ড. মোহাম্মদ আমীন
সংস্কৃত শব্দ ‘প্রাক্তন’ এর অর্থ বিশেষণে ভূতপূর্ব, জন্মান্তরবিষয়ক এবং বিশেষ্যে পূর্বজন্মে কৃতকর্মের ফল, ভূতপূর্ব কর্মী প্রভৃতি। তবে সাধারণত শব্দটি ভূতপূর্ব অর্থে অধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আরবি ‘সাবিক’ থেকে উদ্ভূত এবং বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত ‘সাবেক’ শব্দের অর্থ প্রাচীন, পুরাতন, পূর্বেকার প্রভৃতি। শব্দার্থ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘প্রাক্তন’ ও ‘সাবেক’ খুব ক্ষেত্রে সমার্থক।
জনাব খুরশেদ আহমেদ লিখেছেন, “ ‘অভিধানতত্ত্বে এমন কথা বলা হয় যে, কোনো শব্দেরই আর একটা হুবহু প্রতিশব্দ হয় না।’যেখানে সমার্থক, সেখানেও ওরা অভিন্ন নয়; কোনো-না-কোনো ভাবে এদের অনন্য দ্যোতনা থাকে। যেখানে ‘প্রাক্তন’ ও ‘সাবেক’ সমার্থক, সেখানে, সাধারণভাবে, তৎসম-প্রধান শৈলীতে ‘প্রাক্তন’-এর ব্যবহার ও অতৎসম-প্রধান শৈলীতে ‘সাবেক’ ‘সাবেকি’ ইত্যাদির ব্যবহার অধিকতর লাগসই হতে পারে। আবার, তৎসম-অতৎসম-নির্বিশেষে আলোচনার প্রসঙ্গ-প্রতিবেশ ও বাগ্বিধি ‘প্রাক্তন’ ও ‘সাবেক’ ইত্যাদির প্রয়োগের নির্ণায়ক হতে পারে।”
অতএব, আমরা বলতে পারি – ‘প্রাক্তন’ ও ‘সাবেক’ শব্দের প্রয়োগে কোনো কঠিন বিধি নেই। তবে, অনেকে মনে করেন, গত হওয়া সময় তুলনামূলকভাবে কম হলে ‘প্রাক্তন’ এবং অধিক হলে ‘সাবেক’ লেখা সমীচীন। যেমন : প্রাক্তন অধ্যক্ষ সাহেব মাঝে মাঝে কলেজে বেড়াতে আসেন। সাবেক অধ্যক্ষ মৃদুল বাবু তিন বছর আগে মারা যান। ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাধারণত প্রাক্তন শব্দটি বেশি লেখা হয়। যেমন : প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শাসনামল, বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি; সাবেক সরকারের আমল প্রভৃতি।
গবেষণা, প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়ন, মাতৃভাষা জ্ঞান, প্রাত্যহিক প্রয়োজন, শুদ্ধ বানান চর্চা এবং বিসিএস-সহ যে-কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি লিংক :