জেনে রাখা ভালো : হসন্ত-বিধি
সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক,অগ্রণী ব্যাংক
ড. মোহাম্মদ আমীন
সোনালি ব্যাংক নয়, সোনালী ব্যাংক; কিন্তু সোনালি। তেমনি, রূপালী ব্যাংক। কারণ: সোনালী ব্যাংক একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামের কোনো অভিধার্থ নেই। যদি অভিধার্থ থাকত তাহলে সোনালী ব্যাংকের ইংরেজি অনুবাদ হতো— Golden Bank। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের ইংরেজিও ‘সোনালী ব্যাংক’। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামের ভাষান্তর হয় না এবং যে-কোনো ভাষায় অপরিবর্তিত থাকে সেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম অবিকল রাখতে হয়। এটাই শুদ্ধ, এসব নামের অভিধার্থ খুঁজতে যাওয়াই হচ্ছে ভুল ও হাস্যকর।তারপরও অনেকে বলেন— ‘সোনালী ব্যাংক’ নামটা ভুল। ভুল হবে কেন? সোনালী ব্যাংক বানান ভুল হলে ‘শামসুর রাহমান’ বানানও ভুল। তেমনি, সুপ্রিম কোর্ট নয়, সুপ্রিম কোর্ট, কিন্তু সুপ্রিম। কেননা, কোর্ট কর্তৃপক্ষ ‘সুপ্রিম কোর্ট’ লিখে থাকে। একই কথা অগ্রণী ব্যাংক-এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলার নিয়মেও বলা হয়েছে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেভাবে লিখে সেটিই শুদ্ধ। আমার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান বন্ধু সন্তোষ বড়ুয়ার ভাষায়, আমেরিকানদের যদি জিজ্ঞাসা করো— তোমার নামের অর্থ কী? সে বলবে কোনো অর্থ নেই, আমার নাম কেবল আমার এবং কেবল আমাকেই চিহ্নিত করে এবং কেবল আমারই পরিচয় বহন করে।
হসন্তবিধি
বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান-এর ২.১৫. হস্- চিহ্ন অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: হস্ চিহ্ন যথাসম্ভব বর্জন করা হবে ৷ যেমন: কাত, মদ, চট, ফটফট, কলকল, ঝরঝর, তছনছ, জজ, টন, হুক, চেক, ডিশ, করলেন, বললেন, শখ, টাক, টক ৷ তবে যদি ভুল উচ্চারণের আশঙ্কা থাকে তাহলে হস্ -চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ যেমন: উহ্, যাহ্ ৷ যদি অর্থের বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে তাহলেও তুচ্ছ অনুজ্ঞায় হস্-চিহ্ন ব্যবহার করা যেতে পারে ৷ যেমন: কর্, ধর্, মর্, বল্ ৷
কিছু কিছু শব্দ আছে যেগুলোর বানানে আগে হসন্ত বাধ্যতামূলক ছিল। এখন সেসব শব্দের বানানে কি হসন্ত থাকবে? দেখা যাক— বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম অনুযায়ী কী হয়।

বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন১
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন২
কি না বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি
বাংলা ভাষার মজা,ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পাবিলিকেশন্স লি.।