পৃথিবীর ইতিবৃত্ত
ড. মোহাম্মদ আমীন
পৃথিবীর ইতিহাস
ইতিহাস হলো অতীত ঘটনা ও কার্যাবলীর অধ্যয়ন। পৃথিবীর ইতিহাস বলতে পৃথিবী নামক গ্রহটির উৎপত্তি থেকে আরম্ভ করে বর্তমান পর্যন্ত সময়ের ইতিহাসকে বোঝায়। পৃথিবীর বয়স মহাবিশ্বের বয়সের কমবেশি এক তৃতীয়াংশ।
গ্রহ হিসেবে পৃথিবীর স্থান
সূর্য থেকে দূরত্ব অনুযায়ী পৃথিবী তৃতীয়, সর্বাপেক্ষা অধিক ঘনত্বযুক্ত এবং সৌরজগতের পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ। পৃথিবীর অপর নাম বিশ্ব বা নীলগ্রহ। ইংরেজি ভাষায় পৃথিবীকে আর্থ (Earth), গ্রিক ভাষায় ‘গাইয়া’ এবং লাতিন ভাষায় টেরা (Terra) বলা হয়।
পৃথিবীর সৃষ্টি ও স্থায়িত্ব
৪৫৪ কোটি বছর আগে পৃথিবী গঠিত হয়েছিল। এক বিলিয়ন বছরের মধ্যেই পৃথিবীর বুকে প্রাণের আবির্ভাব ঘটে। মনে করা হচ্ছে, আরও ৫০ কোটি বছর পৃথিবী প্রাণধারণের সহায়ক অবস্থায় থাকবে।
পৃথিবীর গঠন
পৃথিবীর উপরিতল একাধিক শক্ত স্তরে বিভক্ত। এগুলিকে ভূত্বকীয় পাত বলা হয়। পৃথিবীতলের প্রায় ৭১ ভাগ লবণাক্ত জলের মহাসাগর দ্বারা আবৃত। অবশিষ্টাংশ মহাদেশ ও অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত। স্থলভাগেও রয়েছে অজস্র হ্রদ ও জলের অন্যান্য উৎস। পৃথিবীর মেরুদ্বয় সর্বদা কঠিন বরফে আবৃত থাকে।
কক্ষপথে পৃথিবীর ভ্রমণ
পৃথিবী নিজ কক্ষপথে মোটামুটি ৩৬৫.২৬ সৌরদিনে বা এক নক্ষত্র বর্ষে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী নিজ অক্ষের ৬৬.১/২ ডিগ্রি কোণে হেলে রয়েছে। এর ফলে এক বিষুবীয় বছর (৩৬৫.২৪ সৌরদিন) সময়কালের মধ্যে এই বিশ্বের বুকে ঋতুপরিবর্তন ঘটে থাকে।
পৃথিবীর উপগ্রহ
পৃথিবীর একমাত্র বিদিত প্রাকৃতিক উপগ্রহ চাঁদ। ৪.৩৫ বিলিয়ন বছর আগে চাঁদ পৃথিবী প্রদক্ষিণ শুরু করে। চাঁদের গতির ফলেই পৃথিবীতে সামুদ্রিক জোয়ারভাঁটা হয় এবং পৃথিবীর কক্ষের ঢাল সুস্থিত থাকে। চাঁদের গতিই ধীরে ধীরে পৃথিবীর গতিকে কমিয়ে আনছে।
পৃথিবীর নামকরণ
পৃথিবী শব্দটি সংস্কৃত। এর অপর নাম পৃথ্বী। পৃথ্বী ছিল পৌরাণিক পৃথুর রাজত্ব। এর সমার্থক শব্দ হচ্ছে- বসুধা, বসুন্ধরা, ধরা, ধরণী, ধরিত্রী, ধরাতল, ভূমি, ক্ষিতি, মহী ইত্যাদি।