‘ধুলা’ শব্দের অর্থ ধুল, ধুলো, শুকনো মাটির মিহি গুঁড়ো, ধূলি প্রভৃতি। ধূলি শব্দের অর্থ শুকনো মাটির সূক্ষ্ম কণা, ধুল, ধুলা, ধুলো, ধূলিকণা প্রভৃতি। অতএব ধুলা ও ধূলি সমার্থক কিন্তু প্রথমটির বানানে উ-কার, দ্বিতীয়টির বানান ঊ-কার।কারণ — ধুল, ধুলা বাংলা শব্দ তাই উ-কার কিন্তু ধূলি সংস্কৃত শব্দ তাই ঊ-কার।
নিমোনিক : বাংলাকে বলা হতো সংস্কৃতের তুলনায় নীচু জাতের ভাষা। হ্রস্ব-উ পড়ে দীর্ঘ-ঊ পড়তে হয়। তাই উ-এর চেয়ে ঊ উঁচু শ্রেণির। এজন্য নিচু শ্রেণির ধুল-ধুলা উ-কার দিয়ে এবং উঁচু শ্রেণির ধূলা ঊ-কার দিয়ে সজ্জিত।
‘ধুলা’ ‘ধূম’ বানান নিয়েও অনেকের সংশয় হয়। কোথায় বসবে উ-কার এবং কোথায় বসবে ঊ-কার। ধূম শব্দটি সংস্কৃত তাই ঊ-কার। অধিকন্তু ধূম বা ধূম্র ঊর্ধ্বগামী, তাই ধূম বা ধূম্র শব্দে ঊ-কার।অন্যদিকে ধুল, ধুলা ধূমের চেয়ে নিচে থাকে। তাই এখানে উ-কার। উদাহরণ :
ধুলা : ধুল, ধুলো, ধুলোবালি, ধুলোময়লা।
ধূলি : ধূলিকণা, ধূলিঝড়, ধূলিধূসর, ধূলিধূসরিত, ধূলিধ্বজ, ধূলিমলিন, ধূলিলিপ্ত, ধূলিলুণ্ঠিত, ধূলিশয্যা, ধূলিশায়ী, ধূলিসাৎ, ধূলীভূত প্রভৃতি।
ধূম : ধূম, ধূমকেতন, ধূমকেতু, ধুমজাল, ধূমদর্শী, ধূমধ্বজ, ধূমপথ, ধূমপান, ধূমপায়ী, ধূমযোনি, ধূমল, ধূমাকার, ধূমাবতী, ধূমাভ, ধূমায়মান, ধূমায়িত, ধূমিকা, ধূমিত, ধূমোদ্গার, ধূম্র, ধূম্রক, ধূম্রজাল, ধূম্রবর্ণ, ধূম্রলোচন, ধূম্রালোক প্রভৃতি।