Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
চিকামারা – Dr. Mohammed Amin

চিকামারা

ড. মোহাম্মদ আমীন
সংযোগ: https://draminbd.com/চিকামারা/
এককালের ‘দেওয়াল লিখন‘ কথাটি বর্তমানে চিকা মারা নামে পরিচিত। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলন-সহ বিভিন্ন কারণে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

করে। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাছের ডাল ভেঙে আগা থেঁতলিয়ে ব্রাশের ন্যায় তুলি বানাত। নিচে দাঁড়িয়ে দেওয়ালের আগা দিয়েও যাতে স্লোগান লেখা যায় সেজন্য তুলিগুলো করা হতো লাঠির মতো লম্বা। সে সব ব্রাশ বা তুলিতে আলকাতরা লাগিয়ে দেওয়ালে বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের পক্ষে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হতো। গ্রেফতারের ভয়ে সাধারণত রাতের বেলা টর্চ জ্বালিয়ে দেওয়ালে এসব স্লোগান লেখা হতো।

১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের কোনো একদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জিগা গাছের ডাল দিয়ে তৈরি লাঠি-আকৃতির লম্বা ব্রাশ দিয়ে দেওয়ালে স্লোগান লিখছিল। এ সময় একদল টহল পুলিশকে এগিয়ে আসতে দেখে শিক্ষার্থীরা ঝোপের আড়ালে আলকাতরার টিন লুকিয়ে লাঠির মতো লম্বা তুলি দিয়ে ঝোপঝাড়ে এলোপাথারি আঘাত করতে শুরু করে। টহল পুলিশ এগিয়ে এসে বললেন, এত রাতে তোমরা বাইরে কী করছ? শিক্ষার্থীরা বললেন, হলে চিকার জ্বালায় থাকতে পারছি না। এ ঝোপ দিয়ে হলে চিকা ঢুকে। এজন্য আমরা লাঠি দিয়ে চিকা মারছি।
শিক্ষার্থীদের কথায় পুলিশের সন্তুষ্ট না-হয়ে কোনো উপায় ছিল না। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছিল একতলা এবং অধিকাংশ টিনসেডে ও স্যাঁতসেতে মেঝে। পাশে ছিল ঝোপঝাড়, সেখান থেকে চিকা হলে হানা দিত। শুধু হলে নয়, পুলিশের ব্যারাকেও চিকার উপদ্রব ছিল। পুলিশ দল সন্তুষ্টচিত্তে চলে যায়। শিক্ষার্থীরা এবার দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল চিকা মারার ভানে ঝোপঝাড়ে আঘাত করতে থাকে আর এক দল দেওয়াল লিখন শুরু করে।
 
এরপর থেকে ‘দেওয়াল লিখন’ লিখতে গেলে শিক্ষার্থীরা বলত চিকা মারতে যাচ্ছে। এভাবে ‘দেওয়াল লিখন’ বাগ্ভঙ্গিটি ‘চিকা মারা’য় পরিণত হয়। এখন শুধু দেওয়ালে নয়, রাস্তাতেও চিকা মারা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *