ড. মোহাম্মদ আমীন
শুবাচি আবদুল ওয়াদুদ ভুঁইয়া শুবাচের জনালায় একটি যযাতি দিয়েছেন। যযাতিটির শিরোনাম “বিমানবন্দর থেকে কি (কী) করে ট্রেন ছাড়ে”। যযাতির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় তিনি একটা ছবিও দিয়েছেন। ছবিতে লেখা ‘ঢাকা বিমান বন্দর’।
অনেকে তাঁর এ যযাতির প্রশংসা করেছেন। কয়েকজন শুবাচি কটাক্ষও করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন— এটি খুব সাধারণ প্রশ্ন।
আবার কেউ লিখেছেন— এমন যযাতি কীভাবে অনুমোদিত হয়। অনেকে লিখেছেন — “পাশেই শাহজালালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। সে হিসেবে রেলওয়ে স্টেশনের নাম রাখা হয়েছে।” কিন্তু তা যদি সত্য হয়, তাহলে ওই রেলওয়ে স্টেশনটির নাম ‘শাহজালালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ঢাকা’ হওয়া উচিত ছিল। যেমন লেখা হয়, বিমান বন্দর থানা, ঢাকা।

একজন ওয়াদুদ ভুঁইয়ার যযাতি প্রসঙ্গে লিখেছেন, “হাসার কি হলো জায়গার নাম বিমান বন্দর”। আমার অভিমত, তাহলে এই রেলওয়ে স্টেশনের নাম হওয়া উচিত ছিল ‘বিমান বন্দর’, ‘ঢাকা বিমান বন্দর’ হবে কেন? স্থানটির নাম তো ঢাকা বিমান বন্দর’ নয়; বিমান বন্দর। নামটি যৌক্তিক এবং অর্থবহ হতো যদি লেখা হতো -‘বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন’।
নামে কোনো ভুল নেই, কিন্তু নাম রাখার সময়, বিশেষ করে স্থাননামের ক্ষেত্রে ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং প্রাসঙ্গিক নানা কারণসূত্র বিবেচনা করা হয়। সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে স্থাননাম এমনভাবে রাখা হয়, যাতে তার পরিচিতি এবং কার্যক্রম বা ভূমিকা নামের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই স্বর্ণালংকারের দোকানের নাম ‘লৌহভবন’ রাখা হয় না। কিন্তু ‘ঢাকা বিমান বন্দর’ নামটির মধ্যে তার কার্যক্রম এবং উদ্দেশ্যের কিছুই পাওয়া যায় না।
ঢাকায় বিমান বন্দর স্থাপন করার পর স্থানটির নাম হয়ে যায় বিমান বন্দর। স্থাপিত থানার নামও হয়ে যায় ‘বিমান বন্দর থানা’। যখন এ নামটি রাখা হয়, তখন ওই উড়োজাহাজ বন্দরটির নাম ছিল ‘ঢাকা বিমান বন্দর’। পরে নাম হয় ‘জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর’। এরপর নাম রাখা হয়, ‘শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর’। বিমান বন্দরের নাম পরিবর্তন করা হলেও স্থানটির নাম রয়ে গেছে ‘বিমান বন্দর’। তাই লেখা হয় ‘বিমান বন্দর থানা’, ঢাকা বিমান বন্দর থানা নয়। সে হিসেবে রেলওয়ে স্টেশনটির নাম রাখা উচিত ছিল, বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশন। কিন্তু বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয় বিষয়টি খেয়ালই করেনি- ফলে নামটি দেখলে নামকরণের সার্থকতায় বস্তুত সার্থকতার কিছুই পাওয়া যায় না।