Warning: Constant DISALLOW_FILE_MODS already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 102

Warning: Constant DISALLOW_FILE_EDIT already defined in /home/draminb1/public_html/wp-config.php on line 103
বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ ও উৎপত্তি – Dr. Mohammed Amin

বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ ও উৎপত্তি

বাংলা ভাষার পূর্বপুরুষ
ভারতের মৌলিক লিপি ‘ব্রাহ্মী লিপি’ হতে ‘বাংলা লিপির’ উদ্ভব। সকল ভারতীয় লিপিই ‘ব্রাহ্মী লিপি’ হতে সৃষ্ট। সম্রাট অশোকের অনুশাসন সুগঠিত ব্রাহ্মী লিপিতে উৎকীর্ণ। খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকে ব্রাহ্মী লিপি হতে ‘পশ্চিমা লিপি’, ‘মধ্য ভারতীয় লিপি’ এবং ‘পূর্ব-লিপি’ নামে তিনটি শাখা লিপির সৃষ্টি হয়। এই লিপিসমূহের মধ্যে একাদশ-দ্বাদশ শতকে ‘পূর্ব-লিপি’ হতে ‘বাংলা লিপির’ উৎপত্তি ঘটে। অর্থাৎ ‘ব্রাহ্মী লিপি’ হতে সৃষ্ট ‘পূর্ব লিপি’ বাংলা লিপির মূল উৎস। এ হিসেবে ব্রাহ্মী লিপির ধারক ‘পালি’ বাংলা ভাষার পূর্ব পুরুষ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। মহাভারত।

বাংলা ভাষার উৎপত্তি
বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় মূল-ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি স্বতন্ত্র ভাষা। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর পূর্বে মূল ভাষাটির অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। আড়াই হাজার খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দে স্থানিক পরিবর্তনশীলতার কারণে মূল ভাষা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাষার অনেকগুলো শাখা সৃষ্টি হতে থাকে। তন্মধ্যে আর্যশাখা অন্যতম। সাহিত্য ও ভাষা গবেষকদের ধারণা আনুমানিক ১২০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে ভারতীয় আর্য ভাষার সৃষ্টি হয়। ভারতীয় আর্য ভাষার তিনটি স্তর ছিল। যথা (১) প্রাশ্চাত্য বা ইরানিক শাখা, (২) মধ্যবর্তী বা দারদিক শাখা ও (৩) প্রাচ্য বা প্রাচীন ভারতীয় আর্য শাখা। প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার স্তরে (খ্রিষ্টপূর্ব দ্বাদশ হতে খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত) বৈদিক ও সংস্কৃত ভাষা প্রচলিত ছিল। স্থানিক সমন্বয়তা এবং কথ্য প্রভাবের ভিন্নতার কারণে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা পরিবর্তিত হয়ে মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষায় (খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক হতে খ্রিষ্টীয় দশম শতক পর্যন্ত) রূপান্তর ঘটে। মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষায় পালি, প্রাকৃত এবং অপভ্রংশ প্রচলিত ছিল। মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষা প্রথমে পালি ও পরে প্রাকৃত ভাষা নামে পরিচিহ্নিত হয়। অন্যদিকে অঞ্চলভেদে প্রাকৃত ভাষা বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তন্মমধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য শ্রেণি ছিল মাগধি প্রাকৃত। মাগধি প্রাকৃত-এর প্রাচ্যতর রূপ ছিল গৌড় প্রাকৃত। এই গৌড় প্রাকৃত থেকে গৌড়ী অপভ্রংশের মাধ্যমে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটে। কেউ কেউ বাংলা ভাষার উৎপত্তিকাল খ্রিষ্টীয় দশম শতক বলে উল্লেখ করে থাকেন। তবে অধিকাংশ গবেষকদের অভিমত, বাংলা ভাষার উৎপত্তিকাল খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতক। অতএব, সংস্কৃত ভাষা হতে নয়, পূর্বাঞ্চলের অপভ্রংশ রূপ বা গৌড় অপভ্রংশ হতে বাংলা ভাষার উৎপত্তি। বিবিধ: