
ড. মোহাম্মদ আমীন, বিসিএস (প্রশাসন), ১০ম ব্যাচ
বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করবেন কখন? আগেই উল্লেখ করেছি, বিসিএস পাস নিশ্চিত করতে হলে আপনার কয়েক বছর পূর্ব থেকে, বলা যায় কমপক্ষে তিন বছর পূর্ব থেকে বিসিএস অধ্যয়ন শুরু করা নিরাপদ। তিন বছর যদি প্রতিদিন আপনি ঘণ্টখানেক সময় বিসিএস-এর জন্য দিতে পারেন, তো আমি নিশ্চিত বলতে পারি, ভালো ক্যাডার নিয়ে বিসিএস পাস আপনার জন্য অনিবার্য হয়ে উঠবে। একাডেমিক পরীক্ষার মতো স্বল্প সময় নিয়ে গাধার মতো খাটুনি এবং আত্মবিশ্বাস অর্জনের জন্য কোচিঙে দৌঁড়াদৌড়ি করলে আপনার বিসিএস পাস করা কঠিন হবে।
বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করবেন কীভাবে?
প্রথমকে বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার কয়েক বছরের প্রশ্ন এবং পিএসসি নির্ধারিত সিলেবাস অধ্যয়ন করে কী রকম প্রশ্ন হতে পারে এবং কোত্থেকে হতে পারে তা ধারণা করে নিন। এমনটি করলে, আপনার প্রস্তুতি বিশ ভাগ হয়ে গেছে বলা যায়। এরপর কী করবেন?
আপনি যত বড়ো পণ্ডিতই হোন না কেন, স্কুল কলেজের মুখস্থপাগল শিক্ষার্থীর মতো যদি বর্ণনামূলক কোনো বিষয় মুখস্থ করে বিসিএস পরীক্ষায় পাস করার চিন্তা করে থাকেন, তাহলে কখনো আপনার পক্ষে বিসিএস পাস করা সম্ভব হবে না। তাহলে আপনি কী করবেন?

আপনি শুধু তথ্য মুখস্থ করবেন এবং আপনার বর্ণনায় তথ্যগুলো যথাস্থানে বসিয়ে দেবেন, হোক তা প্রিলিমিনারি, লিখিত কিংবা মৌখিক। একট গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, বর্ণনামূলক রচনায় বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে যথাস্থানে তথ্য উপাত্ত দিতে পারলে, পরীক্ষক ওই লেখায় উজাড় করে নম্বর দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে আমি প্রায় অর্ধশতক পরীক্ষকরে সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা সবাই একই কথা বলেছেন। অতএব, বিসিএস পাস করতে চাইলে, ক্যাডার অফিসার হতে চাইলে তোতা পাখির মতো ব্যাখ্যামূলক উত্তর শেখার ইচ্ছা মন হতে বাদ দিয়ে দিন। বরং এর পরিবর্তে তোতা পাখির মতো শুধু তথ্য, সংক্ষিপ্ত ঘটনা, তারিখ, ব্যক্তি বা স্থানের নাম ইত্যকার বিষয় জিকেন খাতায় লিখে দীর্ঘ দিন হাতে রেখে ধীরেসুস্থে পড়তে শিখুন।
প্রথমে আপনার অধীত বিষয়গুলোকে নিম্নেবর্ণিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। আপনি ইচ্ছে করলে, এটি আপনার সুবিধামতো বিভাজনও করতে পারেন। আমি এই বিষয়ভিত্তিক বিভাজনের নাম দিয়েছিলাম – অবি, যার পূর্ণরূপ ‘অধ্যয়ন বিভাজন’। বিসিএস পরীক্ষার বর্তমান সিলোবাস মতে, আপনার অধ্যয়ন বিভাজন হতে পারে :
১. রাজনীতি : বাংলাদেশের ইতিহাস, গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে, বিশেষ করে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে হালনাগাদ সময়ের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ, তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। গুরুত্বপূর্ণ ও খ্যাতিমান রাজনীতিবিদদের জীবন ও কর্ম।
২. সরকার : সরকার, প্রশাসন, প্রশাসনিক কাঠামো, আইন ও বিচার, সংবিধান।
৩. ভূমি : ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবস্থাপনার স্তর, ভুমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, বাংলাদেশের আয়তন, নদনদী, পাহাড়-পর্বত, দ্বীপ, শহর ও গ্রামীণ এলাকা, মাথাপিছু ভূমি, ভূমির উপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব প্রভৃতি।
৪. খাদ্য : উৎপাদন, খাদ্যনীতি, খাদ্যব্যবস্থাপনা, খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টি, খাদ্যগ্রহণের প্রকৃতি ও স্বরূপ, খাদ্য ও খাদ্যোৎপদান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
