মানুষের মনে সাহিত্য খোরাকই বা আসবে কোত্থেকে?করোনাভাইরাসের কারণে কেউ কি খাওয়া-দাওয়া আর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে? মুখ আর মলদ্বারে ঝালাই করে দিয়েছে সাময়িকভাবে? দেয়নি। সে কেবল যত্রতত্র অপকর্ম করা, অযথা অপচয় এবং পৃথিবীকে নির্বিচারে ধর্ষণ করা হতে অপরিণামদর্শী মানুষগুলোকে বিরত থাকার শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
পরিস্থিতি যাই হোক না, জীবনপ্রাবহকে স্বাভাবিক রাখার জন্য আতঙ্ক নয়, প্রত্যেকের উচিত স্বীয় জ্ঞান আর অবস্থানে স্থিত থেকে অভিজ্ঞানভুক্ত দায়িত্ব পালন করা। এটিই পরিস্থিতি হতে উত্তরণের কার্যকর উপায়। তবে করোনভাইরাসের কাছে আমার রাবীন্দ্রিক অনুরোধ “আধমরাদের ঘা মেরে ‍তুই বাঁচা।” আমি অবসরে না গেলে আমার ছেলে চাকুরি পাবে কীভাবে? আমরা না মরলে উত্তরপ্রজন্ম কোথায় ঠাঁই নেবে?
আমি জীববিজ্ঞানী নই, চিকিৎসাবিজ্ঞানীও নই। যা জানি না তা নিয়ে কিছু বলা বা লেখা কি আদৌ উচিত হবে? তবু যতটুকু আমার বোধে এসেছে ততটুকু লিখেছি। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের ইতিহাস, নামকরণ, সামাজিক প্রতিক্রিয়া এবং আমাদের ঔচিত্য সম্পর্কে লিখেছি। আমার এসব লেখা জীবাণুসংক্রান্ত নয়, ভাষা, সাহিত্য ও সমাজসম্পর্কিত। তারপরও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবার লিখতে বাধ্য হলাম।
বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানবীয় ধর্মের প্রচারক মহাত্মা মহাবীরকে একদিন তাঁর ভক্তরা, সূর্য ও পৃথিবীর গঠন এবং আবর্তন সম্পর্কে জানানোর অনুরোধ করলেন। মহাবীর বলেছিলেন, “আমি জ্যোতির্বিজ্ঞানী নই। সূর্য ও পৃথিবীর গঠন এবং আবর্তন সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা নেই। আমি ধর্মপ্রচারক, মানে দার্শনিক, আমি কেবল মানুষের মন নিয়ে কাজ করি। এর বাইরে গিয়ে কিছু বললে, আপনারা হয়তো আমার ভক্ত হিসেবে বিশ্বাস করবেন, কিন্তু কোনো একদিন অনাগত বিজ্ঞানের কাছে মিথ্যুকে পরিণত হব। তখন আমার দর্শন অর্থাৎ ধর্মবিষয়ক সত্য কথাগুলোও মিথ্যা আর সংশয়ে পড়ে যাবে।” প্রসঙ্গত, অনেক ধর্মপ্রচারক বিজ্ঞানী সাজতে গিয়ে হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে।
আমি মনে করি, করোনাভাইরাস ঈশ্বরের গজব নয়, প্রকৃতির জন্য মহা-আশীর্বাদ। ঈশ্বরে আরও অনেকবার নানাভাবে এমন করেছেন। অতীতের দিকে তাকালে তার নজির পাওয়ায় যায়। নোহার প্লাবনও ছিল একটা বৈশ্বিক বিপর্যয়। মানুষের নৃশংস ভোগ আর ধার্ষণিক মনোভাবের যথেচ্ছাচারে পৃথিবী ও প্রকৃতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। এমন চলতে থাকলে অচিরে ধ্বংস হয়ে যেত। এ অবস্থায় ঈশ্বর বা প্রকৃতির আশীর্বাদস্বরূপ আগত ও প্রেরিত করোনাভাইরাস আমাদের দেখাচ্ছে আশার আলো। ইতোমধ্যে সে মানবজাতিকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, অনেক অভিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে প্রতিমুহূর্তে। কী না করেছে তারা! মহামারি প্লেগের সুফল মানুষ অনেকদিন ভোগ করেছে। যদিও তা প্রথমে ছিল গজব। উল্লেখ্য, কলো মৃত্যু নামে পরিচিত প্লেগে ১৩৪৬—১৩৫৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ইউরোপ এবং এশিয়া মহাদেশের প্রায় ২০০ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।
করোনাভাইরাসের আক্রমণের পর কয়েক মাসের মধ্যে পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহমণ্ডলের সজীবতা পাঁচশ বছর আগের মতো নির্মল হয়ে গেছে। ইউরোপের আকাশে এখন ষোড়শীর উষ্ণবক্ষের মুগ্ধতা। কার্বন নিঃসরণ কমেছে প্রায় ৮০ ভাগ। বিষাক্ত বেজিং হয়ে গেছে নির্মল বায়ুর শহর। ঢাকায় নিশ্বাস নিতে আর আগের মতো বেগ পেতে হচ্ছে না। আরও কিছুদিন এমন চললে বিশ্ব আরও সজীব হয়ে যাবে। বিশ্বে কোটি কোটি প্রজাতির প্রধান শত্রু হচ্ছে মানুষ।পৃথিবী নিজেও বাঁচতে চায়, পৃথিবী বুঝতে পেরেছে, তাকে বাঁচতে হলে মানুষকে থামাতে হবে।
মানুষের ধর্ষণে ধর্ষণে ছিন্নভিন্ন প্রকৃতি করোনাভাইরাসের মধ্যে তার নবজীবন দেখতে পাচ্ছে। করোনাভাইরাস অবশ্যই সব মানুষকে মারবে না, হয়তো অনেককে মারবে। যারা বেঁচে থাকবে তাদের জন্য পৃথিবীটা হবে কল্পিত স্বর্গের চেয়েও আকর্ষণীয়। মানুষ এখন বুঝতে পারছে- প্রতিদিন অযথা কত অপব্যয় তারা করত, পৃথিবী কত অত্যাচারিত হতো তাদের হাতে। 
করোনাভাইরাস যত প্রবল হয়ে ছড়িয়ে পড়বে ধর্ম, রাষ্ট্র রাজনীতি প্রভৃতির নামে আত্মভোগোন্মাদ মানুষগুলো তত মিয়ম্রাণ হয়ে পড়বে, তারা যত মিয়ম্রাণ হবে ভবিষ্যপৃথিবী তত নবজীবন প্রাপ্ত হবে। হয়তো আমরা অনেকে বাঁচব না। তবে আমাদের লাশের উর্বর জৈবসার থেকে সৃষ্টি হবে নতুন সবুজ— নবপ্রজন্মের কৈশোরিক উচ্ছ্বাসোদ্দাম আলোঝলমল যৌবনবিমুগ্ধ এক মনোহর পৃথিবী।  লোভী, ধর্ষক, উচ্চাভিলাষী, অবিবেচকদের পৃথিবীকে  আধমরা করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারসাম্য আনতে প্রকৃতি সময়ে সময়ে নিজেই ব্যবস্থা নেয়। অতীতেও নিয়েছে। করোনাভাইরাস এমন ব্যবস্থার একটি বলে ধরে নেওয়া যায়।মানুষ, নিজেদের প্রয়োজনে পৃথিবীর স্বাভাবিক প্রবাহকে শেষ করে দিয়েছে ধর্ষকের মতো নিষ্ঠুরতায়। করোনাভাইরাস দিয়ে পৃথিবী প্রতিশোধ নিতে এগিয়ে এসেছে।
করোনা মানে রশ্মি-বিচ্ছুরিত রাজকীয়/ দেবমুকুট, জ্যোতির্বলয়।এই জ্যোতির্বলয় হতে নিঃসৃত আলো বর্তমানের ধ্বংস হয়ে আগামীকে করে দিক নির্মল। পৃথিবী ফিরে পাক নবজীবন। এরজন্য আমি আমার জীবন দিতে মোটেও কুণ্ঠিত নই। করোনাভাইরাস, তুমি তোমার প্রচণ্ড শক্তি দিয়ে জরাগ্রস্ত পৃথিবীকে নতুনভাবে সাজিয়ে দিয়ে তারপর যাও।
—————

