ড. মোহাম্মদ আমীন
বিপৎসীমা কিন্তু বিপদগ্রস্ত বিপজ্জনক ও বিপদবহুল কেন?
বিপৎসীমা: সন্ধি ও সমাসে অঘোষ বর্ণের আগে বিপদ হয় না বিপৎ হয়। তাই অঘোষ বর্ণের পূর্বে ‘বিপদ’ না হয়ে

‘বিপৎ‘ বসে। যেমন: বিপৎকাল, বিপৎকালীন, বিপৎচিহ্ন, বিপৎপাত, বিপৎসংকুল, বিপৎসংকেত, বিপৎসীমা ইত্যাদি ।
এখানে, কাল ও কালীন-এর ক, চিহ্ন-এর চ, পাত-এর প, সংকুল, সংকেত ও সীমা-এর স অঘোষ বর্ণ। তাই শব্দগুলোর বানানে ‘বিপৎ’।
বিপদগ্রস্ত, বিপজ্জনক বিপদবহুল: সন্ধি ও সমাসে ঘোষ বর্ণের আগে বিপৎ হয় না, বিপদ হয়। তাই ঘোষ বর্ণের আগে দ-যুক্ত ‘বিপদ’ বসে। যেমন: বিপদগ্রস্ত, বিপদবহুল, বিপদভঞ্জন, বিপদাপদ (বিপদ্+আপদ), বিপজ্জনক (বিপদ্+জনক), বিপদ্দশা (বিপদ্+দশা)।
এখানে, গ্রস্ত-এর গ, বহুল-এর ব, ভঞ্জন-এর ভ, আপদ-এর আ, জনক- এর জ, দশা-এর দ ঘোষ বর্ণ। তাই শব্দগুলির বানানে ‘বিপদ’।
অঘোষ বর্ণ: যে বর্ণ উচ্চারণকালে স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না, তাদের বলা হয় অঘোষ বর্ণ । যেমন- ক চ ট ত প; খ ছ ঠ থ ফ— প্রভৃতি।
ঘোষ বর্ণ: যেসব বর্ণ উচ্চারণকালে স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় তাকে ঘোষ বর্ণ বলে। যেমন: গ জ ড দ ব ঘ ঝ ঢ ধ ভ— প্রভৃতি।
ণ-ত্ব বিধির পাঁচটি নিয়ম
১. ট-বর্গীয় ধ্বনির আগে দন্ত্য ‘ন’ এলে তা ‘ণ’ হয়ে যায়।যেমন- ঘণ্টা,খণ্ড,কাণ্ড।
২. ঋ,র,ষ এর পর ‘ণ’ হয় যেমন-ঋণ,ভীষণ,মরন ইত্যাদি।
৩. ঋ,র,ষ এর পরে স্বরধ্বনি,ষ য় ব হ ং এবং ক বর্গীয় ও প ববর্গীয় ধ্বনি থাকলে পরবর্তী ‘ন’ মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়।যেমন: অপেক্ষমান, ভ্রমণ, কৃপণ, রামায়ণ, লক্ষণ।
৪. সমাসবদ্ধ শব্দে সাধারণত ণ-ত্ব বিধান খাটে না।যেমন-দুর্নীতি,পরনিন্দা, ত্রিনয়ন,
৫. ‘ত’ বর্গীয় বর্ণের সঙ্গে সব সময় দন্ত্য ‘ন’ যুক্ত হয় মূর্ধন্য ‘ণ’ হয়না। যেমন-দন্ত,রন্ধন,রত্ন ইত্যাদি।
সূত্র: ব্যাবহারিক বাংলা বানান সমগ্র, ড. মোহাম্মদ আমীন, পাঞ্জেরী পবিলেকশন্স লি.
———————————————————————–
শুবাচ গ্রুপের লিংক: www.draminbd.com