৫. শিক্ষা: শিক্ষানীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষার প্রকৃতি ও স্বরূপ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রকারভেদ; শিক্ষিত-অশিক্ষিতের হার, শিক্ষা, ভূমি, অর্থনীতি ও জনসংখ্যার তুলনামূলক তথ্য।
৬. অর্থনীতি, বাজেট, আমাদানি-রফতানি, বাণিজ্য, বাণিজ্যনীতি, বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশ,
৭. জনসংখ্যা : জনমিতি, জনসংখ্যা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইতিহাস, অধিবাসীর প্রকৃতি, উপজাতি, ধর্মীয় জনসংখ্যা, পরিবার পরিকল্পনা, জনসংখ্যার সঙ্গে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক, জনসংখ্যার সঙ্গে অন্যান্য অবকাঠামোর তুলনামূলক তথ্য প্রভৃতি।
৮. সম্পদ : সম্পদের প্রকৃতি, সম্পদের পরিমাণ, সম্পদের লভ্যতা, উৎপাদন, কৃষি সম্পদ, পশুসম্পদ, জলজসম্পদ, পানিসম্পদ, খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ সম্পদ, গ্যাস, কয়লা, পশুসম্পদ, মৎস্যসম্পদ প্রাকৃতিক সম্পদ।
৯. শিল্প : পাটশিল্প, তৈরি পোশাকশিল্প, হস্তশিল্প, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প, বৃহৎ শিল্প, শিল্পের আধুনিকায়ন প্রভৃতি।
১০. পরিবেশ-প্রতিবেশ : প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুযোগ, আবহাওয়া, তাপমাত্রা, প্রাকৃতিক ভারসাম্য. বৈশ্বিক আবহাওয়া ও বাংলাদেশ
১১. সাহিত্য, সংস্কৃতি : গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যকর্ম, বাংলা সাহিত্যে প্রথম ও প্রধান, বাংলাসাহিত্যের বিখ্যাত পঙ্্ক্তি বা বাণী, বিখ্যাত সাহিত্যিকদের জীবন ও কর্ম, সাহিত্যের প্রকৃতি, পরিবর্তন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। কবি-সাহিত্যিক, বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব।
১১. বাংলাদেশ বিষয়াবলী : উপরের তথ্যাবলি ছাড়া বাকি সব তথ্য, সাম্প্রতিক ঘটনা ও তথ্য, প্রাচীনকাল হতে বর্তমানকাল পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় প্রভৃতি।
১২. আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি : উপমহাদেশ, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, দূরপ্রাচ্য, ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, মুসলিম দেশসমূহ, শক্তিসাম্য, বিদেশনীতি, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ, ইসরাইলের কর্মকা-, সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী, বৃহৎ শক্তিসমূহের সঙ্গে উন্নয়নশীল দেশসমূহের সম্পর্ক প্রভৃতি।
১৩. ইংরেজি গ্রামার ও সাহিত্য।
১৪. বাংলা গ্রামার।
১৫. দৈনন্দিন বিজ্ঞান।
১৬. কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি।
১৭. বিবিধ : উপরে বর্ণিত হয়নি, কিন্তু আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, এমন সব তথ্য এই অংশে সংরক্ষণ করবেন।
এবার উপরের অবি বা অধ্যয়ন বিভাজনের সঙ্গে বর্তমান বিসিএস পরীক্ষার বিষয় ও মানবণ্টনের প্রকৃতি এবং কৌশলের আলোচনা দেখুন। বর্তমানে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নম্বর হচ্ছে মোট ২০০ এবং নম্বরের বিষয়ভিত্তিক বিভাজন হচ্ছে নিম্নরূপ :
১. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য =৩৫ নম্বর
২. ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য=৩৫ নম্বর
৩. গাণিতিক যুক্তি=১৫ নম্বর
৪. মানসিক দক্ষতা=১৫ নম্বর
৫. সাধারণ বিজ্ঞান=১৫ নম্বর
৬. বাংলাদেশ বিষয়াবলী =৩০ নম্বর
৭. আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি =২০ নম্বর
৮. ভূগোল ও পরিবেশ (বাংলাদেশ ও বিশ্ব) =১০ নম্বর
৯. নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন=১০ নম্বর
১০. কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি=১৫ নম্বর
