Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
কিউবা ( Cuba) : ইতিহাস ও নামকরণ – Dr. Mohammed Amin

কিউবা ( Cuba) : ইতিহাস ও নামকরণ

কীভাবে হলো দেশের নাম ( উত্তর আমেরিকা)

ড. মোহাম্মদ আমীন

কিউবা (Cuba)

কিউবা শব্দের অর্থ প্রচুর উর্বর ভূমি বা এখনও আবাদ করা হয়নি এমন ধরণের প্রচুর উর্বর ভূমি বা অনাবাদি উর্বর ভূমি। অনেকে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে, স্থানটিতে প্রচুর উর্বর ভূমি ছিল কিন্তু চাষ করার মতো পর্যপ্ত লোক ছিল না। তাই এর নাম কিউবা। ক্রিস্টোফার কলম্বাস তার নিজ ভাষায়

প্রকাশক: পুথিনিলয়। উত্তর আমেরিক।

কিউবা নামটিকে বলেছেন :ক্যাবো ডি কিউবা (Cabo de Cuba)। আবার অনেকে মনে করেন, ক্রিস্টোফার কলম্বাস ছিলেন পর্তুগিজ। এ বিবেচনায় ইতিহাস ও ভূগোলবিদ জেনোভেস (Genovese argue) মনে করেন,ল্যাটিন আমেরিকার দেশটির কোনো চিহ্নস্মারক নিয়ে নয়, বরং পর্তুগালের বেজা অঞ্চলের নিকটবর্তী কিউবা শহরের নামকরণের স্মরণে কলম্বাস নতুন পাওয়া ভূখণ্ডটির নাম কিউবা রেখেছিলেন। আবার অনেকে মনে করেন, কোয়াবানা (coabana) হতে কিউবা শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ মহাস্থান (great place) বা সমৃদ্ধ স্থান। আবিষ্কারকালে কিউবা আসলে সমৃদ্ধ স্থান ছিল। এখানে সম্পদের বেশ প্রাচুর্য ছিল। তাইনো (Taíno language) ভাষা হতে কিউবা নামের উদ্ভব। ক্রিস্টোফার কলম্বাস ভূখণ্ডটিকে বলেছিলেন, ক্যাবো ডি কিউবা। এর প্রকৃত অর্থ কী তা পরিষ্কার নয়।

১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দের  ২৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দের  ১০ ডিসেম্বর স্পেন হতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের  ২০ মে রিপাবলিকান ঘোষণা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ হতে স্বাধীনতা  ঘোষণা করা হয়। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের  ২৬ জুলাই হতে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের  ১ জানুয়ারি পর্যন্ত কিউবান বিদ্রোহ চলে। বর্তমান সংবিধান গ্রহণ করা হয় ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের  ২৪ ফেব্রুয়ারি।

কিউবা পৃথিবীর ১৭-তম বৃহত্তম দ্বীপ। এর  আয়তন ১,০৯,৮৮৪ বর্গকিলোমিটার বা ৪২,৪২৬ বর্গমাইল। জলীয়ভাগের পরিমাণ খুবই নগন্য। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের  হিসাবমতে মোট জনসংখ্যা ১,১২,৩৮,৩১৭ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০২জন লোক বাস করে। আয়তনের দিক হতে কিউবা পৃথিবীর ১০৪-তম বৃহত্তম দেশ কিন্তু জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় এটি পৃথিবীর  ১০৬-তম জনবহুল দেশ। কিউবার জনগনকে কিউবান বলা হয়। কিউবানদের ৬৪.১% হোয়াইট, ২৬.৬% মুলাতো বা মেস্তিজু এবং ৯.৩% কৃষ্ণ। কিউবা দ্বীপ ছাড়াও কিউবা নামের দেশটি আরও ৪০০ এর অধিক ছোটবড় দ্বীপ ও প্রবালপ্রাচীর আছে। মানজুরি (Manjuari) এমন  প্রাগৈতিহাসিক প্রাচীন মাছ, যা এখন কিউবা ছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। পৃথিবীর

