বিশ্বের প্রথম আর্থনীতিক ও রাজনীতিক গ্রন্থ
বিখ্যাত মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের প্রধান পরামর্শদাতা কৌটিল্য লিখিত ‘অর্থশাস্ত্র’ নামক গ্রন্থটি বিশ্বের প্রথম ‘আর্থনীতিক ও রাজনীতিক’ গ্রন্থ। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৪ খ্রিষ্টপূর্ব ১৮৫ সময়কালের মধ্যে গ্রন্থটি লেখা হয়েছে।
পৃথিবীর আদিকবি
রামায়ণ রচয়িতা মহর্ষি বাল্মীকিকে পৃথিবীর আদিকবি বলা হয়। রামায়ণে ২৪ হাজার শ্লোক ও ৫ শত অধ্যায় রয়েছে। ‘রামায়ণ’ই পৃথিবীর প্রথম গ্রন্থ যা সাধারণ একটি কাব্য হওয়া সত্ত্বেও ধর্মীয় গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। সে যুগে বাল্মীকির মতো বিচক্ষণ জ্ঞান ও কল্পনার অধিকারী অন্য-কোনো কবি ছিল না। তাই তাঁকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম কবি বলা হয়। পৃথিবীতে আর কোনো কবির গ্রন্থ অনুরূপ ধর্মীয় গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেনি।
প্রথম বৈয়াকরণিক ও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রূপতাত্ত্বিক
পাণিনি উপমহাদেশের প্রথম বৈয়াকরণিক। তাঁর লেখা ‘অষ্টাধ্যায়ী’ উপমহাদেশের প্রথম ব্যাকরণ। গ্রন্থটি চার হাজার সূত্র নিয়ে গঠিত। কথ্য ও বৈদিকরূপের সংস্কারের মধ্যে পাণিনি ছিলেন অন্যতম। তাঁর লেখা ‘অষ্টাধ্যায়ী’ ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের ইতিহাসের প্রথম ব্যাকরণ। তাঁকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রূপতাত্ত্বিক বলা হয়। পাণিনির ‘অষ্টাধ্যায়ী‘কে ‘মানবমনীষার পরম উৎকর্ষের নিদর্শন’ বলা হয়। অষ্টাধ্যায়ী পৃথিবীর ইতিহাসের প্রাচীনতম শব্দশাস্ত্র গ্রন্থ। সংস্কৃত ভাষাতত্ত্বে পাণিনির ‘অষ্টাধ্যায়ী’ একমাত্র মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত।
উপমহাদেশের প্রথম চিকিৎসাগ্রন্থ
খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকের প্রথমভাগে রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি হলায়ুধ মিশ্র যে গ্রন্থটি রচনা করেন সেটি উপমহাদেশের প্রথম চিকিৎসা গ্রন্থ। গ্রন্থটিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষামূলক বিবরণ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। প্রকৃতি, বৃক্ষ ও দ্রব্যাদির গুনাগুণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতির বর্ণনা সংবলিত গ্রন্থটি উপমহাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রথম ও পথিকৃৎ গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত।‘সেক শুভোদয়া’ হলায়ুধ মিশ্রের অন্য একটি কাব্যগ্রন্থ। গ্রন্থটি রাজা লক্ষ্মণ সেন এবং শেখ জালাল উদ্দিন তাবরেজির অলৌকিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত। শেখের শুভোদয় অর্থাৎ শেখের গৌরব। শেখ তথা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ হতে আগত মুসলমান মনীষীদের গৌরব বর্ণনাই ছিল গ্রন্থটির মূল উদ্দেশ্য।