জাতীয় পতাকা ব্যবহারের নিয়মাবলি

জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০)- এ জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিধি-বিধান অনুযায়ী  একনজরে এই নিয়মাবলি প্রদান করা হলো :

(১)  সবসময় জাতীয় পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে।

(২) জাতীয় পতাকা দ্বারা মোটরযান, রেলগাড়ি অথবা নৌযানের খোল, সম্মুখভাগ অথবা পেছনের অংশ কোনো অবস্থাতেই আচ্ছাদিত করা যাবে না।

(৩) যেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের পতাকা অথবা রঙিন পতাকার সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পতাকাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষিত রাখতে হবে।

(৪) যেক্ষেত্রে কেবল দুটি পতাকা অথবা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ ভবনের ডানদিকে উত্তোলন করতে হবে।

(৫) যেক্ষেত্রে পতাকার সংখ্যা দুয়ের অধিক হয়, সেক্ষেত্রে অযুগ্ম-সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ মাঝখানে এবং যুগ্ম-সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ মধ্যভাগের ডানদিকে উত্তোলন করা হবে।

(৬) যেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ অন্য পতাকার সঙ্গে আড়াআড়িভাবে কোনো দণ্ডে দেওয়ালের বিপরীতে উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের পতাকা অন্য দেশের জাতীয় পতাকার ডানদিকে আড়াআড়িভাবে থাকবে (আড়াআড়িভাবে যুক্ত পতাকা দুটির দিকে মুখ করে দণ্ডায়মান ব্যক্তির বামদিকে) এবং জাতীয় পতাকা দণ্ডটি অন্য পতাকা দণ্ডের সম্মুখভাগে স্থাপিত হবে।

(৭) ‘বাংলাদেশের পতাকা’র উপরে অন্য কোনো পতাকা বা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা যাবে না।

(৮) ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ শোভাযাত্রার মধ্যভাগে বহন করা হবে অথবা সৈন্য দলের অগ্রগমন পথে শোভাযাত্রার ডানদিকে বহন করা হবে।

(৯) মর্যাদার প্রতীক সংবলিত ঢালে অযুগ্ম সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ মধ্যভাগে সর্বোচ্চ কেন্দ্রে থাকবে এবং যুগ্ম-সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ঢালের ডানদিকে শীর্ষে (ঢালের দিকে মুখ করে দণ্ডায়মান ব্যক্তির বামদিকে) স্থাপন করা হবে।

(১০) যেক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা একত্রে উত্তোলন করা হয়, সেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ প্রথমে উত্তোলন করতে হবে এবং নামানোর সময় সবার শেষে নামাতে হবে।

১১) যেক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক দেশের ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদর্শিত হয়, সেক্ষেত্রে প্রতিটি পতাকা পৃথক পৃথক দণ্ডে উত্তোলন করা হবে এবং পতাকাসমূহ প্রায় সমান আয়তনের হতে হবে।

(১২) যেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ অর্ধনমিত থাকে, সেক্ষেত্রে উত্তোলনকালে  প্রথমে সর্বোচ্চ চূড়া পর্যন্ত উত্তোলন করা হবে; অতঃপর নামিয়ে অর্ধনমিত অবস্থায় আনা হবে। অর্ধনমিত করার দিবসে জাতীয় পতাকা নামানোর সময় পুনরায় উপরিভাগ পর্যন্ত উত্তোলন করার পর নামাতে হবে।

(১৩) যেক্ষেত্রে দণ্ডের উপর ব্যতীত অন্যভাবে কোনো দেওয়ালের উপর ‘ জাতীয় পতাকা’ প্রদর্শিত হয়, সেক্ষেত্রে এটি দেওয়ালের সমতলে প্রদর্শিত হবে। কোনো সম্মেলন কেন্দ্রে বা সভায় ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদর্শন করতে হলে তা বক্তার পেছনে উপরের দিকে প্রদর্শিত হবে। যেক্ষেত্রে রাস্তার মধ্যখানে পতাকা প্রদর্শিত হয়, সেক্ষেত্রে এটি খাড়াভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

(১৪) কবরস্থানে ‘জাতীয় পতাকা’ নিচু করা যাবে না বা ভূমি স্পর্শ করানো যাবে না।

(১৫) ‘ জাতীয় পতাকা’ কোনো ব্যক্তি বা জড় বস্তুর দিকে নিম্নমুখী করা যাবে না।

(১৬) জাতীয় পতাকাকে কখনো এমনভাবে স্থাপন করা যাবে না, যাতে  এটি নিচের কোনো বস্তু, যথা- মেঝে, পানি বা পণ্যদ্রব্য স্পর্শ করে।

(১৭) ‘ জাতীয় পতাকা’ কখনও আনুভূমিকভাবে বা সমতলে বহন করা যাবে না। এটি সবসময়  ঊর্ধ্বে মুক্তভাবে থাকবে।

(১৮) ‘বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা’ কোনো কিছুর আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, তবে শর্ত থাকে যে, কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি যাঁকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদা বা পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হয়, তাঁর শবযান জাতীয় পতাকা দিয়ে আচ্ছাদনের অনুমোদন প্রদান করা যেতে পারে।

(১৯) ‘পতাকা’ এমনভাবে উত্তোলন, প্রদর্শন, ব্যবহার বা সংরক্ষণ করা যাবে না, যাতে এটি সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে, ময়লা বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

(২০) কোনো কিছু গ্রহণ, ধারণ, বহন বা বিলি করিবার কাজে ‘ জাতীয় পতাকা’ ব্যবহার করা যাবে না।

(২১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার আরোপিত কোনো শর্তাবলি (যদি থাকে)এবং লিখিত অনুমোদন ব্যতীত, কোনো ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য, সম্বোধন, পেশা বা অন্য যে-কোনো উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের ‘জাতীয় পতাকা’ কোনো ট্রেড মার্ক, ডিজাইন, শিরোনাম অথবা কোনো প্যাটেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

(২২) যেক্ষেত্রে ‘জাতীয় পতাকা’র অবস্থা এমন হয় যে, এটি আর ব্যবহার করা যায় না, সেক্ষেত্রে এটি মর্যাদার সঙ্গে সমাধিস্থ করে নিষ্পত্তি করতে হবে।

(২৩) ‘ জাতীয় পতাকা’ দ্রুততার সঙ্গে উত্তোলন এবং সম্মানের সঙ্গে নামাতে হবে।

(২৪) ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন ও নামানোর সময় এবং প্যারেড পরিক্রমণ ও পরিদর্শনের সময় উপস্থিত সবাই ‘পতাকা’র দিকে মুখ তরে সোজা হয়ে দাঁড়াবেন।

(২৫) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ব্যতীত, ‘জাতীয় পতাকা’ অর্ধনমিত করা যাবে না, তবে শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি মিশনের প্রধান(যে দেশের নিকট তিনি আস্থাভাজন) ইচ্ছা করলে যে সকল দিবসে ওই দেশের জাতীয় পতাকা সরকারিভাবে  অর্ধনমিত  রাখা হয় সে সকল দিবসে ‘ জাতীয় পতাকা’ অর্ধনমিত রাখতে পারবেন

জাতীয় পতাকা উত্তোলনের  সাধারণ নির্দেশনাবলি

 জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত

সংবিধান ও জাতীয় পতাকা

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা

বাংলাদেশে বিদেশি জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিধি

জাতীয় পতাকার আয়তন এবং উত্তোলন বিধি

বিশেষ দিবসে পতাকা উত্তোলন বিধি

জাতীয় পতাকা ব্যবহার সাধারণ নির্দেশাবলি

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ বিধি

Language
error: Content is protected !!