ড. মোহাম্মদ আমীন
তাম্রলিপ্তি জনপদটি হরিকেলের উত্তরে অবস্থিত ছিল। বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তির প্রাণকেন্দ্র। তাম্রলিপ্ত বা তাম্রলিপ্তি প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য, সিংহলি গ্রন্থ এবং গ্রিক ভৌগোলিক ও চৈনিক তীর্থযাত্রীদের বিবরণে বর্ণিত একটি প্রাচীন মানব বসতিস্থল। এ সকল গ্রন্থের বিবরণ থেকে জানা যায়, গঙ্গা নদী যেখানে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে তার কাছে জনপদটি গড়ে উঠেছিল। এ সকল লিখিত উৎসের ভিত্তিতে তাম্রলিপ্তিতে মানববসতির কালসীমা মোটামুটিভাবে চতুর্থ/তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে আট খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বলে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন বন্দর হিসেবে তাম্রলিপ্তির সর্বশেষ প্রমাণ বহন করছে আট শতকের উদয়মনের দুধপানি প্রস্তরলিপি। গ্রিক ভৌগোলিক টলেমির মানচিত্রে ‘তমলিটিস্’ রূপে তা¤্রলিপ্তির উরেøখ রয়েছে। চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন-সাং তাম্রলিপ্তি শহরকে ‘তান-মো-লি-তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তৎকালে এটি একটি সমৃদ্ধি নগর ও বন্দর হিসেবে গড়ে উঠে। যদিও এ বন্দর নগরীর সঠিক শনাক্তকরণ সম্পর্কে পন্ডিতদের ভিন্নতা রয়েছে, তবু সবাই একমত যে, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর (প্রাচীন মিধুনাপুর) জেলার তমলুক শহরই ছিল প্রাচীন তাম্রলিপ্তি নগরস্থল। বর্তমান শহরটি বঙ্গোপসাগরের কাছে রূপনারায়ণের তীরে অবস্থিত। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বন্ধু আইসিএস গৌড়দাস বসাক প্রথম ব্যক্তি যিনি আঠারো শতকের শেষপাদে তমলুকের ধ্বংসাবশেষ সম্পর্কে বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন। ‘প্রসিডিংস অব দি এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল’-এর ১৮৮৮ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সংখ্যায় (কলকাতা, ১৮৮৯) তিনি তাঁর আবিষ্কারের কথা সংক্ষেপে প্রকাশ করেন।
বাংলার প্রাচীন বাংলা কয়েটি জনপদে বিভক্ত ছিল। জনপদগুলোর নাম ও বর্ণনা নিচে দেওয়া হল। ক্লিক করে জনপদগুলোর সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তথ্যবহুল বিবরণ জেনে নিতে পারেন।