বাংলা ধাতুগণ এবং বুঝ বুঝা এবং বোঝা
বাংলা ভাষার সমস্ত ধাতুসমূহকে মোট বিশটি গণ তথা শ্রেণি, গুচ্ছ বা গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছে৷ এগুলো ব্যাকরণে সাধারণত গণ নামে পরিচিত।ধাতুর বর্ণগুলোর সংযুক্ত স্বরবর্ণের মিল বিবেচন করে গণগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে ৷ যেমন– যা, খা, ধা, পা ইত্যাদি এক গণভুক্ত৷ লিখ্, শিখ্, চিন্, কিন্, টিক্, মিল্ ইত্যাদি অন্য গণভুক্ত৷ সেভাবে, উলটা, দুমড়া, মুচড়া, উপচা ইত্যাদি আরেক গণভুক্ত ধাতু। আর একটি গণের কিছু ধাতু হলো– উঠ, শুন, ফুট, খুঁজ, খুল, বুঝ, ডুব, তুল, ভুল, দুল ইত্যাদি৷
একই গণের ধাতুগুলো সাধারণত বাক্যে ব্যবহার করা হলে অভিন্ন আচরণ করে থাকে৷ যেমন: ‘বুঝ্’ ধাতুটির সঙ্গে যেভাবে বিভক্তি যুক্ত হয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে বিভিন্ন পদ তৈরি হয়; এই গণে অন্তর্ভুক্ত উঠ্, শুন্, ফু্ট্, খুঁজ্, খুল্, ডুব্, তুল্, ভুল্, দুল্ ইত্যাদি ধাতুর পদও একই নিয়মে হয়ে তৈরি হয়ে থাকে৷ ধাতুকে গণভুক্ত করে আলোচনা করলে এই সুবিধা হয় যে, কোনো একটি ধাতুর শব্দরূপ নিয়ে সংশয় দেখা দিলে ওই গণের অন্য কোনো ধাতুর ব্যাবহারিক শব্দরূপ দেখে সংশয় কাটিয়ে উঠা যায়।
অতএব কেউ যদি উঠ্, শুন্, ফুট্, খুঁজ্, খুল্, ডুব্, তুল্, ভুল্, দুল, উড়্, ঢুক্ ইত্যাদি ধাতুর যে-কোনো একটি ধাতুর সঠিক শব্দরূপ বুঝেন, তাহলে তার ‘বুঝা’ বা ‘বোঝা’, খুঁজ আর খোঁজা, শুন আর শোনা, উড় আর ওড়া প্রভৃতির প্রয়োগ ও ব্যবহার নিয়ে সমস্যা থাকবে না। কেননা, একই গণের সব ধাতুর আচরণ ও ব্যবহার অভিন্ন। যেমন, আমরা লিখি: “ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে না”৷ এ নিয়মে লিখতে হবে, “ঠিকমতো শোনা যাচ্ছে না”৷ ভালোভাবে খোলা যাচ্ছে না। ইত্যাদি। তেমনি, বুঝে নিও, খুঁজে নাও, শুনে যাও, ডুবে যাও, তুলে ধরো প্রভৃতি।