সাধারণত পদবির লিঙ্গান্তর করা হয় না। নন্দী নন্দিনী হয় না, মিত্র মিত্রা হয় না কিন্তু গুপ্ত গুপ্তা হয়। এ একটিমাত্র পদবির স্ত্রী লিঙ্গটি বর্জন করা যায় না। এর কারণ, বিষয়টি লিঙ্গান্তর হলেও ‘গুপ্ত’ বা ‘গোপন’ থেকে যায়। নইলে ‘গুপ্ত’ ছাড়া আর কোনো পদবির লিঙ্গান্তরের সুযোগ কেন রাখেননি প্রাচীন বৈয়াকরণগণ? মেয়ে হোক, ছেলে হোক— প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের পত্নী হয় না, সবসময় পতি। তবে, চলচ্চিত্র জগতে অমিতাভ বচ্চন ‘চিত্র নায়ক’ হলেও রেখা কিন্তু ‘চিত্র নায়িকা’। স্বামীর পত্নী হয়, কিন্তু পত্নীর স্বামী হয় না। এজন্য ইংরেজিতে বলা হয়, Post has no gender। পদবির লিঙ্গান্তর নিয়ে সুকান্ত লিখেছেন ‘মেয়েদের পদবি’ নামের একটি চমৎকার ছড়া। দেখুন, ছড়াটি :
“মেয়েদের পদবীতে গোলমাল ভারি,
অনেকের নামে তাই দেখি বাড়াবাড়ি;
‘আ’কার অন্ত দিয়ে মহিলা করার
চেষ্টা হাসির। তাই ভূমিকা ছড়ার।
‘গুপ্ত’ ‘গুপ্তা’ হয় মেয়েদের নামে,
দেখেছি অনেক চিঠি, পোস্টকার্ড খামে।
সে নিয়মে যদি আজ ‘ঘোষ’ হয় ‘ঘোষা’
তা হলে অনেক মেয়ে করবেই গোসা,
‘পালিত’ ‘পালিতা’ হলে ‘পাল’ হলে ‘পালা’
নির্ঘাৎ বাড়বেই মেয়েদের জ্বালা;
‘মল্লিক’ ‘মল্লিকা’, ‘ দাস’ হলে ‘দাসা’
শোনাবে পদবিগুলো অতিশয় খাসা;
‘কর’ যদি ‘করা’ হয়, ‘ধর’ হয় ‘ধরা’
মেয়েরা দেখবে এই পৃথিবীটা—“সরা”।
‘নাগ’ যদি ‘নাগা’ হয় ‘সেন’ হয় ‘সেনা’
বড়ই কঠিন হবে মেয়েদের চেনা।।”