বিবিধ এবং হযবরল : জ্ঞান কোষ

ড. মোহাম্মদ আমীন
সন্দেহভঞ্জন ও সন্দেহভাজন
সন্দেহভঞ্জন অর্থ সন্দেহ বা সংশয় নিরসন, কিন্তু সন্দেহভাজন মানে সন্দেহের পাত্র— যেমন: স্নেহভাজন মানে স্নেহের পাত্র। এরা সবাই বিশেষ্য এবং তৎসম। প্রসঙ্গত, সন্দেহ শব্দের অর্থ সংশয়, অপরাধ করেছে এমন অনুমান এবং সন্দেহজনক অর্থ: সংশয় উদ্রেককারী(শুবাচ)
সংজ্ঞা ও সংজ্ঞার্থ
সংজ্ঞা শব্দের অর্থ চেতনা বা হুশ। যেমন : ডাক্তার রোগীকে সংজ্ঞানাশক ওষুধ দিয়ে সংজ্ঞাহীন করে অস্ত্রোপচার(অস্ত্র+উপচার)  করলেন। অস্ত্রোপচার  করার আট ঘণ্টা পর সংজ্ঞাহারা রোগীর সংজ্ঞা ফিরে এল। বৃদ্ধ লোকটি সংজ্ঞা হারিয়ে হঠাৎ রাস্তায় পড়ে গেলেন। অতএব,  “ব্যাকরণের সংজ্ঞা দাও”— কথার অর্থ হবে, ‘ব্যাকরণের  চেতনা দাও’ বা ‘ব্যাকরণের হুশ দাও’। এটি অর্থগতভাবে হাস্যকর।
সংজ্ঞার্থ শব্দের অর্থ— কোনো বিষয়ের যথাযথ অর্থ প্রকাশকারী ব্যাখ্যা। ইংরেজিতে যাকে definition বলা হয়। বাংলায় definition-এর প্রতিশব্দ হচ্ছে সংজ্ঞার্থ। যেমন : “ব্যাকরণের সংজ্ঞার্থ দাও”— এ বাক্যটির অর্থ হবে : ব্যাকরণের যথাযথ অর্থ প্রকাশকারী ব্যাখ্যা দাও। যে কেউ সংজ্ঞাহারা হতে পারে, কিন্তু সংজ্ঞার্থহারা হতে পারে না। প্রত্যেক কিছুর সংজ্ঞার্থ আছে, তবে সংজ্ঞা নাও থাকতে পারে। সংজ্ঞা চলে গেলে আবার ফিরে আসতে পারে, কিন্তু সংজ্ঞার্থ অবিচল।
 মুখস্থ এবং আশ্বস্ত শব্দে  স্ত ও স্থ 
যেসব শব্দের শেষে‘দন্ত্য-স’ আছে সেসব শব্দের শেষে ‘ত’ কিংবা সংস্কৃত ‘ক্ত’ প্রত্যয় যুক্ত করা হলে শব্দের শেষে ‘স্ত’ হবে এবং শব্দটি বিশেষণে পরিণত হয়। যেমন: বিন্যাস- বিন্যস্ত, আশ্বাস- আশ্বস্ত, সন্ত্রাস- সন্ত্রস্ত ইত্যাদি। শব্দের অর্থ ‘যে বা যে স্থানে’ কিংবা কোনো স্থানিক ধারণা প্রকাশ করলে শব্দটির সঙ্গে ‘স্থ’ যুক্ত হবে। যেমন: গ্রহস্থ, কণ্ঠস্থ । কোনো শব্দের শেষে ‘স্ত’ বা ‘স্থ’বসানো নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হলে প্রথমে শব্দটি হতে ‘স্থ’ বাদ দিয়ে দিন। এরপর দেখুন অবশিষ্ট শব্দাংশ অর্থবোধক কি না। যদি অর্থবোধক হয়, তাহলে  ‘স্থ’বসানো যাবে, অন্যথায় ‘স্ত’যেমন:
অধীনস্থ, অন্তঃস্থ, নিকটস্থ, পকেটস্থ, দ্বারস্থ, পরিবারস্থ, কণ্ঠস্থ, ভূগর্ভস্থ, মনস্থ, মুখস্থ, সভাস্থ, সমাধিস্থ, মনস্থ ইত্যাদি শব্দগুলো হতে ‘স্থ’ বাদ দিলে আমরা পাই যথাক্রমে— অধীন, অন্তঃ, নিকট, পকেট, দ্বার, পরিবার, কণ্ঠ, ভূগর্ভ, মন, মুখ, সভা, সমাধি, মন;  প্রত্যেকটি শব্দ অর্থবোধক।  তাই এসব শব্দের শেষে ‘স্থ’। অন্যদিকে, অভ্যস্ত, অস্ত, আশ্বস্ত, নিরস্ত, ন্যস্ত, পরাস্ত, সূর্যাস্ত, পর্যুদস্ত, প্রশস্ত শব্দগুলো হতে ‘স্ত’ বাদ দিলে পাওয়া যায় অভ্য, অ, আশ্ব, নির, ন্য, পরা, সূর্যা, পর্যুদ, প্রশ প্রভৃতি;  এগুলো অর্থহীন বা প্রায় অর্থহীন। তাই এসব শব্দের শেষে ‘স্ত’ বসেছে।
মনে রাখবেন, এটি ব্যাকরণের কোনো কঠিন সূত্র নয়, সহজবোধ্য নিমোনিক।
ইংরেজি উচ্চারণ সূত্র

ইংরেজিকে বলে গরুমুখী বিদ্যা। চাব্বিশটি বর্ণ দিয়ে উচ্চারণ করতে হয় প্রায় দ্বিগুণ ধ্বনি। এই যেমন ধরুন, C। ইংরেজি বর্ণমালার C বর্ণের উচ্চারণ কখনও K আর কখনও S। এরূপ G, H, U, W, X, Y প্রভৃতি বর্ণও নানা সময় নানা উচ্চারণে রত হয়। তবে C বর্ণটির উচ্চারণ সবচেয়ে অস্থির এবং প্রায়শ বিভ্রান্তিকর।

C-র উচ্চারণ কখনও K (ক)-এর মতো, আবার কখনও S (স)-এর মতো। যেমন, Cat শব্দের উচ্চারণ ‘ক্যাট’, Come শব্দের উচ্চারণ ‘কাম’। এখানে C বর্ণের ধ্বনি K (ক)। কিন্তু City শব্দের উচ্চারণ ‘সিটি’, যেখানে C-র ধ্বনি S(স)।  C বর্ণের এমন ধ্বনি বিপর্যয়কর উচ্চারণের কি কোনো নিয়ম আছে?  কিছু ব্যতিক্রম থাকলেও এ-বিষয়ে দুটি নিয়ম আছে।

(১) C বর্ণের পর যদি A, O বা U বর্ণ থাকে, C-র উচ্চারণ K অর্থাৎ বাংলা ‘ক’-এর মতো  হবে। যেমনঃ Cat (ক্যাট), Cot (কট), Cup (কাপ)।

(২) C বর্ণের পর যদি E, I কিংবা Y থাকে, সেক্ষেত্রে C- বর্ণের উচ্চারণ  S বা বাংলা স/শ-এর মতো করতে হবে। যেমনঃ Centre (সেণ্টার), City (সিটি), Cycle (সাইকল)

—————————————————————————–——————————
Language
error: Content is protected !!