গোসল ও স্নান
বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত আরবি ‘গোসল’ শব্দের অর্থ জল দিয়ে শরীর প্রক্ষালন, অবগাহন, স্নান ইত্যাদি। অন্যদিকে, বাক্যে বিশেষ্য হিসেব ব্যবহৃত সংস্কৃত (√স্ন+অন) স্নান শব্দের অর্থ— জলে অবগাহন, শরীর ধৌতকরণ, গোসল। অভিধার্থ পর্যালোচনায়

দেখা যায়— শব্দ দুটি সমার্থক। তবে ব্যবহারকারীর ধর্মীয় বিশ্বাস শব্দদুটোর প্রয়োগকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। সাধারণত মুসলিমরা ‘গোসল’এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা ‘স্নান’ শব্দটি অধিক ব্যবহার করে।
বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত সংস্কৃত ‘শ্রদ্ধা [শ্রথ্+√ধা+অ+আ(টাপ্)]’ শব্দের অর্থ— কোনো ব্যক্তির প্রতি) বিশেষ সম্মান, ভক্তি, সমীহ। গভীর আস্থা, নির্ভরতা। নিষ্ঠা। অন্যদিকে, বাক্যে বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত সংস্কৃত ‘মর্যাদা [মরি+আ+√দা+অ+আ(টাপ্)]’ শব্দের অর্থ— সম্মান (মর্যাদারক্ষা)। গৌরব (বংশমর্যাদা)। সম্ভ্রমপূর্ণ। ন্যায়সংগত নীতি (মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার)। দক্ষিণা। অর্থ

পর্যালোচনায় দেখা যায়, শব্দ দুটো সর্বাংশে সমার্থক নয়, তবে পরস্পর নির্ভরশীল। শ্রদ্ধা ও মর্যাদা উভয় শব্দের একটি সাধারণ অর্থ সম্মান। এ হিসেবে কোথাও কোথাও ‘শ্রদ্ধা’ ও ‘মর্যাদা’ সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও তা বিরল। শব্দদুটো ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাক্যের গঠন অভিন্ন রাখা যায় না। যেমন: “আমি তাকে শ্রদ্ধা করি” বলা গেলেও “আমি তাকে মর্যাদা করি” বলা শ্রুতিমধুর মনে হয় না। সেক্ষেত্রে বলতে হয়— তার প্রতি আমার মর্যাদা আছে। যার মর্যাদা আছে বা যিনি মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছেন তিনি শ্রদ্ধা অর্জনের যোগ্য। যেমন: মর্যাদাবান ব্যক্তি শ্রদ্ধার্হ। শ্রদ্ধার ফল হলো— মর্যাদা। তাই ‘শ্রদ্ধা’ ও ‘মর্যাদা’ সমার্থক মনে হলেও বাক্যে সর্বত্র একই অর্থ প্রকাশে ব্যবহার করা মঞ্জুপ্রকাশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয় না।