ড. মোহাম্মদ আমীন
প্রুফ সংশোধনের নিয়ম (সর্বশেষ সংযোজিত নিয়ম-সহ)
ইংরেজি Proof শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ প্রমাণ, সাক্ষ্য, প্রামাণিক তথ্য ইত্যাদি। তবে প্রুফ সংশোধন একটি পারিভাষিক কথা। এটি মুদ্রণ কাজের সঙ্গে

সম্পর্কিত। এক্ষেত্রে প্রুফ সংশোধন বলতে সঠিকতা যাচাইকে বুঝায়। কোনো গ্রন্থ বা অন্য কিছু ছাপানোর আগে তা মূল লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হয়, কোথাও ভুল আছে কি না। ভুল থাকলে প্রুফ সংশোধনের মাধ্যমে ঠিক করে নেওয়া হয়। এরূপ ভুল সংশোধনের জন্য কতগুলো নিয়ম ও চিহ্ন রয়েছে। সেগুলো প্রুফ সংশোধন চিহ্ন নামে পরিচিত। মুদ্রিত শব্দের বা বাক্যের ভুলগুলো কেটে সংশ্লিষ্ট চিহ্ন দিতে হয়।
প্রুফ সংশোধনের চিহ্ন (সর্বশেষ সংযোজিত চিহ্ন-সহ)
1. কালো দাগ দেখা যাচ্ছে, সরাতে হবে। Space appears improperly.
X ভাঙা হরফ বদলাতে হবে। Change the broken type.
tr. or trs স্থানান্তরিত করুন।Transpose.
l. c. ছোটো ছাঁদের হরফ। Small letters.

Ital বাঁকা হরফ বসান। Replace with italic letters.
[ ] ছাড় দিন। Indent.
st. or stet.কাটা হরফ ঠিক করুন। Put the lines though penned through.
w.f. ভুল হরফ । Wrong font.
bold মোটা বর্ণ দিন। Put antique letters.
run on. এক লাইনে সাজান। Put in the same line.
= লাইন ঠিক করুন। Aline.
d বাদ দিনি, মুছে ফেলুন। Delete.
d. l. or ld. লেড তুলে দিন।Take out the lead.
lead in or ld. in দুই লাইনেরে মধ্যে লেড দিন। Insert lead between the lines.
see copy কপি ছাড় পড়েছে, দেখুন। Insert the word or words omitted.
“ ” Inverted comma দিন। Put inverted comma.
, কমা দিন। Put a comma.
9 উলটিয়ে বসান। Turn the letter.
eq ফাঁক সমান করুন। Equalize spacing.
নমুন প্রুফ দেখার জন্য: ক্লিক করুন নমুনা প্রুফ
লক্ষণীয়: যথাস্থানে সেমি কোলন (;) ব্যবহার হয়েছে কি না দেখতে হবে। সেমি কোলন-এর পূর্বে অর্ধ-স্পেস দেয়ার রীতি উনিশ শতক থেকে চলে আসছে। তবে ইউনিকোডে অর্ধ-স্পেস দেয়া যায় না। পূর্ণ স্পেস ব্যবহার সমীচীন। হাইফেন দৈর্ঘ্যে ড্যাশের অর্ধেক পরিমাণ।
প্রুফণ্ডরিডারের ((Proof-Reader) দায়িত্ব : কোনো গ্রন্থ বা কপি নির্ভুল ছাপানোর জন্য কম্পোজারের যে রকম দায়িত্ব, প্রুফণ্ডরিডারের দায়িত্ব তার চেয়ে কম নয়; বরং অনেক বেশি। কারণ কম্পোজার যা কম্পোজ করেন, তার ভুলধরা হচ্ছে প্রুফরিডারের দায়িত্ব। অন্যদিকে সাধারণ কম্পোজারের চেয়ে প্রুফরিডাকে অনেক দক্ষ ও অভিজ্ঞ মনে করা হয়। একজন দক্ষ প্রুফণ্ডরিডারের সার্বিক দিক নির্দেশনায় একটি নির্ভুল গ্রন্থ বা কপি মুদ্রিত হতে পারে। তাই প্রুফণ্ডরিডারকে অবশ্যই প্রমিত বানান, থ্রুটিমুক্ত শব্দচয়ন, এবং আধুনিক বাংলা ভাষার পর্যায়ক্রমিক গঠন পরিবর্তন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকতে হবে। প্রুফণ্ডরিডারকে অবশ্যই হতে হবে ধৈর্যশীল ও তীক্ষ্মদর্শী হাতে হবে। প্রদ্যে বর্তমান সময়ে প্রফেশনাল প্রুফণ্ডরিডার ছাড়াও অনেক গ্রন্থকার নিজের গ্রন্থের প্রুফ সংশোধনের কাজ করে থাকেন। গ্রন্থকার নিজের গ্রন্থের প্রুফ দেখলে মুদ্রিত গ্রন্থটি বহুলাংশে নির্ভুল হয়। লেখক বা প্রফেশনাল প্রুফণ্ডরিডার যিনিই প্রুফ সংশোধনের কাজ করবেন, তাকে কতকগুলো নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন :
(১) প্রুফ হাতে আসার সাথে সাথে সংশোধন কাজ শুরু করা, যাতে সংশোধিত প্রুফ ফেরত পাঠাতে বিলম্ব না হয়।
(২) প্রুফ সংশোধনের সময় মূল পাঠের কোনো পরিবর্তন বা সংযোজন বাঞ্ছনীয় নয়।
(৩) লেখার কোনো অংশ যাতে পাণ্ডুলিপি হতে বাদ না পড়ে, সে জন্য মূল পাণ্ডুলিপির সাথে মিলিয়ে প্রুফ সংশোধনের কাজ কতে হবে।
(৪) সংশোধনের কাজটি নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করার জন্য একজন সহকারী নেওয়া যেতে পারে, যিনি পাণ্ডুলিপি পড়বেন এবং সাথে সাথে প্রুফণ্ডরিডার প্রতিটি লাইন মিলিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন করবেন।
(৫) প্রুফ সংশোধনের সংকেত চিহ্নগুলো প্রুফশিটের স্বণ্ডস্ব লাইনের বাঁণ্ডদিকের মার্জিনে পরপর লিখতে হবে। প্রয়োজনে ডান দিকেও লেখা যাবে।
(৬) মার্জিনে পৃথক বোঝাতে প্রত্যেক সংকেত চিহ্নের পরে একটা হেলানো স্ট্রোক (/) দিতে হবে।
(৭) বিভাগ ও উপবিভাগের শীর্ষকগুলোর জন্য নির্দেশিত মাপের হরফ ব্যবহার করা হয়েছে কিনা সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
(৮) মূল পাঠের প্রতি অনুচ্ছেদ, উদ্ধৃতি ও উদাহরণগুলো যথাযথ বিন্যস্ত আছে কিনা, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
(৯) সংখ্যা, পরিসংখ্যান ও তারিখ নির্ভুল রয়েছে কিনা, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
(১০) সংযুক্ত চিত্র, চিত্রের নম্বর (যদি থাকে), সরণির পরিচয় ও ক্রমিক সংখ্যা ঠিক আছে কিনাণ্ডদৃষ্টি রাখতে হবে।