বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর/৫
ড. মোহাম্মদ আমীন
বোধোদয় পুস্তক প্রকাশ
১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে রুডিমেন্টস অফ নলেজ অবলম্বনে তাঁর রচিত বোধোদয় পুস্তকটি প্রকাশিত হয়।
সংস্কৃত কলেজের সংস্কার
সংস্কৃত কলেজে ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য ছাড়া অন্য কেউ ভর্তি হতে পারত না। অধ্যক্ষের দায়িত্বভার নিয়ে তিনি ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই জুলাই ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য ছাড়া কায়স্থদের সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ করে দেন। ১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে সংস্কৃত কলেজের দ্বার সকল বর্ণের হিন্দুদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। নিয়ম হয়, যে কোনো সম্ভ্রান্ত হিন্দু সন্তান সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে।
প্রথম বিধবা বিবাহ
ঈশ্বরচন্দ্রের আন্দোলনের ফলে ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই জুলাই বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়। এই দিন প্রকাশিত হয় তাঁর স্বরচিত গ্রন্থ চরিতাবলী। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই ডিসেম্বর কলকাতায় প্রথম বিধবা বিবাহ আয়োজিত হয় ১২, সুকিয়া স্ট্রিটে বিদ্যাসাগরের বন্ধু রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। পাত্র রামধন তর্কবাগীশের কনিষ্ঠ পুত্র ও সংস্কৃত কলেজের কৃতি ছাত্র ও অধ্যাপক, বিদ্যাসাগরের বন্ধু শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন। পাত্রী ছিলেন বর্ধমান জেলার পলাশডাঙা নিবাসী ব্রহ্মানন্দ মুখোপাধ্যায়ের দ্বাদশ বর্ষীয়া বিধবা কন্যা কালীমতী। পরে তিনি নিজের সন্তানকেও একজন বিধবার সঙ্গে বিয়ে দেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদ্যাসাগর
১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ শে জানুয়ারি স্থাপিত হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা সমিতির অন্যতম সদস্য তথা ফেলো মনোনীত হন। প্রসঙ্গত, এই সমিতির ৩৯ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ছয় জন ছিলেন ভারতীয়।
রাজনীতিক বিষয়-সহ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা
১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই নভেম্বর বিদ্যাসাগরের নেপথ্য প্রয়াস ও পরিকল্পনায় ‘সোমপ্রকাশ’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত এটিই প্রথম পত্রিকা যাতে রাজনৈতিক বিষয় স্থান পেয়েছিল।
ইংরেজি–বাংলা স্কুল
১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল পাইকপাড়ার রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় মুর্শিদাবাদের কান্দিতে বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠা করেন ইংরেজি-বাংলা স্কুল।
উমেশচন্দ্র মিত্র রচিত নাটক বিধবা বিবাহ নাটক অভিনীত
১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০ শে এপ্রিল মেট্রোপলিটান থিয়েটারে উমেশচন্দ্র মিত্র রচিত নাটক “বিধবা বিবাহ” প্রথম অভিনীত হয়। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ এপ্রিল রামগোপাল মল্লিকের সিঁদুরিয়াপট্টির বাসভবনে সেই নাটকের অভিনয় দেখেন বিদ্যাসাগর।
সীতার বনবাস : চার দিনে রচিত গ্রন্থ
১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই এপ্রিল ভবভূতির উত্তর রামচরিত অবলম্বনে তাঁর রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ সীতার বনবাস প্রকাশিত হয়। কথিত আছে বইখানি তিনি রচনা করেছিলেন মাত্র চারদিনে।
ভারতের প্রথম বালিকা বিদ্যালয় ও বেথুন কলেজ
নারীশিক্ষার বিস্তারের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও ড্রিংকওয়াটার বিটন উদ্যোগী হয়ে কলকাতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই ভারতের প্রথম ভারতীয় বালিকা বিদ্যালয়। বিদ্যসাগসর ছিলেন এই বিদ্যালয়ের সম্পাদক। এটি বর্তমানে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত।
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর /১
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর/২
বিসিএস বাংলা : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর /৩