বিসিএস ভাইভা ও আমার অভিজ্ঞতায় সফলতার কৌশল
ড. মোহাম্মদ আমীন, বিসিএস (প্রশাসন)
আমি দশম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বিসিএস(প্রশাসন) ক্যাডার পাই। আমার প্রথম পছন্দই ছিল বিসিএস (প্রশাসন)। প্রসঙ্গত, দশম বিসিএস থেকেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু হয়। বিসিএস পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বারের ভিত্তিতে প্রকাশিত তালিকা দেখে মনে হয়েছিল, বিসিএস (পররাষ্ট্র) ক্যাডারেও টিকে যেতাম, যদি প্রথম পছন্দ দিতাম। অথচ, আমি একজন মধ্যমানের ছাত্র এবং জীবনে কখনও প্রথম বিভাগ পাইনি। তবে চাকুরিতে প্রবেশের পর যেসব পরীক্ষা দিয়েছি সবগুলোতে ভালো করেছি। এর কারণ হচ্ছে জেদ; জেদ আমার আত্মবিশ্বাসের হৃদপিণ্ডটা বউয়ের মতো নিষ্ঠুর মমতায় দখল করে নিয়েছিল।
ভাইভাতে কী প্রশ্ন করা হয় বা হবে, কিংবা ভাইবা পরীক্ষায় কীভাবে যেতে হয় বা আসতে হয় এবং আমার আচরণই বা কী হওয়া উচিত সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হওয়ার পরও কিছুদিন পর তা অবহেলা করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গ্রামের একটি বাড়িতে লজিং থেকে লেখাপড়া করেছি। আমি, বিসিএস পাস কোনো অফিসারকেও চিনতাম না। নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সত্যয়ন করেছি এক ডাক্তার কাছ থেকে এবং প্রতিটি স্বাক্ষরের জন্য তাকে পাঁচ টাকা করে দিতে হয়েছে।
সহপাঠিদের অনেকে বলতেন, এই প্রশ্ন আসবে, ওই প্রশ্ন আসবে; এটা পড়ো, ওটা পড়ো না। আমার পিতামহের এক ভাই আবুল কালাম আজাদ ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কলেজের প্রফেসর। তিনি থাকতেন চট্টগ্রাম শহরে। তাঁর বাসায় আমাদের যাতায়াত ছিল না বলেই চলে। লেখাপড়া করে সরকারি কলেজের শিক্ষকতার চাকুরি হওয়ার পর আজাদ সাহেব আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন। ভাইভার কিছু দিন আগে তাঁর বাসায় গেলাম। চোখমুখে দেখে বোঝা গেল তিনি আমাকে দেখে বিরক্ত হয়েছেন। পাত্তা দিলাম না, যদি কিছু জানতে পারি।কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। কয়েকটা টাকার জন্য মানুষ ভিক্ষুক হয়, কত অপমান সহ্য করে, জানার জন্য আমি করলে ক্ষতি কী?
তিনি বললেন, কী জন্য এসেছে?