চর্যাপদের আধুনিক গবেষক
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় চর্যাপদের ভাষা পর্যালোচনা করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদের ভাষা বাংলা। বিজয়চন্দ্র মজুমদার ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম চর্যাপদের ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন। ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন এবং ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তা প্রকাশ করে চর্যার জট খোলেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় এর ঠিক পাঠ নির্ণয় করে চর্যাপদকে সহজ করে তোলেন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাগীতির অর্ন্তনিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর চর্যাপদ সম্পর্কিত বিখ্যাত গবেষণা গ্রন্থ ‘Buddhist Mystic Song’ চর্যাপদের ভাষা ও ভাবার্থ অনুধাবনে একটি সহায়ক গ্রন্থ।
চর্যাপদের প্রথম অনুবাদ ও অনুবাদের প্রকাশক
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ড. প্রবোধ চন্দ্র বাগচী চর্যাগীতির তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন। এটাই চর্যাপদের প্রথম অনুবাদ।
চর্যাপদের রচনাকাল ও চর্যাপদের ঐতিহাসিক মুল্য
বাংলার পাল বংশের বৌদ্ধ রাজাদের আমলে চর্যাপদ রচিত হয়েছে। চর্যাপদের ভাষা বেশ দুর্বোধ্য। তবু বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন হিসেবে চর্যাপদের ঐতিহাসিক মূল্য যেমন অপরিসীম তেমন ব্যাপক।
সান্ধ্যভাষা
চর্যাপদের ভাষাকে কেউ কেউ সান্ধ্যভাষা নামে অভিহিত করে থাকেন। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে চর্যপদ, “আলো আঁধারি ভাষা। কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না”। এজন্য চর্যাপদের ভাষাকে অনেকে ‘সন্ধ্যা ভাষা’ বা ‘সান্ধ্যভাষা’ বলে অভিহিত করে থাকেন।
চর্যাপদের অব্যবহিত পরের রচনা
প্রাচীন যুগে চর্যাপদের অব্যবহিত পর রচিত গ্রন্থাবলীর মধ্যে সন্ধ্যাকর নন্দীর ‘রামচরিত’ এবং গৌড় অভিনন্দনের ‘কথাসার’ উল্লেখযোগ্য।