প্রকাশক: পুথিনিলয়। দক্ষিণ আমেরিকা।

ক্ষুদ্রতম হামিংবার্ড ও ক্ষুদ্রতম ব্যাং কিউবাতে পাওয়া যায়। কিউবার মোট আয়তনের ২২% সংরক্ষিত বন। কিউবাতে এমন কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ নেই যা মানুষের জন্য বিষাক্ত কিংবা প্রাণাঘাতী

কিউবার রাজধানী হাভানা।  ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের  হিসাব মতে, কিউবার জিডিপি (পিপিপি) ২১২.০০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার (৫৮-তম) এবং সে হিসাবে মাথাপিছু আয় ১৮,৭৯৬ ইউএস ডলার (৬০-তম)। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের  হিসাবমতে, কিউবার জিডিপি (নমিনাল) ৭৮.৬৯৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার (৬৪-তম) এবং সে হিসাবে মাথাপিছু আয় ৬,৯৮৫  ইউএস ডলার (৮৬-তম)। মাথাপিছু আয় ৬,৯৮৫ ডলার বলা হলেও অধিকাংশ কিউবানদের মাসিক গড় আয় ২০ ডলার। কিউবান মিসাইল সংকটের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় ১৫০টি পারমানবিক অস্ত্র কিউবায় স্থানান্তর করেছিল। কিউবায় শিক্ষিতের হার ৯৯.৮%। পৃথিবীর দুটি দেশে কোকাকোলা বিক্রি অনুমোদিত নয়। একটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়া এবং অন্যটি কিউবা।

কিউবা কমিউনিস্ট দেশ। এখানে মানুষের মৌলিক স্বাধীনতার বিন্দুমাত্র দাম নেই। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্র, উত্তর কোরিয়া ও কিউবার শাসন অনেকটা অভিন্ন। তবু কিউবা প্রাকৃতিক, পরিবেশ ও শাসনগতভাবে কিছুটা ভিন্নতার দাবি রাখে। অনেক সময় কিউবাকে এল চাইমান বা এর কোকোড্রিলো বলা হয়। স্পেনিশ ভাষায় এর অর্থ অ্যাালিগেটর।  কিউবায়  মাঝে মাঝে অ্যালিগেটর বা কুমির সদৃশ্য এ প্রাণীটি দেখা যায়।  কিউবায় এত বেশি ডাক্তার আছেন যে, প্রায় সময় তারা যে সকল দেশে ডাক্তারের ঘাটতি আছে সেখানে ডাক্তার পাঠিয়ে থাকে। সরকারি কড়াকড়ি ও সেন্সরশিপের কারণে খুব কম সংখ্যক লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করার অধিকার রাখেন। আদেশ অমান্যকারীকে ৫ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৫% এর কম। কিউবায় খাবার পরিবেশনের সময় একটার পর একটা দেওয়া হয় না। বরং সবগুলো খাবার একসঙ্গে দেওয়া হয়। কমিউনিস্ট হলেও কিউবা উত্তর কোরিয়া ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধর্মপ্রধান কয়েকটি রাষ্ট্রের চেয়ে অনেক মানবিক। এখানে ভ্রমণকারী ও সাহায্যপ্রার্থীদে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি  গাড়িতে তুলে নিতে হয়। এবং তার করতে গাড়ির চালক বা সরকারি কর্মকর্তা বাধ্য।

মার্কিন ও কিউবান সম্পর্ক এখনও খুব জটিল। যুক্তরাষ্ট্র অনেক বার কিউবা আক্রমণের চেষ্টা করেছে। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্র তা পরিত্যাগ করে এবং

প্রকাশক: পুথিনিলয়। ইউরোপ

স্পেনের মাধমে কিউবাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করে। তবে কিউবা তা প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের  পূর্ব পর্যন্ত কিউবায় ইউএস ডলার ব্যবহার ও তা দখলে রাখার অনুমতি ছিল না। তবে কিউবার চুরুট এত জনপ্রিয় যে, আমেরিকা তা প্রত্যাখান করতে পারে না। কিউবার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় স্বাক্ষর করার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ১২০০ কিউবান চুরুট এনেছিলেন। সিগার বা চুরুটের জন্য কিউবা সারা বিশ্বে খ্যাত।

