তৈয়ার তৈয়ারি তৈরি ও তৈরী
ড. মোহাম্মদ আমীন
বাক্যে বিশেষ্য ও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত ‘তৈয়ার’ আরবি শব্দ। অন্যদিকে, বিশেষ্য ও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত ‘তৈয়ারি’ ফারসি শব্দ। উভয় শব্দ বিদেশি বলে বানানে ‘ঈ-কার’ সমীচীন নয়। বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানমতে, আরবি ‘তৈয়ার’ থেকে উদ্ভূত ‘তৈরি’ শব্দের অর্থ— বিশেষ্যে (১) গঠন এবং বিশেষণে (১) ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে এমন, (২) যোগ্য, (৩) শিক্ষিত ও (৪) (আলংকারিক অর্থে) এঁচড়ে পাকা। আভিধানিক এই বিশ্লেষণে দেখা যায়— ‘তৈরি’ বিশেষ্য ও ক্রিয়া উভয়রূপে ব্যবহার করা যায়। সুতরাং, ‘ঈ-কার’ দিয়ে অযথা আর একটি ‘তৈরী’, তৈরি করা অনাবশ্যক। যেমন : সে বাড়ি তৈরির কাজে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। মা আমাদের জন্য সেমাই তৈরি করছেন। হাতে-তৈরি (
তৈরী) সেমাই খেতে বেশ লাগে। জাপানের তৈরি (তৈরী) গাড়ি বাংলাদেশে প্রচুর পাওয়া যায়।
আগে বিশেষ্য হিসবে ‘তৈরি’ এবং ‘বিশেষণ’ হিসেবে ‘তৈরী’ বানান লেখা হতো। যেমন: জাপানের তৈরী টয়োটা গাড়ি। কিন্তু বিদেশি বলে ‘তৈরী’ শব্দের বানানে ‘ঈ-কার ’ বেমানান। তাই বাংলা একাডেমি এতদিন ব্যবহৃত হয়ে আসা ‘তৈরী’ শব্দটির বানান পরিবর্তন করে ‘তৈরি’ বানান তৈরি করে সেটিই একমাত্র প্রমিত নির্দেশ করেছে। বিশেষ্য হোক বা বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হোক—বানান অধুনা একটাই এবং তা হচ্ছে ‘তৈরি’। জামিল চৌধুরী সম্পাদিত বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে (২০১৬) তৈরী বানানটিকে স্থানই দেওয়া হয়নি। অতএব, বিশেষ্য বা বিশেষণ উভয়ার্থে এখন ‘তৈরি’ বানানই প্রমিত। এখন, তৈরি= তৈরী। গাণিতিক হিসেবে তখন হয়ে যায়: ই= ঈ।
তৈরি= তৈরী;
ঐ-কার+ত+ ই-কার+ র = ঐ-কার+ত+র+ ঈ-কার
বা ই-কার = ঈ-কার।
বা, ই= ঈ।
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১
কি না বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি
মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন
ভূ ভূমি ভূগোল ভূতল ভূলোক কিন্তু ত্রিভুবন : ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ
মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন
লক্ষ বনাম লক্ষ্য : বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন
ব্যাঘ্র শব্দের অর্থ এবং পাণিনির মৃত্যু