বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
ড. মোহাম্মদ আমীন
স্মৃতি শ্রেণিতে ভর্তি
১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে ঈশ্বরচন্দ্র স্মৃতি শ্রেণীতে ভর্তি হন (এই অংশের তুল্য অধুনা সংস্কৃত কলেজের পঠন)। এই পরীক্ষাতেও তিনি অসামান্য কৃতিত্বের সাক্ষর রাখেন এবং হিন্দু ল কমিটির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
বেদান্ত শ্রেণিতে ভর্তি
এরপর তিনি ভর্তি হন বেদান্ত শ্রেণিতে। শম্ভুচন্দ্র বাচস্পতি তখন বেদান্তের অধ্যাপক। ১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে সমাপ্ত করেন বেদান্ত পাঠ। এই পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং মনুসংহিতা, প্রবোধ চন্দ্রোদয়, অষ্টবিংশতত্ত্ব, দত্তক চন্দ্রিকা ও দত্তক মীমাংসা গ্রন্থ পারিতোষিক পান। সংস্কৃতে শ্রেষ্ঠ গদ্য রচনার জন্য ১০০ টাকা পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ন্যায় পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে ১০০ টাকা, পদ্য রচনার জন্য ১০০ টাকা, দেবনাগরী হস্তাক্ষরের জন্য ৮ টাকা ও বাংলায় কোম্পানির রেগুলেশন বিষয়ক পরীক্ষায় ২৫ টাকা সর্বসাকুল্যে ২৩৩ টাকা পারিতোষিক পান।
ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে যোগদান
১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত কলেজে শিক্ষা শেষ হবার পর তিনি ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ শে ডিসেম্বর একুশ বছর বয়সে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের সেরেস্তাদার বা প্রধান পণ্ডিতের পদে যোগ দেন। বেতন ছিল মাসে ৫০ টাকা। ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই এপ্রিল পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন। ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই এপ্রিল একই বেতনে সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদকের ভার গ্রহণ করেন।
প্রথম গ্রন্থ ও বিরাম চিহ্নের সার্থক ব্যবহার
১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের বিদ্যাসাগর স্থাপন করেন সংস্কৃত প্রেস ডিপজিটরি নামে একটি বইয়ের দোকান। ১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে প্রকাশিত হয় হিন্দি বেতাল পচ্চিসী অবলম্বনে রচিত তাঁর প্রথম গ্রন্থ “বেতাল পঞ্চবিংশতি”। এ গ্রন্থেই প্রথম বিরাম চিহ্নের সার্থক ব্যবহার করা হয় ।
সংস্কৃত যন্ত্র প্রেস
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বন্ধু মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সম-অংশীদারিত্বে সংস্কৃত যন্ত্র নামে একটি ছাপাখানাও স্থাপন করেন। এই ছাপাখানা থেকে তাঁর সম্পাদনায় অন্নদামঙ্গল কাব্যের মূল গ্রন্থের পাঠ অনুসারে পরিশোধিত আকারে দুই খণ্ডে অন্নদামঙ্গল প্রকাশিত হয়। এই বইটিই সংস্কৃত যন্ত্র প্রেসের প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ।
সংস্কৃত কলেজ থেকে পদত্যাগ
১৮৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই জুলাই কলেজ পরিচালনার ব্যাপারে সেক্রেটারি রসময় দত্তের সঙ্গে মতান্তর হলে সংস্কৃত কলেজের সম্পাদকের পদ ত্যাগ করেন।
সর্ব্বশুভকরী পত্রিকা প্রকাশ
১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে তিনি, বন্ধু মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সহযোগিতায় সর্ব্বশুভকরী পত্রিকা প্রকাশ করেন। এর প্রথম সংখ্যায় বাল্যবিবাহের দোষ নামে একটি বাংলা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।
সংস্কৃত কলেজের সাহিত্যের অধ্যাপক
১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়ামের কাজে ইস্তফা দিয়ে ৫ই ডিসেম্বর সংস্কৃত কলেজে সাহিত্যের অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই জানুয়ারি সাহিত্যের অধ্যাপকের পদ ছাড়াও কলেজের অস্থায়ী সেক্রেটারির কার্যভারও গ্রহণ করেন। ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে জানুয়ারি ১৫০ টাকা বেতনে কলেজের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। এই সময় থেকেই সংস্কৃত কলেজে সেক্রেটারির পদটি বিলুপ্ত হয়।
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর /১
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর/২
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর /৩