All Link

বিসিএস প্রিলি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল

ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা বইয়ের তালিকা

বাংলা সাহিত্যবিষয়ক লিংক

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/২

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন /৩

কীভাবে হলো দেশের নাম

ইউরোপ মহাদেশ : ইতিহাস ও নামকরণ লিংক

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/১

দৈনন্দিন বিজ্ঞান লিংক

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/২

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৩

শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৪

কীভাবে হলো দেশের নাম

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র/১

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র/২

বাংলাদেশের তারিখ

ব্যাবহারিক বাংলা বানান সমগ্র : পাঞ্জেরী পবিলেকশন্স লি.

শুদ্ধ বানান চর্চা প্রমিত বাংলা বানান বিধি : বানান শেখার বই

কি না  বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি

মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন

ভূ ভূমি ভূগোল ভূতল ভূলোক কিন্তু ত্রিভুবন : ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ

মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন

প্রশাসনিক প্রাশাসনিক  ও সমসাময়িক ও সামসময়িক

বিবিধ এবং হযবরল : জ্ঞান কোষ

সেবা কিন্তু পরিষেবা কেন

ভাষা নদীর মতো নয় প্রকৃতির মতো

এককথায় প্রকাশ

শব্দের বানানে অভিধানের ভূমিকা

আফসোস নিয়ে আফসোস

লক্ষ বনাম লক্ষ্য : বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন

ব্যাঘ্র শব্দের অর্থ এবং পাণিনির মৃত্যু

যুক্তবর্ণ সরলীকরণ আন্দোলন : হাস্যকর অবতারণা

প্রায়শ ভুল হয় এমন কিছু শব্দের বানান/২