পৃথিবীর ইতিবৃত্ত
ড. মোহাম্মদ আমীন
পৃথিবীর সৃষ্টি
সৌরজগৎ সৃষ্টির প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর পর এক “গুচ্ছ-সংঘর্ষ”-এর ফলে পৃথিবীর সৃষ্টি। প্রায় ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী বর্তমান আকৃতি পায়, পায় লৌহের কেন্দ্র এবং বায়ুমণ্ডল। সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সঙ্গে থিয়া নামের একটি গ্রহেল সংঘর্ষের ফলে দুটি গ্রহ পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে সৃষ্টি হয় পৃথিবী। সংঘর্ষের সময় পৃথিবীর বয়স ছিল ১০ কোটি বছর। আদিম পৃথিবী গঠিত হতে প্রায় ১ থেকে ২ কোটি বছর লেগেছিল।
চাঁদের সৃষ্টি
প্রায় ৪.৫৩ বিলিয়ন বছর পূর্বে চাঁদ গঠিত হয়। মঙ্গল গ্রহের সমান আকৃতির থিয়া গ্রহের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পৃথিবী থেকে খসে পড়া বস্তু পরিবৃদ্ধি হয়ে চাঁদ সৃষ্টি হয়। এর থেকে বলা হয়, থিয়া গ্রহের ভর ছিল পৃথিবীর ভরের প্রায় ১০%।
চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি
৩.৫ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র গঠিত হয়। যা সৌর বায়ুর ফলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উবে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
রোডেনিয়া
প্রায় ৭৫ কোটি বছর পূর্বে সবচেয়ে প্রাচীন মহামহাদেশ রোডিনিয়া ভাঙতে শুরু করে। মহাদেশটি পরে পুনরায় ৬০ কোটি বছর থেকে ৫৪ কোটি বছর পূর্বে একত্রিত হয়ে প্যানোটিয়া, পরবর্তীকালে প্যানজিয়ায় একত্রিত হয়। এর পর ১৮ কোটি বছর পূর্বে এটি আবার ভেঙে যায়।
বরফ যুগ
বরফ যুগের বর্তমান রূপ শুরু হয় প্রায় ৪ কোটি বছর পূর্বে এবং ৩০ লাখ বছর পূর্বে প্লেইস্টোসিন যুগে তা ঘনীভূত হয়। ৪০,০০০ থেকে ১০০,০০০ বছর পূর্বে হিমবাহ ও বরফ গলার কারণে উচ্চ-অক্ষাংশ অঞ্চলসমূহের উচ্চতা কমতে থাকে। শেষ মহাদেশীয় হিমবাহ শেষ হয় ১০,০০০ বছর পূর্বে।
প্রথম অণুর সন্ধান
রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে প্রায় ৪০০ কোটি বছর পূর্বের প্রথম অণুর সন্ধান পাওয়া যায়। ৫০ কোটি বছর পরে, সকল জীবের শেষ একক পূর্বপুরুষের সন্ধান মিলে। সালোকসংশ্লেষণের বিবর্তনের ফলে সৌর শক্তি সরাসরি জীবের জীবনধারণ ও বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে অক্সিজেন বায়ুমণ্ডলে একীভূত হয় এবং সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির সাথে মিথষ্ক্রিয়ার কারণে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য বায়ুমণ্ডলের উপরে রক্ষাকারী ওজোন স্তর সৃষ্টি হয়।
সুকেন্দ্রিক
বৃহৎ কোষের সঙ্গে ক্ষুদ্র কোষের একত্রিত হওয়ার ফলে জটিল কোষ গঠিত হওয়াকে সুকেন্দ্রিক বলা হয়। কলোনির মধ্যে কোষসমূহ আরও বিশেষায়িত হতে থাকলে বহুকোষী জীব গঠিত হয়।
পৃথিবীর ইতিহাস একনজরে : গঠন পরিভ্রমণ নামকরণ সৃষ্টি ও স্থায়িত্ব