আপনি যদি উপরের ১৭ টি অবি কয়েক বছর যাবৎ নিয়মিত অধ্যয়ন করে যান, তাহলে প্রিলিমিনারি সহজে পাস করে যাবেন। প্রিলিমিনারি পাস করলে বুঝবেন, আপনি বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের দিকে এক ধাপ এগিয়ে গেলেন। তবে, প্রিলিমিনারি পাস করলেই হলো। এর নাম্বার পরবর্তী পরীক্ষাসমূহের সঙ্গে যোগ হয় না। তাই ক্যাডার পাওয়া না-পাওয়ার উপর প্রিলিমিনারির নাম্বারের কোনো গুরুত্ব নেই। আর যেহেতু, ভুল নাম্বার দিলে .৫০ নম্বার কাঁটা যায়, অতএব কখনও বেশি পণ্ডিতি মারার চেষ্টা করবেন না। যদি মনে করেন, আপনার পাসের নাম্বার নিশ্চিত এসে যাবে, তখন সাবধানে বাকি উত্তর নিশ্চিত হয়ে দেবেন। নইলে ছেড়ে দিন। কারণ, একটি ভুল উত্তরের জন্য আপনি প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হতে ঝরে পড়তে পারেন।
এরপর আসছে, লিখিত পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নাম্বারের উপর আপনার ক্যাডার পাওয়া না-পাওয়া নির্ভর করবে। বিসিএস লিখিত পরীক্ষার আবশ্যিক বিষয়ের নম্বর বন্টন নিম্নরূপ :
১. বাংলা (১ম ও ২য় পত্র)=১০০+১০০=২০০ নম্বর
২. ইংরেজি (১ম ও ২য় পত্র)= ১০০+১০০=২০০ নম্বর
৩. গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা = ৫০+৫০=১০০ নম্বর
৪. সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি = ৬০+৪০=১০০ নম্বর
৫. বাংলাদেশ বিষয়াবলী (১ম ও ২য় পত্র)= ১০০+১০০=২০০ নম্বর
৬. আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী = ১০০ নম্বর।
প্রিলিমিনারি পাস করার পর আপনাকে সাধারণ ক্যাডারের জন্য নয়শ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। অবশ্য টেকনিক্যাল বা পেশাভিত্তিক বা প্রফেশনাল পদগুলোর জন্য ২০০ নম্বরের পদভিত্তিক বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হয়। আমরা এবার সাধারণ ক্যাডারের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করব।
অধ্যয়ন বিভাজনের প্রতিটি বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যেখানেই পান আপনার জিকেন খাতায় লিখে কমপক্ষে তিন বছর পূর্ব হতে অধ্যয়ন করেছেন। তাই লিখিত পরীক্ষায় অধ্যয়নের জন্য আপনাকে তেমন আর শ্রম দিতে হবে না, শুধু প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে পড়বেন এবং কয়েক বছর আগে থেকে অধ্যয়ন শরু করবেন। অবশ্য যারা দীর্ঘ সময় নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেননি, তাদের প্রচুর শ্রম দিতে হবে এবং কারো কারো ভাষায় গাধার মতো। আমি কিন্তু গাধার মতো শ্রম দিইনি, দৈনিক এক ঘণ্টা করে পড়েছি, তবে তিন বছর পূর্ব থেকে। আমার মতো, আপনি যেখানেই যান না কেন, কয়েকটা লেখা জিকেন খাতা এবং একটি সাদা জিকেন খাতা সঙ্গে নিয়ে যাবেন। লেখা খাতাগুলো সুযোগ পেলে পড়বেন এবং চলার পথে কোনো নতুন তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে সাদা জিকেন খাতায় নোট করে নেবেন।
উপরের সবকটি বিষয় যদি, আপনার মোটামুটি আয়ত্তে চলে আসে, তাহলে আরও জানার আগ্রহ আপনার কাছে এত প্রবল এবং আকর্ষণীয় উঠবে যে, আপনি না-পড়ে আর পারবেন না। প্রবল হয়ে যাবে আত্মবিশ্বাস। যে-কোনো প্রশ্ন আপনাকে করা হোক না কেন, আপনি তার নব্বই ভাগই পারার মতো ঋদ্ধ হয়ে যাবেন।
এভাবে অগ্রসর হলে আপনার বিসিএস পাস করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। গণিতের জন্য অষ্টম ও নবম-দশম শ্রেণির অঙ্কগুলো ভালোভাবে করে নিন। প্রয়োজনে টিউশনি করেন। তাহলে বাধ্য হবেন ভালোভাবে পড়তে। একইসঙ্গে কিছু আয়ও হবে।
আমার বাসায় চার জন গৃহশিক্ষক আমার ছেলেমেয়েদের পড়াতেন। তাদের সবাই ভালো ক্যাডার নিয়ে বিসিএস পাস করেছে। আমি তাদের এভাবে অধ্যয়নের উপদেশ দিয়েছিলাম। গৃহশিক্ষকদের একজনের নাম, অসীম। সে এখন একটি উপজেলার ইউএনও। একজন পেয়েছে পররাষ্ট্র ক্যাডার এবং একজন পেয়েছে, কাস্টমস ক্যাডার। আর একজন পেয়েছেন শিক্ষা ক্যাডার। তার নাম অভিজিত। বাকি দুজনের নাম মনে পড়ছে না। তারা কেউ ছাত্র হিসেবে আহামারি ছিল না, ছিল মধ্যমানের। তবে তার প্রত্যহ ঘণ্টা কয়েক বিসিএস পরীক্ষার জন্য পড়ত।