ইক্ষু হতে চিনি প্রস্তুত কিউবার প্রধান কৃষি নির্ভর শিল্প। তাই ইক্ষু কিউবার প্রধান অর্থকর ফসল। কারণ চিনির প্রধান কাঁচামাল ইক্ষু। ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হাইতির দাস বিদ্রোহ কিউবার আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। সে বছর ৩ লাখের অধিক অভিবাসী দাস,  হাইতি হতে পালিয়ে যায়। যাদের অধিকাংশ কিউবাতে আশ্রয় নেয়। ফ্রেঞ্চ এ দাসদের ইক্ষু উৎপাদনের জন্য এনেছিলেন। তারা ইক্ষু উৎপাদনে দক্ষ হয়ে উঠেছিল। বিপুল সংখ্যক দক্ষ ইক্ষু উৎপাদনকারী কিউবায় এসে সেখানে ইক্ষু ও ইক্ষু হতে চিনি তৈরির কাজ শুরু করে। অল্প সময়ে কিউবা চিনি উৎপাদনে খ্যাতি অর্জন করে। নিকেল কিউবার অত্যন্ত মূল্যবান খনিজ সম্পদ। পৃথিবীর মোট নিকেলের ৪% কিউবায় উৎপাদিত হয়। ২০১১ খ্রিস্টাব্দে কিউবা রপ্তানি আয়ের ২১% আয় করে নিকেল হতে। কিউব প্রতিদিন ১ লক্ষ ব্যারের তেল ভেনেজুয়েলা হতে গ্রহণ করে।

সিআইএ একটি পরিকল্পনা করেছিলেন। তারা কৌশলে ফিডেল ক্র্যাস্টোর দাড়িতে এমন একটি রাসায়নিক লাগাবে, যাতে তার দাড়ি পড়ে যায়। তা পারেনি। ফিডেল ক্যাস্ট্রো সৌখিনতার জন্য দাড়ি রাখতেন না। শেভ করাকে তিনি অযথা সময়ের অপচয় মনে করতেন। এ প্রসঙ্গে একবার বলেছিলেন, শেভ না করে বছরে দশ কর্মঘণ্টা  অপচয় হতে রক্ষা করি। আর্নেস্ট হেমিঙওয়ে কিউবাতে বসবাসকালীন ফর হোম দা বেল টলস (For Whom the Bell Tolls) ও দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি (the Old Man and the Sea) গ্রন্থ দুটি লিখেছিলেন।


উত্তর আমেরিকা (North America) : ইতিহাস ও নামকরণ

এন্টিগুয়া এন্ড বারবুডা (Antigua and Barbuda) : ইতিহাস ও নামকরণ

 দি বাহামাস (Bahamas) : ইতিহাস ও নামকরণ

বার্বাডোস (Barbados ) : ইতিহাস ও নামকরণ

বেলিজ (Belize) : ইতিহাস ও নামকরণ

কানাডা (Canada) : ইতিহাস ও নামকরণ

কোস্টারিকা (Costa Rica) : ইতিহাস ও নামকরণ

সূত্র:  কীভাবে হলো দেশের নাম, ড. মোহাম্মদ আমীন, পুথিনিলয়, বাংলাবাজার, ঢাকা।

All Link

সাধারণ জ্ঞান সমগ্র

Knowledge Link

বাংলাদেশ ও বাংলাদেশবিষয়ক সকল গুরুত্বপূর্ণ সাধারণজ্ঞান লিংক

আফ্রিকা মহাদেশ : ইতিহাস ও নামকরণ লিংক

ইউরোপ মহাদেশ : ইতিহাস ও নামকরণ লিংক

এশিয়া মহাদেশ : ইতিহাস ও নামকরণ লিংক