তিউনিসিয়া (Tunisia)

ড.. মোহাম্মদ আমীন
তিউনিসিয়া আফ্রিকার উত্তরতম দেশ। সরকারি নাম তিউনিসীয় প্রজাতন্ত্র। এটি ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। এর উত্তরে ও পূর্বে ভূমধ্যসাগর, পশ্চিমে আলজেরিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্বে লিবিয়া। উত্তর আফ্রিকার অধিকাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত সাহারা মরুভূমি দক্ষিণ তিউনিসিয়া থেকে শুরু হয়েছে। দেশটির ৪৫% সাহারা মরুভূমিতে পড়েছে। রাজধানী তিউনিস। তিউনিসিয়ার প্রাচীন নাম ছিল তাইনিস (Tynes)। তিউনিসিয়ার মোট আয়তন ১,৬৩,৬১০ বর্গকিলোমিটার বা ৬৩,১৭০ বর্গমাইল। তন্মধ্যে জলীয় ভাগের পরিমাণ ৫.০%। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবমতে, তিউনিসিয়ার জনসংখ্যা ১,০৯,৮২,৭৫৪ জন এবং প্রতি বর্গকিলোমিটার ৬৩ জন। আয়তন বিবেচনায় তিউনিসিয়া পৃথিবীর ৯৩-তম, জনসংখ্যা বিবেচনায় ৭৯-তম কিন্তু জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনায় পৃথিবীর ১৩৩-তম জনবহুল দেশ।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবমতে, তিউিনিসিয়ার জিডিপি ৪৫.২৭৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং মাথাপিছু আয় ৪,০৭৫ ইউএস ডলার। মুদ্রার নাম দিনার। সরকারিভাবে তিউনিসিয়ার অধিবাসীদের তিউনিস বলা হয়। দেশটির সরকারি ভাষা আরবি, তবে ফ্রেঞ্চ, তিউনিসিয়ান আরবি ও বার্বার ভাষাও বহুল প্রচলিত। ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিউনিসিয়া ফ্রান্সের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চ স্বাধীনতা লাভ করে। আধুনিক তিউনিসিয়ার স্থপতি হাবিব বুর্গিবা দেশটিকে স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দেন এবং ৩০ বছর ধরে দেশটির রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের তিউনিসিয়ার পতাকা প্রথম গৃহীত হয়।

ইসলাম এখানকার রাষ্ট্রধর্ম। ৯৮% অধিবাসী মুসলিম। তিউনিসিয়ার কাইরুয়ান শহর মক্কা, মদিনা ও জেরুজালেমের পর মুসলমানদের চতুর্থ পবিত্র স্থান হিসাবে খ্যাত। দেশের একচতুর্থাংশ লোক রাজধানী তিউনিসে বাস করে। ৯৮% অধিবাসী আরবীয় বার্বার জাতিভুক্ত। ভূমধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থানের কারণে তিউনিসিয়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম। হাম্মামেত শহর তিউনিসিয়ার বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র। অধিকাংশ দেশের নাগরিকদের তিউনিসিয়া ভ্রমণে ভিসা লাগে না। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ হতে এ পর্যন্ত কেবল দুইজন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করেছেন। তিউনিসিয়ার অর্থনীতির প্রধান কৃষিনির্ভর।

Language
error: Content is protected !!