বাংলা একাডেমি প্রণীত সর্বশেষ প্রমিত বাংলা বানানের নির্দেশনা দিয়ে প্রমাণ করুন—
(ক) তালব্য-স = মূর্ধন্য-স; স=ষ। এবং
(খ) হ্রস্ব-ই = দীর্ঘ-ঈ; ই= ঈ।
সমাধান:
আমরা জানি, বাংলা একাডেমি প্রণীত প্রমিত বাংলা বানান বিধি অনুযায়ী সাধারণত কোনো বিদেশি শব্দের বানানে ‘মূর্ধন্য-ষ’ বসে না। সে হিসেবে
লেখা হতো ‘খ্রিস্টাব্দ’, মিস্টার, লিস্ট ইত্যাদি।

‘খ্রিস্টাব্দ’= খ্রি+স্+টা+অব্দ —————————————–(১)
কিন্তু, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমির জামিল চৌধুরী নতুন নির্দেশ দিয়ে বললেন, ‘খ্রিস্টাব্দ’ শব্দের ‘দন্ত্য-স’ বর্ণটি ‘মূর্ধন্য-ষ’-এর মতো উচ্চারিত হয়। তাই আর ‘খ্রিস্টাব্দ’ লেখা চলবে না, লিখতে হবে, খ্রিষ্টাব্দ। তখন থেকে সবার জানা ‘খ্রিস্টাব্দ’ আকস্মিকভাবে ‘খ্রিষ্টাব্দ’ হয়ে গেল।
অর্থাৎ, খ্রিস্টাব্দ = খ্রিস্টাব্দ ——————————————(২)
কিন্তু, খ্রিষ্টাব্দ = খ্রি+ষ্+টা+অব্দ—————————————–(৩)
এ অবস্থায়, সমীকরণ (১), (২) ও (৩) থেকে পাই
খ্রি+ষ্+টা+অব্দ = খ্রি+স্+টা+অব্দ
বা, হসন্ত-ষ = হসন্ত-স।
বা, ষ=স।
প্রমাণিত।
(খ)
আগে বাংলায় বিশেষ্য এবং তা থেকে ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে ‘তৈরি’ আর বিশেষণ হিসেবে ‘তৈরী’ শব্দ ব্যবহার করা হতো। আমরা লিখতাম : (১) শ্রমিকরা রাস্তা তৈরী করছে। (২) জাপানের তৈরী গাড়ি সস্তা। কিন্তু, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে ‘তৈরী’ শব্দকে তুলে দিয়ে বলা হয়েছে— বিশেষ্য ও বিশেষণ উভয় ক্ষেত্রে ‘তৈরি’ হবে। এখন থেকে আর ‘তৈরী’ লেখা চলবে না।
অর্থাৎ তৈরি= তৈরী —————————————-(১)
তৈরি= ঐ-কার+ত+ ই-কার+ র—————————-(২)
তৈরী= ঐ-কার+ত+র+ ঈ-কার —————————-(৩)
(১), (২) ও (৩) নম্বর সমীকরণ থেকে পাই,
ঐ-কার+ত+ ই-কার+ র= ঐ-কার+ত+র+ ঈ-কার
বা, ই-কার = ঈ-কার।
বা, ই= ঈ।
প্রমাণিত।
বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন এবং কেন লিখবেন/১
কি না বনাম কিনা এবং না কি বনাম নাকি
মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন
ভূ ভূমি ভূগোল ভূতল ভূলোক কিন্তু ত্রিভুবন : ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ
মত বনাম মতো : কোথায় কোনটি এবং কেন লিখবেন
লক্ষ বনাম লক্ষ্য : বাংলা বানান কোথায় কী লিখবেন
ব্যাঘ্র শব্দের অর্থ এবং পাণিনির মৃত্যু