দৈনন্দিন বিজ্ঞান : অক্সিজেন আলো আলোর বেগ রঙ আলোর পথ ও আলোর নীতি
ড. মোহাম্মদ আমীন
অক্সিজেন
অক্সিজেন বা অম্লজান একটি রাসায়নিক মৌল, এর প্রতীক O এবং পারমাণবিক সংখ্যা ৮। অক্সিজেন শব্দটি দুইটি গ্রিক শব্দ থেকে অক্সুস্ (অম্ল) এবং গেন্যাস্ (জনক) নিয়ে গঠিত। অষ্টাদশ শতকে বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ল্যাভয়সিয়ের নামটি নির্দিষ্ট করেন। কারণ তখন মনে করা হতো সকল অম্লের মধ্যে অক্সিজেন বিদ্যমান। অবশ্য এটি ঠিক ছিল না। তবু নামটি রেখে দেওয়া হয়। অক্সিজেনের যোজ্যতা সাধারণত ২। অক্সিজেন গঠিত সাধারণ কিছু মৌল হলো: পানি (H2O), বালি (SiO2, সিলিকা) এবং আয়রন অক্সাইড (Fe2O3)। দ্বিপরমাণুক অম্লজান বায়ুর প্রধান দুইটি উপাদানের একটি। উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সময় এই মৌলটি উৎপন্ন হয় এবং এটি সকল জীবের শ্বসনের জন্য অনিবার্য উপাদান। সাধারণ অবস্থায় সোডিয়াম, অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়ায় জ্বলে ওঠে ।
আলো
আলো এক ধরণের শক্তি বা বাহ্যিক কারণ, যা চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জাগায়। আলো বস্তুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু নিজে অদৃশ্য। আমরা আলোকে দেখতে পাই না, কিন্তু আলোকিত বস্তুকে দেখি। আলো এক ধরণের বিকীর্ণ শক্তি। এটি এক ধরণের তরঙ্গ। আলো তির্যক তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের আকারে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে। মাধ্যমভেদে আলোর বেগের পরিবর্তন হয়ে থাকে। আলোর উৎপত্তির প্রধান কারণ ইলেকট্রন । লাল আলোতে সবুজ ফুল কালো দেখায়।
আলোর বেগ
আলোর বেগ মাধ্যমের ঘনত্বের ব্যস্তানুপাতিক। শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি। শূন্যস্থানে আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ২৯,৯৭,৯২,৪৫৪ মিটার বা ১,৮৬,০০০ মাইল। আলোর গতির আবিষ্কারক এ মাইকেলসন। আলোর কোনো আপেক্ষিক বেগ নেই, এর বেগ সর্বদা সমান।
আলোর রং ও আলোর ব্যবহার
সাদা আলো সাতটি রঙের মিশ্রণ, প্রিজম দিয়ে আলোকে বিভিন্ন রঙে আলাদা করা যায়। যা রঙধনুতে দেখতে পাই। আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরন, আপবর্তন, ব্যাতিচার হয়। আলোর একই সাথে কণা ধর্ম ও তরঙ্গ ধর্ম বিদ্যমান। আতশবাজি ও ফটোগ্রাফির ফ্লাশ পাওডার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ম্যাগনেসিয়াম। সাংকেতিক আলো তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ম্যাগনেসিয়াম। সালোক সংশ্লেষণ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে হয় সবুজ আলোতে। যে মসৃণ তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তা হলো দর্পণ। নীল আলোর বিক্ষেপণ অপেক্ষাকৃত বেশি বলে আকাশ নীল দে খায়
আলোক পথ ও ফার্মাটের নীতি
১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে পিয়েরে ফার্মাট আলোকপথ সংক্রান্ত একটি নীতি দেন যা ফার্মাটের নীতি নামে পরিচিত। এই নীতি অনুসারে “যখন কোন আলোক রশ্মি প্রতিফলন বা প্রতিসরণের সূত্র মেনে কোন সমতল পৃষ্ঠে প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়, তখন তা সর্বদা ক্ষুদ্রতম পথ অনুসরণ করে।”