ড. মোহাম্মদ আমীন
প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিসত্তার নামের অনুবাদ হয় না। নাম সংশ্লিষ্ট সত্তার অদ্বিতীয় পরিচায়ক। তাই নামের কোনো আভিধানিক অর্থ থাকতে পারে ন। এজন্য “মাখন লাল সরকার” নামের কোনো ব্যক্তির অর্থ: Red Butter Government কিংবা “গোপাল স্কুলে যায়” বাক্য দিয়ে “গোরুর পাল স্কুলে যায়” বোঝায় না। তা যদি হতো তাহলে মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে ইংরেজরা ‘Generous Speech Freedom’ বলত। তবে যে শব্দ দিয়ে কোনো নাম চয়িত সেই শব্দের আভিধানিক অর্থ থাকতে হতে পারে। যেমন: গোপাল, মাখন, লাল, আজাদ, কালাম, আবুল প্রভৃতির শাব্দিক অর্থ আছে।
কারো নাম শব্দ নয় বলে শব্দার্থের অভিধানে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মশাররফ হোসেন, কাজেম আলী কোরেশী, সক্রেটিস, নেপোলিয়ন প্রমুখ নামের কোনো অর্থ পাওয়া যায় না।নাম, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের একান্ত নিজস্ব এবং অদ্বিতীয় প্রত্যয়। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রকাশ ও চিহ্নিত করার জন্যই কেবল নাম রাখা হয়। তাই সত্তার পরিপ্রেক্ষিতে নামের কোনো আক্ষরিক অর্থ থাকে না। থাকা উচিতও নয়।
Facebook একটি প্রতিষ্ঠান। এটি একটি প্রতিষ্ঠানের অদ্বিতীয় পরিচয়-জ্ঞাপক নাম। তাই এর কোনো অনুবাদ হতে পারে না। অদ্বিতীয় সত্তা বলে এটি প্রত্যেক ভাষায় অভিন্ন থেকে যাবে।
তাই Facebook-এর বাংলা ফেসবুক। যদি কেউ এর অনুবাদ করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি Facebook নামক সত্তা নয়, ভিন্ন একটি সত্তার কথা বলছেন। যার সঙ্গে Facebook-এর কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের রাজা ভাইকে আমরা কখনো কিং ভাই ডাকিনি।
‘রবি’ নামের কাউকে কি আমি ‘Sun’ বলতে পারি? ইংল্যান্ডকে (England) ইংরেজভূমি অনুবাদে প্রকাশ করি না। শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ) এর ইংরেজি ‘Pure Spelling Practice’ করা যায়, তবে সেটি ভিন্ন একটি গোষ্ঠী হয়ে যাবে, আমাদের শুবাচ নয়।
–—————-