চিকুনগুনিয়া শব্দের অর্থ
ড. মোহাম্মদ আমীন
চিকুনগুনিয়া (Chikungunya) একটি জ্বরের নাম। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে তানজানিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ম্যাকেন্ডে মালভূমি এবং মোজাম্বিক ও টাঙ্গানিকার সীমান্ত এলাকায় এই জ্বর মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এর তিন বছর পর ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ম্যারিয়ন রবিনসন (Marion Robinson) ও ডব্লিউ.এইচ.আর লামসডেন (W.H.R. Lumsden) প্রথম এ জ্বরের প্রকৃত কারণ ও ভাইরাস আবিষ্কার করেন। গবেষণায় জানা যায়, ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। molecular genetics বিশ্লেষণে জানা যায়, ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এই ভাইরাসের প্রথম উদ্ভব হয়।
‘চিকুনগুনিয়া’ শব্দটি ম্যাকোন্ডো নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষা কিমাকোনডে (Kimakonde) নামক ভাষার একটি শব্দ। যা ওই ভাষার মূল ক্রিয়া কুনগুনিয়ালা (kungunyala) হতে সৃষ্ট। এটি সোয়াহিলি ভাষার একটি উপভাষা। মোজাম্বিক ও টাঙ্গানিকাতেও শব্দটির বহুল প্রচলন রয়েছে। বাংলায় চিকুনগুনিয়া শব্দের অর্থ ‘বাঁকা হয়ে যাওয়া’ বা ‘গিটের ব্যথায় কুঁকড়ে যাওয়া’। এই জ্বর হলে হাড়ের জোড়গুলো ফুলে বাঁকা হয়ে যায়। তাই ম্যারিয়ন রবিনসন জ্বরটির এমন নাম দিয়েছেন। ইংরেজিতে ‘চিকুনগুনিয়া’ শব্দের অর্থ “to become contorted”, and describes the stooped appearance of sufferers with joint pain (arthralgia).
ডেঙ্গুর বাহক এডিস আলবক্কটাস (Aedes albopictus) ও এডিস ইজিপ্টি (Adese aegypti) মশা চিকনগুনিয়া জ্বরের ভাইরাস CHIKV -এর বাহক। এ রোগ হলে প্রতিষেধক হিসেবে প্যারাসিট্যামলই যথেষ্ট। তবে দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রচুর পানি খাওয়া এবং বিশ্রামে থাকা আবশ্যক। চিকুনগুনিয়া জ্বরের কারণে মৃত্যুর ঘটনা অতি বিরল।