এভাবে প্রিলিমিনিরি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলে, আশা করা যায় আপনি অবশ্যই পাস করবেন। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা যেমনই হোক না কেন, যদি মনে করেন পাস করবেন না, তবু অধ্যয়ন থামাবেন না। কারণ পাস করলে আপনাকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে এবং লিখিত পরীক্ষাতেও এসব বিষয়ে উপর প্রশ্ন আসবে। আর যদি পাস না-করেন তাহলে পরবর্তী বিসিএস পরীক্ষার জন্য অথবা অন্য যে-কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য এটি কাজে লাগবে।
বাংলা ও ইংরেজি : বাংলায় মোটি ২০০ নম্বর। প্রথমপত্র হোক বা দ্বিতীয়পত্রই হোক, বাংলা মূলত বাংলাই। বাংলা অপনার মাতৃভাষা। সে হিসেবে বাংলা গ্রামার এবং বাংলা সাহিত্যের নানা বিষয় আপনার ভালো জ্ঞান থাকা সমীচীন। অধিকন্তু ইতোপূর্বে আপনি প্রিলিমিনারি পাস করে লিখিত পরীক্ষার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। অএতব, বাংলা জ্ঞান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। অধ্যয়নকালে যা পড়া হয়েছে কিংবা আপনি একজন বাঙালি হিসেবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে যা অধ্যয়ন করেছেন তাকে ভিত্তি ধরে বাংলা গ্রামার অধ্যয়ন করলে বাংলা প্রথম ও বাংলা দ্বিতীয় পত্রে ভালো নাম্বার তুলতে পারবেন। ইংরেজি ভাষার জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। প্রিলিমিনারি দেওয়ার জন্য বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে যা শিখেছেনম তা-ও আপনার কাজে লাগবে।
বাংলাদেশ বিষয়াবলী : এখানে আপনাকে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রিলিমিনারি পাস করার জন্য অধ্যয়ন বিভাজনের মাধ্যমে এ দুটি বিষয়ে যা শিখেছেন, তা অবশ্যই আপনার মস্তকে রয়ে গেছে। অধিকন্তু, অধ্যয়ন বিভাজানের ১ম থেকে ১২ নম্বর পর্যন্ত এবং ১৭ নম্বর বিষয়ের তথ্যগুলো জানা থাকলে বাংলাদেশ বিষয়াবলী পরীক্ষায় আপনার ৮০ ভাগ নম্বর পাওয়া সহজ হবে বলা যায়। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
বাকি আছে ২০০ নম্বর। তন্মধ্যে ১০০ নম্বর হচ্ছে গণিত ও মানসিক দক্ষতা। এবং সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। গণিতের জন্য সপ্তম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির গণিত অধ্যয়ন করুন, সম্ভব হলে মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ান, বাজারে খুব ভালো ভালো বই আছে এসব বিষয়ে, তা কিনে নিয়ে পড়ুন। এগুলো সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়েও ভালো নম্বর তোলার সহায়ক। তাছাড়া আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাজার থেকে ভালো কয়েকটি বই কিনে পড়ুন। এসব বিষয়ে একটা প্রশ্নের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য কোনো প্রশ্ন হতে পারে কি না ভাবুন, তারপর সেভাবে পরবর্তী প্রশ্নের উত্তরটি জেনে নিন। কয়েক বছরের প্রশ্ন দেখলে বিষয়টি আপনার কাছে আরো পরিষ্কার হয়ে উঠবে। এভাবে অগ্রসর হলে আপনার বিসিএস পাস এবং কাক্সিক্ষত ক্যাডার পাওয়া নিশ্চিতত হয়ে যাবে।
মনে রাখবেন, বিসিএস একটি তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। ৩৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন, ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দুই লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন। তন্মধ্যে মাত্র কয়েক হাজার প্রার্থী চাকুরি পায়। আপনাকে ওই কয়েক হাজার থাকতে হলে অবশ্যই কুশলী হতে হবে, শুধু ভালো প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। বিস্তারিত :বিসিএস প্রিলিমিনারি থেকে ভাইভা কৃতকার্য কৌশল