শুভঙ্করের ফাঁকি
ড. মোহাম্মদ আমীন
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটে অর্থের পরিমাণ ছিলো ৭৮৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার হয়েছে ৫,২৩,১৯০ কেটি টাকা। যা ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বরাদ্দের ৬৬৫.৬গুণ। এর অর্থ, ১৯৭২-১৯৭৩ অর্থবছর থেকে২০১৯-২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত এই ৪৮ বছরে আমাদের ৬৬৫.৬ গুণ উন্নতি হয়েছে। তার মানে, প্রতিবছর আমাদের উন্নয়ন পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে প্রায় ১৪গুণ করে বেড়েছে। আসলে এটা কি ঠিক?
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১ টাকা, আর ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ টাকার মধ্যে আকাশপাতাল ব্যবধান। এখন ১ টাকা দিয়ে কিছুই কেনা যায় না, তখন এক টাকা দিয়ে পেট ভরে খাওয়া যেতে। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ১০০ টাকা বেতন দিয়ে অনেক পরিবার মাস চালিয়েছে। এখন ১০০ টাকা দিয়ে দুবেলা খাওয়াও কষ্টকর। টাকার মান কমে গেছে, কমে গেছে ক্রয়ক্ষমতা। যাকে বলা হয় মুদ্রস্ফীতি।
অর্থের পরিমাণ বিবেচনায় ১৯৭২-১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের বাজেটের আকার অনেক ছোটো মনে হলেও ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনায় তা ছোটো নয়, বরং অনেক বড়ো। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ১ মার্কিন ডলার ছিল ৭.৭ টাকা। সে হিসেবে ৭৮৬ কোটি টাকা সমান ১০২ কোটি ডলার। লোক সংখ্যা ৭ কোটি ধরলে মাথাপিছ পড়ে ১৪.৬০ ডলার। অর্থাৎ ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাজেটে প্রতিজন পেয়ছে ১৪.৬০ ডলার।
এখন এক মার্কিন ডলার সমান ৮৪ টাকা। সে হিসেবে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ৫,২৩,১৯০ টাকা সমান ৬২২৮.৪৫ কোটি মার্কিন ডলার। লোক সংখ্যা ১৮ কোটি ধরলে মাথাপিছ পড়ে মাত্র ৩২৫ ডলার। যা ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের বাজেটের মাথাপিছু বরাদ্দের মাত্র ১১ গুণ। অথচ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরর বাজেটের বরাদ্দ বিবেচনায় মাথাপিছু বাজেট বরাদ্দ ৬৬৫.৬ গুণ বা ৯৭১৮ ডলার হওয়ার কথা। কিন্তু মাথাপিছ বরাদ্দ কেবল ৩২৫ ডলার। প্রত্যেকে কম পাচ্ছি ৯,৩৯৩ ডলার। ১৮ কোটি লোক কম পাচ্ছে ১১,৬৯,০৭৪ কোটি ডলার বা ১,৪২,০২,২১৬ কোটি টাকা।
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন