‘প্রশাসনের অন্তরালে’ আত্মজীবনের ঢঙে লেখা ড. মোহাম্মদ আমীন স্যারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতা-সংবলিত উপন্যাসধর্মী একটি গ্রন্থ। এটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। এখানে লেখকের প্রশাসন জীবনের ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়াও প্রশাসনে
প্রবেশের পূর্বে সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাঁর দেখা প্রশাসনের স্বরূপ-বিবরণও ফুটে ওঠেছে।

চাকুরি জীবনে লেখককে কত বিচিত্র ও বিস্ময়কর পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে- এসবের হৃদয়গ্রাহী বিবরণ পাওয়া যাবে গ্রন্থটিতে। ভিন্ন আঙ্গিকে রচিত ও ভিন্ন কৌশলে পরিবেশিত বইটি আপনার জ্ঞান-ভান্ডারে দিতে পারে অজানা অনেক বিষয়ের সন্ধান। বইটি পাঠ করলে জানতে পারবেন- প্রশাসনের আড়ালের অনেক জানা-অজানা বিষয়।জানতে পারবেন— প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সম্পর্ক – – -। নিচে প্রশাসনের অন্তরালে বইয়ের কয়েকটি উক্তি পরিবেশন করা হলো:
বাণী-১ : বড়োদের আছে ছোটো হয়ে পড়ার ভয়, ছোটোদের আছে বড়ো হওয়ার আনন্দকর প্রত্যাশা। ঊর্ধ্বতনদের আছে পতনের শঙ্কা, অধস্তনদের আছে উপরে উঠার শিহরিত সম্ভাবনা সব মিলিয়ে, বড়োদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোটোদের জীবন অনেক আনন্দমুখর।
বাণী-২: চাকুরির বেতনের নব্বই শতাংশ জিপি ফান্ডে জমা রেখে একজন অফিসার কীভাবে চলেন? আমি এমন অনেক অফিসারের কথা জানি, যারা জিপি ফান্ডে বেতনের প্রায় পুরো টাকাই জমা রাখতেন। এসব নিয়ে কাউকে কখনও প্রশ্ন করতে দেখা যায়নি।
বাণী-৩ : জীবন মানে নিরন্তর থেমে থাকা।কেউ কেউ বলে, জীবন মানে নিরন্তর ছুটে চলা; তা আদৌ ঠিক নয়। যে জীবন ছোটো একটা শরীরের বাইরে যেতে পারে না, বাইরে গেলেই আর ফিরে আসতে পারে না, তার পক্ষে ছুটে চলা অবান্তর। সংগত কারণে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত জীবন একটা স্থবির অধ্যায়।
বাণী-৪: শোনো, ক্যাডার অফিসার ঘুস খেলেও টাকা, না-খেলেও টাকা। আরে ভাই, আমাদের চাকুরিটাই একটা ঘুস, যেমন পুরুষের শরীরটাই একটা শিশ্ন। নিজে না-খেলে অন্যকে খাওয়াবে কীভাবে, আমি কী বললাম বুঝতে পেরেছ?
বাণী-৫: অনেকে বলেন— আমার দেশ আমার অহংকার। এদের মাঝে আমি হিটলার দেখতে পাই; দেখতে পাই নৃশংস এক জানোয়ার। আমার দেশ আমার অহংকার নয়, ভালোবাসার নিশ্বাস, অম্লজান সরবরাহের রক্ত, চিরণ্ময় আস্থার হীরণ্ময় বিশ্বাস।