ড. মোহাম্মদ আমীন
বুলেট থেকে ব্যালট
যতদূর জানা যায়— প্রাচীন গ্রিসে বিশ্বের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেকালের নির্বাচনসমূহে ভোটের বক্সে সাদা ও কালো রঙের বুলেট (bullet) ফেলে ভোট দেওয়া হতো।
সমর্থক ভোটারগণ ফেলতেন white-bullet আর বিপক্ষতা প্রকাশের জন্য ফেলা হতো black-bullet। গ্রিসের এ black-bullet হতে ইংরেজি back-

balling বাগ্ভঙ্গিটির উদ্ভব। জর্জ স্ট্যানলির লেখায় bullet দ্বারা ভোট দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি লিখেছেন : . . .‘they gave their choice by bullet.’ আসলে bullet শব্দের মূল ও আদি অর্থ ছিল ‘ছোটো বল’। ইংরেজি ভাষায় এসে bullet নিজেকে সামান্য পরিবর্তন করে ballot হয়ে যায়। এই ballot শব্দের অর্থও ছিল ‘ছোটো বল’।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বুলেট ও ব্যালটের সম্পর্ক জন্ম থেকে অবিচ্ছেদ্য। হয়তো এজন্য এখনও অনেক দেশে বুলেট, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যালটকে নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও কাগজে কলমে আধুনিক বুলেট ও আধুনিক ব্যালটের আকাশ-পাতাল তফাত। ব্যালট কাগজের, কিন্তু বুলেট ধাতুর তৈরি বলে হয়তো শাক্ত-ঘরিষ্ঠ দেশসমূহে বুলেটের শক্তিটা ব্যালটের চেয়ে বেশি।অন্যদিকে, প্রাজ্ঞ-ঘরিষ্ঠ দেশসমূহের কাগজে তৈরি ব্যালটের শক্তিটাই অধিক।
কেন বলা হয় ভোটে দাঁড়ানো
বুলেট-ব্যালট প্রভৃতি নির্বাচন প্রথা শুরু হওয়ার পূর্বে নেতা নির্বাচনের জন্য জনসমাবেশ ডাকা হতো। প্রাচীন ভারতে রাজা বা তার প্রতিনিধি সমবেত জনতাকে প্রার্থীত্ব ঘোষণার আহ্বান জানাতেন। তখন ইচ্ছুক প্রার্থী বা প্রার্থীরা দাঁড়িয়ে নিজের পদ ও প্রার্থীত্ব ঘোষণা করে সমবেত জনতার সমর্থন চাইতেন। এই দাঁড়ানো থেকে ভোটে দাড়ানো কথাটির উদ্ভব। পরবর্তীকালে দাঁড়ানো প্রথার পরিবর্তে ব্যালট-প্রথা শুরু হয়। তবে এখনও অনেক ছোটোখাটো নির্বাচনে ‘দাঁড়িয়ে’ প্রার্থীত্ব ঘোষণা করা হয় এবং উপস্থিত জনতার সমর্থনে নির্দিষ্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার রীতিও প্রচলিত আছে।
———————————————————————————————————————————————————