স্বরবর্ণের প্রমিত উচ্চারণ
বাংলা বর্ণমালায় মোট কতটি বর্ণ আছে? উত্তর আসবে মোট বর্ণ ৫০টি—স্বরবর্ণ ১১টি, ব্যঞ্জন বর্ণ ৩৯টি। উত্তরে কোনো ভুল নেই। এরপর যদি প্রমিত বা শুদ্ধ উচ্চারণে ১১টি স্বরবর্ণের নাম জানতে চাওয়া হয়, তখন একেকজন একেকভাবে উচ্চারণ করবে।যেমন অ, আ, ই, ঈ এই বর্ণগুলোকে একজন হয়তো বলবে— শরো, শরাইয়া, রশ্শোই, দীর্ঘোই। আবার কেউ হয়তো বলবে—শর্-অ, শর্-আ, রশ্-শি, দির্ঘি। আবার একটু পুরোনো মানুষ যারা, তাদের মধ্যে কাউকে বলতে বলা হলে, সে হয়তো অ’কে ‘শরু’ বলেও উচ্চারণ করতে পারে। এই যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলো, এর জন্য শিক্ষার্থীদের দায়ী করা যায় না। কারণ পাঠ্য বইয়ে এই বর্ণগুলোর সঠিক নাম এবং উচ্চারণ থাকে না। ফলে একেকজন একেকভাবে পড়ে যায়।
শুরুতেই ই, ঈ, উ, ঊ এর কথা বলা যাক। এদের একটির উচ্চারণ হলো— হ্রস্ব। যেমন— হ্রস্ব-ই, হ্রস্ব-উ। আরেকটির উচ্চারণ হলো দীর্ঘ। যেমন— দীর্ঘ-ই, দীর্ঘ-উ। “হ্রস্ব”, মানে কম। আরেকটি হলো –দীর্ঘ, যার অর্থ—একটু বেশি। অর্থাৎ হ্রস্ব-ই বলার সময় “ই” এর সুরটা একটু কম হবে। আর দীর্ঘ-ঈ বলার সময় সুরটা একটু বেশি বা দীর্ঘ হবে। সুরটা একটু কমাতে আর বাড়াতে বলা হলেও সত্যিকারভাবে আমরা যখন এই দুটি ‘ই-কার’ যুক্ত শব্দ পড়ি বা উচ্চারণ করি, তখন ব্যতিক্রম দুয়েকটি জায়গা ছাড়া সবসময় ‘হ্রস্ব-ই’ বা ‘দীর্ঘ-ঈ’ এর উচ্চারণ একই রকম করে থাকি। আমাদের কানে “যদি” শব্দটি শুনতে যেমন শোনায়, “নদী”ও ঠিক তেমন শোনায়। দুটি উ-কারের বেলায়ও ব্যাপারটা একইরকম, অর্থাৎ “মধু” আর “বধূ” উচ্চারণেও কোনো পার্থক্য ধরা পড়বে না। সুতরাং দুটির বানান আলাদা থাকলেও, যখন শব্দের উচ্চারণ নির্দেশ করা হবে, তখন- দুটি ‘ই’ এর জায়গায় শুধু হ্রস্ব-ই এবং দুটি উ’-এর জায়গায় হ্রস্ব-উ ব্যবহার করা হবে।
অ আ পড়তে গিয়ে সাধারণত বলি স্বর-অ, বা স্বরে-আ। কিন্তু শব্দ তৈরি হলে কেউ তা আর বলি না। যেমন আম্মাকে কেউ কি আমরা স্বরেআম্ম বলি? সুতরাং অ’কে আমরা অ, এবং আ’কে ‘আ’-ই উচ্চারণ করব। এবার ১১টি স্বরবর্ণের প্রমিত বা শুদ্ধ উচ্চারণ জেনে নেয়া যাক:
বর্ণ / উচ্চারণ
…………………
অ /অ
আ / আ
ই / হ্রস্ব-ই (rhশ্শো-ই)
ঈ / দীর্ঘ-ই
উ / হ্রস্ব-উ (rhশ্শো-উ)
ঊ / দীর্ঘ-উ
ঋ / রি
এ / এ
ঐ / ওই
ও / ও
ঔ / ওউ