Jêrry ÑÃñ
১. সাধারণভাবে র ষ ক্ষ–এই তিন অক্ষরের পর মূর্ধন্য-ণ ব্যবহৃত হয়।
র অর্থ: (১) র, (২) ঋ, (৩) রেফ্, (৪) র-ফলা, (৫) ঋ-কার।
উদাহরণ__
র: (১) কারণ, ধারণ (২) ঋণ; (৩) কর্ণ, পর্ণ, চূর্ণ; (৪) ঘ্রাণ, প্রণয়; (৫) ঘ্রণা, তৃণ, মৃণাল।
ষ: ষণ্ড, ঘর্ষণ, ভীষণ, দূষণ ইত্যাদি।
ক্ষ: ক্ষণ, ক্ষণিক, ক্ষুণ্ণ, ক্ষৌণা ইত্যাদি।
২.’র’ (=র,ঋ,রেফ্,ঋ-কার,র-ফলা)
অথবা ‘ক্ষ’-এর পরে যদি ক-বর্গের পাঁচটি (ক খ গ ঘ ঙ) এবং প-বর্গের পাঁচটি (প ফ ব ভ ম) এবং য য় হ এই মোট তেরোটি অক্ষরের যে কোনো একটি বা দুটি অক্ষর আসে, তবে তার পরেও মূর্ধন্য-ণ হবে।
উদাহরণ: পরায়ণ, পরিহরণ, রঙ্কিণী, কৃপণ, চর্বণ, শ্রবণ ইত্যাদি।
৩. তবে উপরের নিয়মের কিছু ব্যতিক্রমও আছে।
যেমন: আয়ুষ্মান, গরীয়ান, চক্ষুষ্মান, নির্গমন, পূষন, ইত্যাদি।
৪. এমন অনেক শব্দ আছে যেখানে স্বভাবতই মূর্ধন্য-ণ বসে।
মনে রাখার জন্য ছড়াটি দেখা যেতে পারে।
কণা নিক্কণ ফণা চিকণ কণিকা গণিকা কাণ,
উকুণ কণ মণি কঙ্কণ বাণ শাণ কল্যাণ,
পিণাক কফোণি লাবণ্য ফণী বণিক নিপুণ পাণি
চাণক্য পণ মাণিক্য গণ বীণা বেণু বেণী বাণী
গুণ তূণ ঘুণ অণু মকুণ বাণিজ্য কিণ কোণ
পুণ্য গৌণ লবণ পণ্য ভণিতা শোণিত শােণ
স্থাণু শণ ভাণ আপণ বিপণি এণ— এই পঞ্চাশ
নিত্যসিদ্ধ ণ-কার এদের, বিধির বাহিরে বাস।
৫. ট-বর্গের ট ঠ ড ঢ—এই চারটি বর্ণের পূর্বে যদি ন্ ধ্বনি থাকে এবং ঐ ‘ন’ সহযোগে যদি যুক্তবর্ণ তৈরি হয়, তা হলে তা সর্বদা মূর্ধন্য-ণ হবে। যেমন : কণ্টক, ঘণ্টা; কণ্ঠ, লণ্ঠন; ঠাণ্ডা, দণ্ড; ঢুগুন ইত্যাদি।
৬. উত্তর পর পার রবীন্দ্র চান্দ্র নার-শব্দের পরে ‘অয়ন/‘আয়ন’ শব্দ হলে দন্ত্য-ন পাল্টে মূর্ধন্য-ণ হয়।
উদাহরণ_
উত্তর + আয়ন = উত্তরায়ণ
পর + আয়ন = পরায়ণ
পার + আয়ন= পারায়ণ
রবীন্দ্র + অয়ন = রবীন্দ্রায়ণ
চান্দ্র + অয়ন = চান্দ্রায়ণ
নার + আয়ন = নারায়ণ
৭.ত-বর্গের ত থ দ ধ এই চারটি বর্ণের পূর্বে যদি ন ধ্বনি থাকে এবং ওই ন সহযোগে যদি যুক্তবর্ণ তৈরি হয় তাহলে সেই যুক্তব্যঞ্জনে সর্বদা দন্ত্য-ন হবে। যেমন: অন্ত, কান্ত, প্রান্ত, ইত্যাদি।
৮. এই ণত্ববিধান বিদেশি শব্দ অথবা বিদেশি নামের বানানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
৯. সমাসবদ্ধ দুই পদেরই অর্থের প্রাধান্য থাকায় নিম্নের শব্দগুলোতে ‘মূর্ধন্য-ণ’র পরিবর্তে দন্ত্য-ন ব্যবহৃত হবে। যেমন: ক্রিনয়ন, সর্বনাম, দুর্নীতি, দুর্নাম।
১০. খাঁটি বাংলা শব্দে ও অতৎসম শব্দে সর্বদা দন্ত্য-ন হবে। যেমন: ঝরনা, রানী।
উৎস: Jêrry ÑÃñ, এসো ণত্ব-জ্ঞনের গুণী হই, শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)